আগরতলা, ১৩ ফেব্রুয়ারী : ত্রিপুরার মানুষ চাঁদাবাজ এবং ধান্দাবাজদের লাল কার্ড দেখিয়ে বিদায় করে দিয়েছেন। আগরতলায় নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এভাবেই নাম না করে বিরোধীদের কটাক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার অন্তিম পর্যায়ে চলে এসেছে, মঙ্গলবারই সরব প্রচারের শেষ দিন, তার আগে প্রচারের শেষ ঝড় হিসেবে সোমবার বিকেলে আগরতলার আস্তাবল ময়দানে দলের প্রার্থীদের সমর্থনে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। এদিন তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, এবার ও ত্রিপুরার মানুষের যে মাত্রায় আশীর্বাদ পাওয়া যাচ্ছে তা অভূতপূর্ব। উৎসাহ দেখে বুঝা যাচ্ছে রাজ্যে আবার বিজেপি সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
বিরোধী কংগ্রেস এবং বামেদের কটাক্ষ করতে গিয়ে তিনি বলেন, রাজ্যের মানুষ চান্দাবাজ ও ধান্দাবাজদের লাল কার্ড দেখিয়ে বিদায় করেছে। কারণ তারা পূর্ণ বহুমমতের সরকার আবার গড়তে চান রাজ্যে। বর্তমান সরকারের সময় রাজ্যের যে গতিতে উন্নয়ন হচ্ছে তা প্রত্যক্ষ করে আবার বিজেপি সরকার গঠন করার জন্য মনস্থির করেছেন। রাজ্যে এমন কোন পরিবার নেই যারা বর্তমান সরকারের কাছ থেকে সহায়তা পায়নি। বিজেপি সরকার মানুষের ঝুলি ভর্তি করে দিয়েছে। তাই আগামী দিনের কথা এবং পরিবার-পরিজনদের সুনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বিজেপি সরকারকে ভোট দেবেন এবং বিরোধী জোটকে একটি ভোট দেবেন না। রাজ্যের উন্নয়নের জন্য কেন্দ্র থেকে যে পরিমাণ অর্থ দেওয়া হয় তার পুরোটাই মানুষের কাজে লাগানো হচ্ছে। অথচ পূর্বতন সরকারের সময় এক টাকা পাঠালে মাত্র ১৫ পয়সা রাজ্যবাসী কল্যাণে কাজে লাগতো এবং বাকি ৮৫ পয়সা নেতাদের পকেটে চলে যেত। এসরকার আসার পর এসব বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
পাশাপাশি এই দিন তিনি রাজন্য শাসিত ত্রিপুরার প্রসঙ্গ টেন বলেন, রাজা রাধা কিশোর মানিক্য রাজ্যের উন্নতির জন্য অনেক কাজ করেছেন। তার দেখানো পথে এখন রাজ্য এগিয়ে চলছে। বর্তমান সময়ে রাজ্যে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে গ্রামীণ এবং শহর এলাকার রাস্তাঘাট, পানীয় জল আবাসন প্রকল্প ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনেক কাজ হয়েছে। শুধুমাত্র আভ্যন্তরে উন্নতি হয়েছে এমন নয় আগরতলা আখাউড়া রেলপথের নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। খুব দ্রুত এই রেলপথে যোগাযোগ স্থাপিত হয়ে যাবে। সেই সঙ্গে ফেনী নদীর উপর সেতু নির্মাণ এবং পরিকাঠামো উন্নয়নের ফলে সমগ্র ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে উত্তর পূর্বাঞ্চল বাণিজ্যের হাফ হয়ে উঠবে। এসব সম্ভব হচ্ছে বিজেপি সরকারের জন্য। উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজ্যে আবার ডাবল ইঞ্জিন সরকার প্রয়োজন।
তাই আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি সবাই উৎসাহের সঙ্গে ভোট দিয়ে যেন রাজ্যে বিজেপি সরকার নিয়ে আসেন এই আহ্বান করেন।
রাজ্যে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের জোটকে তিনি কটাক্ষ করেন। তিনি বললেন এই দলগুলো দীর্ঘ বছর একে অপরের বিরুদ্ধেসমালোচনা করে এসেছে। নিজেদের মধ্যে লড়াই করেছে এখন আসুন ভাগাভাগি করে নির্বাচন করছে। অথচ কেরালাতে এখনো কংগ্রেস ও বাণিজ্যের মধ্যে খুঁজতে চলছে আর এখানে তাদের দোস্তি চলছে বলার সমালোচনা করেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়ী করার আহ্বান রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিনের এই সভায় প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা মানিক সাহা, উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেব বর্মন ত্রিপুরা প্রদেশ বিজেপির সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সভাকে ঘিরে এদিন মাঠে প্রচুর সংখ্যক কর্মী সমার্থক উপস্থিত হয়েছিলেন।
এপ্রসঙ্গে উল্লেখখ্য যে নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে সভা করতে গত শনিবারও রাজ্যে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি। সেদিন মোট দুটি সভা করেন। এছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথসহ এক ঝাঁক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চলচ্চিত্র অভিনেতা এসেছিলেন।
0 মন্তব্যসমূহ