Advertisement

Responsive Advertisement

রাজ্যে জোট সরকার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে : জিতেন্দ্র


আগরতলা, ১৪ ফেব্রুয়ারী: ত্রিপুরা রাজ্যের ইতিহাসে এবারের নির্বাচন অভূতপূর্ব, কারণ রাজনৈতিক দলগুলির চেয়ে সাধারণ জনগণ নির্বাচনী এজেন্ডা স্থির করছেন। এই অভিমত সিপিআইএম দলের ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরীর । ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে  আগরতলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। মঙ্গলবার এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এই অভিমত ব্যক্ত করেন জিতেন্দ্র চৌধুরী।
তিনি আরো বলেন সাধারণ জনগণস্থির করেছেন রাজ্যের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এর জন্য বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি যাতে একজোট হয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কাজ করে তা স্থির করেছেন এবং আগামী ১৬ই ফেব্রুয়ারি তাদের এই ইচ্ছা পূরণ হবে।
 সাংবাদিকদের তরফে তাকে প্রশ্ন করা হয় এবারের নির্বাচনের লক্ষ্য করা যাচ্ছে চির প্রতিদ্বন্দ্বী দলের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে তারা নির্বাচনে লড়াই করতে নেমেছেন, কেন এটা হয়েছে? এর উত্তরে তিনি বলেন কংগ্রেস তাদের চির প্রতিদ্বন্দ্বী কিন্তু রাজ্যে  গণতন্ত্র নেই এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলি সঠিকভাবে কাজ করছে না। তাই গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে তারা চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে হাত ধরাধরি করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কাজে নেমেছেন।
 এই নির্বাচনে প্রথমবারের মতো বামফ্রন্ট তাদের প্রার্থী তালিকায় ৬০ শতাংশের বেশি নতুন মুখ এবং অপেক্ষাকৃত কম বয়সী প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দিয়েছেন। এটা তাদের কৌশলগত সিদ্ধান্ত আবার সময়ের দাবিতেও নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। কারণ দলের অপেক্ষাকৃত বয়স্করা সংসদীয় রাজনীতি থেকে বিদায় নিয়ে সাংগঠনিক কাজে গুরুত্ব দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। আবার অনেকে অসুস্থ, দেশের সব জায়গাতেই পরিবর্তন এসেছে একসঙ্গে তাল মিলে নতুনদের চিন্তাভাবনাকেও কাজে লাগানোর দাবি উঠছে। তাদের দল দাবি পূরণের চেষ্টা করছে।
রাজ্যের সংবাদপত্র এবং সংবাদ মাধ্যম স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারছে না। ভয়-ভীতি দেখিয়ে হামলা হুজ্জতি করে সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া এবং বিভিন্ন টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। হকারদের নানা ভাবে হেনস্তা করা, যানবাহনকে পত্রিকা পরিবহন বন্ধ করার জন্য ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে এখন। তাদের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে এসব করতে দেওয়া হবে না। রাজ্যে দুইজন সাংবাদিক নৃশংস ভাবে খুন হয়েছিলেন, বিগত নির্বাচনে তাদেরকে নিয়ে অনেক রাজনীতি হয়েছে। অথচ পাঁচ বছর কেটে গেল এই দুই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার রহস্য উন্মোচিত হয়নি। ঘটনা দুটি পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকারের সময় হয়েছিল। তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার এই ঘটনাগুলোর তদন্ত করছিল। এর জন্য এসআইটি গঠন করে তদন্তের প্রায় শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যায় ও যারা এই ঘটনা সঙ্গে জড়িত তাদেরকে প্রায় ধরে ফেলতে প্রস্তুত হয় । কিন্তু সরকার পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় তা আর হয়নি। নতুন সরকার আসার পর এই ঘটনাগুলির তদন্ত সিবিআইকে দেওয়া হয়। সিবিআই আসে এবং তদন্ত শুরু করে পেছনে কারা রয়েছে যখন জানতে পারা যায় তখন সিবিআইকে থামিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাই তদন্তে এগিয়ে যায়নি এবং কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। যারা এই ঘটনাগুলোর পেছনে রয়েছে সেই সঙ্গে যারা এই ঘটনাকে আড়াল করার চেষ্টা করেছে তাদের খুঁজে বের করা হবে। শুধুমাত্র সংবাদ মাধ্যমের উপর আক্রমণকারীদের ধরেই চুপচাপ বসে থাকবেন না নতুন সরকার। সংবাদ মাধ্যমের কর্মী এবং তাদের পরিবারের কল্যাণে আরো ভালো কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
 নির্বাচন কমিশন নাগরিক সমাজের কাছ থেকে সন্ত্রাসের কোন অভিযোগ না পেয়েই জিরো পোল ভায়োলেন্স নীতি গ্রহণ করেছে এবারে নির্বাচনকে ঘিরে তাই সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস মজবুত হয়েছে। যারা রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতি দেখে হতাশ হয়েছিলেন তাদের মধ্যে আশার আলো জেগেছে।
 শাসক দল তাদের দলীয় অফিস থেকে সরকারকে পরিচালিত করছে, এগুলো নিয়ন্ত্রিত হয় নাগপুর এবং দিল্লি থেকে। সম্পূর্ণ অনৈতিক ভাবে এইসব করা হচ্ছে তবে ২ মার্চের পর আর এসব থাকবে না, তখন রাজ্যে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে। এই সরকারের সময় বিভিন্ন সরকারি পদ বাতিল করে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে লোক নিয়োগ করা হয়েছে। এই লোকগুলো আনা হয়েছে ভিন রাজ্য থেকে। মুখে ভোকাল ফর লোকালের কথা বললেও বাস্তবে তার বিপরীত কাজ করা হচ্ছে।
বামফ্রন্টের তরফে এখনো মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করা হয়নি, তবে বহি:রাজ্য থেকে আসা কংগ্রেস নেতৃত্বরা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী হবেন জিতেন্দ্র চৌধুরী, এই বিষয়ে বামফ্রন্টের অভিমত কি? এই প্রশ্নের উত্তরে জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন বিষয়টি নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি উভয় দলের মধ্যে, তবে কংগ্রেসের তরফে আসন ভাগাভাগি বিষয়টি নিয়ে যখন আলোচনা হয়েছে তখন এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তারা নির্বাচনের পর সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান।  

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ