Advertisement

Responsive Advertisement

রাজ্যের আট জেলাতেই বেবিকর্ন চাষের পরিকল্পনা কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের

আগরতলা: বর্তমান সময়ে সুপ্ থেকে শুরু করে রেঁস্তোরার বিভিন্ন ধরণের ফাস্টফুডসহ বিভিন্ন ধরনের কোন টেম্পোরারি জাঙ্ক ফুটে ব্যবহারের জন্য বিশ্বজুড়ে এর চাহিদা রয়েছে বেবিকর্ন'র। ব্যাপক চাহিদার কথা চিন্তা করে রাজ্য সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যান দপ্তর ২০২২সালের খারিফ মরসুমে রাজ্যে প্রথম বারের মতো পরীক্ষা মূলক ভাবে বেবিকর্ন চাষ শুরু করে। রাজধানীর অরুন্ধুতিনগর'র রাজ্য কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের গবেষণা প্লটে এগুলোকে চাষ করা হয়ে ছিল। প্রথম বারেই বাজিমাত করেছে দপ্তর। রাজ্যে এর ব্যাপক ফলন হয়েছে ও চাষীরা আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছেন।
এরপর রাজ্যের ঊনকোটি এবং ধলাই জেলার মোট ৫০হেক্টর জমিতে চাষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ৩৫ হেক্টর'র বেশী জমি থেকে ফসল সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজধানী আগরতলার অরুন্ধুতিনগর'র রাজ্য কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের এগ্রোনমিস্ট মধুমিতা চক্রবর্তী, তিনি এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত। ঊনকোটি জেলায় ৪০হেক্টর এবং ধলাই জেলার ১০হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ১৪১জন চাষী যুক্ত রয়েছেন। তিনি আরো বলেন ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে প্রথম বেবিকর্ন গাছ লাগানো শুরু হয়েছিল। এগুলো স্বল্পমেয়াদি ফসল, তাই বীজ লাগানোর ৪৫ থেকে ৫০দিনের মাথায় ফসল তুলে নেওয়া হয়। কৃষকদের মাঠ থেকেই বহির রাজ্যের এক বেসরকারি সংস্থা ফসলগুলো সংগ্রহ করে নিচ্ছে। ঊনকোটি জেলার কুমারঘাট এলাকায় এই সংস্থার একটি প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র রয়েছে। এখানে এনে বেবিকর্ন গুলোকে প্রক্রিয়াকরনের পর প্যাকেট করে বহির রাজ্যের রপ্তানি করছে। এখন পর্যন্ত ঐ সংস্থাকে চাষীরা ১০টনের বেশী বেবিকর্ন সর্বরাহ করেছেন। 
গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে ফসল সংগ্রহ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি ধাপে ধাপে চাষ হচ্ছে তাই ধারণা করা হচ্ছে আগামী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ফসল উৎপাদন চলবে। চাষীরা গড়ে প্রতি বিঘা থেকে ৩০হাজার টাকার বেবিকর্ন পাইকারি দামে বিক্রি করছেন চাষীরা। ফসল গুলি পাইকারি দামে বিক্রির সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় এলাকার বাজারেও বিক্রি করছেন। 
চাষীদেরকে রাজ্য সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের তরফে আর্থিক ভাবে সহায়তা করা হচ্ছে। তাদেরকে বিঘা কিছু প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে সার বীজসহ মাঠ পর্যায়ের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে দপ্তরের তরফে বলে জানান। 
ফসল বিক্রির পাশাপাশি পরিত্যক্ত গাছগুলি বিক্রি করেও আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা। কারণ এই গাছগুলি পশুখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। গাছগুলি প্রতি কেজি ৩ টাকা দামে বিক্রি করছেন। স্বল্পমেয়াদি ফলস হওয়া এবং দাম অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশি হওয়ার জন্য চাষিরা আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন। তাই তারা এগুলো চাষ করে খুশি।
কারিফে এই চাষে ব্যাপক সাফল্য আসায় দপ্তর রবি মরসুমে পরীক্ষা মূলক ভাবে চাষ করছে বলে জানান মধুমিতা চক্রবর্তী। রবি মরসুমেও এর ফলন ভালো হচ্ছে। শীতের কারণে গাছে ফুল ও ফল আসতে সামান্য বেশি সময় লাগছে। ফল আসার প্রক্রিয়াকে দ্রুত করার জন্য ইউরিয়া সারকে ব্যবহার করছেন। পরিপূর্ণ গাছে সামান্য পরিমাণ ইউরিয়া প্রয়োগ করলে দ্রুত ফুল আসছে বলেও জানান। 
সব মিলিয়ে নতুন এই ফসল চাষের ফলে রাজ্য কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। তাই আগামী দিনে তাদের পরিকল্পনা রাজ্যের আটটি জেলাতেই বেবিকর্ন চাষ করার। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ