Advertisement

Responsive Advertisement

দলের সকল স্তরের কর্মীদের সংযত থাকার আহ্বান জানালেন প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য

আগরতলা, ১৯ ফেব্রুয়ারি: ত্রিপুরা রাজ্যে অশান্তির বাতাবরণ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে বিরোধীরা। তাই নানা প্ররোচনামূলক বক্তব্য রাখছে তাদের নেতারা। রবিবার সন্ধ্যায় আগরতলার বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য। তিনি দলীয় কার্যকর্তা এবং রাজ্যবাসীর প্রতি আহবান রাখেন এধরণের প্ররোচনার ফাঁদে পা না দেওবার জন্য।
সেই সঙ্গে তিনি আরো বলেন, ২০২৩ সালে ভারতীয় জনতা পার্টি পুনরায় রাজ্যের ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হবে। এমন কোনো শক্তি নেই তাদের রুখতে পারবে। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা বা ভয়ভীতি ছাড়াই উৎসবের মেজাজে ভোট দিয়েছে রাজ্যবাসী। আরক্ষা প্রশাসনও নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করেছে। এত সুন্দর নির্বাচন সংঘটিত হওয়ার পর গত দু'দিন ধরে কমিউনিস্ট এবং কংগ্রেস রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। তাই সজাগ দৃষ্টি রেখে চলেছে বিজেপি।
তিনি বলেন, কুমারঘাট থেকে শুরু করে সোনামুড়ার এনসি নগর, কাকড়াবন, ৬ আগরতলা, খোয়াই, মান্দাই, সিমনাসহ বিভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছে তারা,ভারতীয় জনতা পার্টি তা দৃঢ়তার সঙ্গে প্রতিরোধ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। রাজ্যে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত। আরক্ষা প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়ে যেকোনো প্রতিহিংসামূলক কার্যকলাপ প্রতিরোধ করার জন্য প্রস্তুত বিজেপি। কমিউনিস্টরা সন্ত্রাসকে হাতিয়ার করে ২৫ বছর ত্রিপুরায় শাসন করেছে। তিনি বলেন, ৯৩' থেকে শুরু করে ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনের আগে পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় বুথ দখল করার ঘটনা ঘটেছে। সিপিআইএম এর শাসনকালে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় নিহত হয়েছেন প্রচুর সংখ্যক নাগরিক। এই বক্তব্যের স্বপক্ষে তিনি বেশ কিছু পেপার কাটিং তুলে ধরেন সাংবাদিকদের সামনে। তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৫ বছর সন্ত্রাস করে এরাজ্যের মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে, গণতন্ত্রকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। তখন কংগ্রেস বিরোধী দল ছিল। আজ নির্বাচনে কংগ্রেস মাত্র ১৩ টি আসন দিয়েছে। মাত্র ১৩ টি আসন দিয়ে ক্ষমতা দখলের দিবাস্বপ্ন দেখছে কংগ্রেস। এর জন্য লজ্জা থাকা উচিত। ২৫ বছর কংগ্রেস স্লোগান দিয়ে গেছে 'চীনের দালাল চীনে যাও। দেশ মোদের গড়তে দাও'। পাশাপাশি কমিউনিস্টরা স্লোগান দিত 'গলি গলি মে শোর হে, রাজীব গান্ধী চোর হে', 'কংগ্রেসের কালো হাত ভেঙ্গে দাও গুড়িয়ে দাও' বলে। আজ এই দু'দল একত্র হয়েছে। একদল সন্ত্রাসী, অপর দল গুন্ডাবাহিনী। আজ এই দু'দল মিলে রাজ্যজুড়ে রাজনৈতিক সন্ত্রাস চালিয়েছে। তারা জানে নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হবে। এই ভরাডুবি তারা মেনে নিতে পারছে না। দীর্ঘ ২৫ বছর কংগ্রেসীদের স্লোগান আমরা শুনেছি। তারা সেই স্লোগানের এখনো পুনরাবৃত্তি করছে। এই স্লোগানটি হলো- 'আমরা আইয়া পরতাছি, আইলে চামড়া ছুইল্লা লামু'। আর কংগ্রেসের লেজুরবৃত্তি করে কমিউনিস্টরাও এখন বলছে 'আমরা আইয়া পরতাছি'। তিনি বলেন, তাদের কাউন্টিং এজেন্টও খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস রয়েছে। আমাদের কার্যকর্তারা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিগত ছয় মাস ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। প্রদেশ সভাপতি বলেন, আমাদের সরকার প্রতিষ্ঠার পর রাজ্যের মানুষের জন্য প্রচুর জনকল্যাণমুখী কাজ করেছে। এ ব্যাপারে তিনি উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পাকা ঘর দেওয়া, সামাজিক ভাতা বৃদ্ধি, সরকারি কর্মচারীদের জন্য ২০ শতাংশ ডিএ প্রদান, কৃষকদের জন্য কৃষক সম্মান নিধি প্রদানের কথা।
রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, এই সকল কাজের নিরিখে দাঁড়িয়ে এবং মানুষ যেভাবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘর থেকে বেরিয়ে স্বাধীনভাবে তাদের গণতান্ত্রিক মতদান করেছে তাতে আমরা আত্মবিশ্বাসী যে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হবে। প্ররোচনার ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য তিনি কার্যকর্তাদের কাছে আবেদন জানান। তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় প্ররোচনার চেষ্টা করছে কমিউনিস্ট এবং কংগ্রেস। কমিউনিস্ট এবং কংগ্রেস বিগত দিনেও সন্ত্রাস এবং গুন্ডামি করে ত্রিপুরার মানুষকে বোকা বানিয়েছে। তিনি বলেন, আমরাও সজাগ দৃষ্টি রাখছি। প্ররোচনা করে ভাজপা কার্যকর্তা এবং জনগণের মধ্যে যদি অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করা হয় তাহলে ভারতীয় জনতা পার্টিও তৈরি আছে। আইনের শাসন রয়েছে ত্রিপুরায়। আরক্ষা প্রশাসনের উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে আমরা আইনের দ্বারস্থ হব। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে শ্রী ভট্টাচার্য বলেন,রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। কারণ তিনি জানেন এবার পরাজয় নিশ্চিত। আর এখন তিনি ঘর থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন জায়গায় প্ররোচনামূলক কথাবার্তা বলছেন। পাশাপাশি রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্ররোচনার অভিযোগ আনছেন তিনি। শ্রী ভট্টাচার্যের অভিযোগ,প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিগত দিনেও এ রাজ্যে প্ররোচনা দিয়ে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করেছে। আর এখনো তা করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, এর পরিণাম ভালো হবে না। কারণ রাজ্যের জনগণ সজাগ রয়েছে। ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে রয়েছে রাজ্যের জনগণ। ত্রিপুরার মানুষ অশান্তির বাতাবরণ হোক তা চায় না। তিনি সংবাদ মহলের মাধ্যমে এ ব্যাপারে দলীয় কার্যকর্তা এবং রাজ্যবাসীর কাছে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানান।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে তার সঙ্গে ছিলেন দলের প্রদেশ মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্যও। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ