Advertisement

Responsive Advertisement

ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী সংসদের উদ্যোগে পালিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

আগরতলা: গভীর শ্রদ্ধা, মনন এবং সৃজনশীলতার আবহে মঙ্গলবার সারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের তীর্থভূমি আগরতলার মাটিতেও পালিত হলো মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সংসদ আয়োজিত প্রায় শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতি সমাবেশে প্রায় আড়াইশো মানুষের উপস্থিত ছিলেন। এদিন বিকেলে বহুভাষিক কবি সম্মেলনের মধ্যে দিয়ে আমাদের অনুষ্ঠান শুরু হয়। এই অনুষ্ঠান সাফল্য অর্জন করেছে দেশ বিদেশের সম্মানিত অতিথি বৃন্দের সৃজনশীল অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে। কবি সম্মেলনে কবিতা পাঠ করেছেন একশো জনের বেশি কবি। বিভিন্ন ভাষার কবিরা তাদের নিজ নিজ ভাষায় কবিতা পাঠ করেন। পাশাপাশি শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদনমূলক অনুষ্ঠান হয়। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আগরতলা স্থিত বাংলাদেশ সরকারি হাই কমিশনের সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মদ, প্রথম সচিব রেজাউল হক চৌধুরী, বাংলাদেশের প্রাক্তন এটর্নী জেনারেল জনাব আব্দুল হাই, বাংলাদেশের বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পী সীমা ইসলাম, শিলচরের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শ্রদ্ধেয় ভাস্কর দাসসহ বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ।
শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পরই শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান ভাষা সম্মাননা প্রদান। মোট আটটি ভাষায় এই ভাষা সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। বাংলা ভাষার জন্য উত্তর পূর্ব ভারতের বিশিষ্ট কবি ও ছড়াকার চূনী দাশ, ককবরক ভাষার জন্য অজিত দেববর্মা, চাকমা ভাষার জন্য গৌতম লাল চাকমা, মগ ভাষার জন্য ক্রাইরী মগ চৌধুরী, মনিপুরী ভাষার জন্য এস গম্ভিনী, বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষার জন্য মনোজ কুমার সিনহা, সংস্কৃত ভাষার জন্য ড. তাপস রায় চৌধুরী, ছিলোমিলো ভাষার জন্য বিপ্লব উরাংকে ভাষা সম্মাননা প্রদান করা হয়। এছাড়াও ১৯৬১ সালে শিলচরে ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী চুনীলাল দেবনাথকে ভাষা সৈনিক সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। সবশেষে ছিল বর্নাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। চট্যগ্রামের শিল্পী সাইমা সঙ্গীত পরিবেশন করে সবাইকে মুগ্ধ করে।
গত পাঁচ দশক ধরে ত্রিপুরা তথা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে মৈত্রীর বন্ধনকে সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে অবদানের জন্য আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনের আধিকারিকবৃন্দ এবং কর্মীদেরকে এই অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সম্পাদক অধ্যাপক ড, মুজাহিদ রহমান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সংসদের কার্যকরী সম্পাদক গৌরাঙ্গ চন্দ্র দেবনাথ। কবি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কবি ও প্রাবন্ধিক নিয়তি রায় বর্মণ। সভাপতিমণ্ডলীতে ছিলেন ড, আশিস কুমার বৈদ্য এবং বিশিষ্ট কবি জহর দেবনাথ। কবি সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক সঞ্জীব রায় চৌধুরী। কবি সম্মেলনে সঞ্চালনায় ছিলেন বিশিষ্ট কবি শ্যামল কান্তি দে। মূল অনুষ্ঠানে সঞ্চালনায় ছিলেন বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী নন্দিতা ভট্টাচার্য। ভাষা সম্মাননা প্রদান সহ মূল অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সংসদের সভাপতি ড. দেবব্রত দেবরায়। এই অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয় আগরতলা প্রেসক্লাবে। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ