শিবজ্যোতি মল্লিক, তেলিয়ামুড়া: অবশেষে দীর্ঘ প্রায় ২৪ ঘন্টা পর তেলিয়ামুড়া মহকুমার মুঙ্গিয়াকামি হাতি ক্যাম্প থেকে নিখোঁজ হওয়া কিশোর নামের পুরুষ হাতিটিকে খুঁজে পেল বনকর্মীরা। অথচ তেলিয়ামুড়া মহকুমা বন আধিকারিক সাবির কান্তি দাস সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে যে প্রতিক্রিয়া দিলেন তা অনেকটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো।
উল্লেখ্য থাকে, বৃহস্পতিবার বিকেল আনুমানিক চারটা নাগাদ বনকর্মীদের উপর রাগান্বিত হয়ে মুঙ্গিয়াকামীস্থিত হাতি ক্যাম্প থেকে মাহুতের উপর আক্রমণ করে কিশোর নামের পুরুষ হাতিটি পালিয়ে গিয়েছিল ১৮মুড়ার গভীর জঙ্গলে, যে কথা আহত মাহুত নিজে জানিয়েছে।
হাতি নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার সময় হাতির মাহুতের উপর আক্রমণ এবং লোহার মোটা শক্ত শেকল ছিড়ে পালিয়েছিল কিশোর নামের ওই পুরুষ হাতিটি। এরপর পর পরই শুক্রবার দিনভর বনদপ্তরের কর্মীরা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তল্লাশি চালিয়ে অবশেষে বিকেল নাগাদ কিশোর নামের ওই পুরুষ হাতিটিকে খুঁজে বের করতে সক্ষম হয়। ফলে বনদপ্তরের কর্মীদের মধ্যে স্বস্থির নিঃশ্বাস ফিরে আসে। এমনটাই ছিল হাতি ক্যাম্পে থাকা মাহুত এবং বনকর্মীদের বক্তব্য।
এদিকে তেলিয়ামুড়া মহকুমা বন আধিকারিক সাবির কান্তি দাস সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি যে প্রতিক্রিয়া দিলেন তা সম্পূর্ণ তথ্য হলো এমন, হাতিসহ মাহুতদের নিয়ে বন দপ্তরের নাকি প্রশিক্ষণ চলছিল। তখন কিশোর নামের ওই হাতির সঙ্গে মাহুতের ভুল বোঝাবুঝির কারণে কিশোর নামের হাতিটি প্রশিক্ষণ চলাকালীন জায়গা থেকে ভেতরের জঙ্গলে চলে যায়। তখন সন্ধ্যা হয়ে যাওয়াতে বনদপ্তরের কর্মীরা খোঁজাখুঁজি না করেই ক্যাম্প মুখী হয়। পরবর্তীতে শুক্রবার হাতিটিকে বনকর্মীরা খুঁজে জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে।
তবে মহকুমা বন আধিকারিক সাবির কান্তি দাসের বক্তব্যে গরমিল ছিল। বনদপ্তরের একটি সূত্রে জানা গেছে, হাতি ক্যাম্প বা তার আশপাশ এলাকায় হাতি নিয়ে কোন প্রশিক্ষণের কাজই চলছিল না। সূত্রটির মতে, হাতি ক্যাম্পে চারটি হাতির মধ্যে তীব্র খাদ্য সংঙ্কট ছিল। অন্যদিকে, গোটা আঠারোমুড়া পাহাড়ে ঘন বনাঞ্চল একেবারে নেই বললেই চলে। তাছাড়া সূত্রটির দাবি, মুঙ্গিয়াকামী হাতি ক্যাম্পের হাতিদের খাদ্য নিয়ে দুর্নীতির ঘোটালা চলছে, একাংশ বন আধিকারিকদের হাত ধরে। অন্যদিকে স্থানীয় বনাঞ্চলে হাতির প্রধান খাদ্য কলাগাছ তারও তীব্র সংঙ্কট রয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ