Advertisement

Responsive Advertisement

২০১৮তে স্লোগান ছিল চলো পাল্টাই, এবার হোক চলো সুশাসনকে মজবুত বানাই : রাজনাথ সিং




আগরতলা, ০৮ ফেব্রুয়ারি: চলো পাল্টাই' - শ্লোগান তুলে ২০১৮ সালের নির্বাচনে ভোট দিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টিকে ক্ষমতায় এনেছেন আপনারা। আর এই সময়ে ভারতীয় জনতা পার্টি ত্রিপুরাকে সুশাসন উপহার দিয়েছে। এবার হোক চলো সুশাসনকে মজবুত বানাই। তবে ত্রিপুরাকে দেশের ১ নম্বর রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা হবে। বুধবার ৩৪ এসসি রাজনগর বিধানসভা কেন্দ্রের ভারতীয় জনতা পার্টি মনোনীত প্রার্থীর সমর্থনে আয়োজিত বিজয় সংকল্প জন সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঠিক নির্দেশনায় দেশ এগিয়ে চলছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সার্বিক বিকাশেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। 
এদিনের সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাক্তার মানিক সাহা, প্রার্থী স্বপ্না মজুমদার, বিধায়ক শঙ্কর রায়, মন্ডল সভাপতি রঞ্জিত সরকার, ইলেকশন ইনচার্জ ড: মিলন দাস, বিজেপি নেতা বিভীষণ চন্দ্র দাস সহ অন্যান্য নেতৃত্ব। সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এদিন ফের একবার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহার ব্যাপক প্রশংসা করেন। তিনি বলেন নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়ার আগে আগে খোঁজ করা হয়। তখনই উঠে আসে ডা: মানিক সাহার নাম। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ডা: মানিক সাহা একজন খুব ভালো মানুষ, খুব ভালো ডাক্তার, খুবই সৎ ও নিষ্ঠাবান, মানুষের সাথে খুব ভালো ব্যবহার করেন। সেই সঙ্গে তিনি একজন উচ্চ শিক্ষিত, কাজ করতে ভালোবাসেন এবং সরকার কিভাবে ভালোভাবে চালাতে হয় সেটা জানেন। আর ডাক্তার বাবুর চেহারা দেখেই বোঝা যায় যে তিনি অত্যন্ত একজন ভালো মানুষ। তাই পার্টি দেরি না করেই ডা: মানিক সাহাকে মুখ্যমন্ত্রীর গুরুদায়িত্ব সপে দেয়। 
কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, ২০১৮ সালে চলো পাল্টাই শ্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। আর এবারের শ্লোগান হচ্ছে - 'চলো সুশাসনকে মজবুত বানাই'। কংগ্রেস ও সিপিএমের দুটো সরকার দেখেছেন ত্রিপুরার মানুষ। দুই আমলেই ছিল উগ্রবাদীদের তৎপরতা। কখন কার প্রাণ যাবে কেউ বলতে পারে না। আজ ভারতীয় জনতা পার্টির শাসনে সেই পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আগে ছিল আতঙ্কবাদ, হিংসাবাদ। এখন হয়েছে শান্তি, সম্প্রীতি, উন্নয়ন। ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকার আসার পরই ত্রিপুরায় অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এখন চারিদিকে উন্নয়নের হাওয়া বইছে। আগে সড়কপথ বেহাল থাকায় চলাচলের মতো অবস্থা ছিল না। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণের দিশা দেখিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। ত্রিপুরার মানুষ এই পার্টিকে ৫ বছর সময় দিয়েছে। আগামী আরো ৫ বছর সময় দিলে ত্রিপুরাকে দেশের ১ নম্বর রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা হবে। শ্রী সিং বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বিকাশের দিকে এগিয়ে চলছে দেশ। করোনা মহামারির সময়ে দুটো ভ্যাকসিন দিয়ে দেশবাসীর জীবন রক্ষা করেছেন তিনি। যে বিশ্বের অন্যান্য দেশ করতে পারে নি সেটা করে দেখিয়েছে মোদির নেতৃত্বে ভারত। 
কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আরো বলেন, করোনা মহামারির সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বিনামূল্যে রেশন দেওয়া হয়েছে। এখনো দেওয়া হচ্ছে। ত্রিপুরায় কংগ্রেস সিপিএমের জমানায় ছিল শুধু ভয়, দুর্নীতি আর ভ্রস্টাচার। আর ২০১৮তে ত্রিপুরার মানুষ বিজেপিকে জিরো থেকে হিরো বানিয়ে দিয়েছে। এবারও ভারতীয় জনতা পার্টির মনোনীত প্রার্থীরা বিপুল ভোটে জয়ী হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। রাজনাথ সিং বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার মানুষের জন্য চিন্তা করে। তাই চিকিৎসার সুযোগ সকল অংশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আয়ুষ্মান কার্ড দেওয়া হয়েছে। যার মাধ্যমে বছরে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগ পাবেন সাধারণ মানুষ। এছাড়া যাদের মাথার উপর থাকার ছাদ নেই তাদের পাকা বাড়ি দেওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। ভারতীয় জনতা পার্টি জনজাতি অংশের মানুষের কল্যাণে খুবই আন্তরিক। এবারের বাজেটে জনজাতি কল্যাণে ৮৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। 
সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টি সরকার মানুষকে নিয়ে চলতে চায়। এই সরকার নারীদের কল্যাণে চিন্তা করে। তাই এবারের নির্বাচনে ১২ জন মহিলাকে প্রার্থী করেছে দল। ত্রিপুরার সার্বিক কল্যাণে কেন্দ্রীয় সরকার দুহাত তুলে সহায়তা করছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশে একটা স্বচ্ছ সরকার কাজ করছে। যার কোন কালিমা নেই। এর পাশাপাশি আসন্ন নির্বাচনে সিপিএম কংগ্রেসের জোটকে দুর্ভাগ্যজনক বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 
 উল্লেখ্য, এদিন সকালেই রাজনগর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী স্বপ্না মজুমদারের মায়ের জীবনাবসান হয়। এরমধ্যেও দলকে ভালোবেসে মায়ের বিয়োগ ব্যথা সাময়িক ভুলে জন সমাবেশে উপস্থিত হন তিনি। যার দরুণ তাঁর এই ভূমিকাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। 
এদিকে একইদিনে রাজধানী সংলগ্ন বড়জলা এলাকায় ভারতীয় জনতা পার্টির মনোনীত প্রার্থীদের সমর্থনে আয়োজন করা হয় সুবিশাল নির্বাচনী সমাবেশের। এই সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা, বিজেপির দুই প্রার্থী ডা: দিলীপ দাস, কৃষ্ণধন দাস, প্রদেশ মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য্য সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ