আগরতলা, ৯ ফেব্রুয়ারী : ভারতের বর্তমান সরকার মুখে বলে যে উত্তরপূর্বাঞ্চলকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া কথা কিন্তু বাস্তবে তার বিপরীত কাজ করেছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেস দলের আসাম প্রদেশ কমিটির সভাপতি রিপুন বরা। বৃহস্পতিবার ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেস ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এই কথা বলেন। তারা মুখে এই অঞ্চলের উন্নয়নের কথা বললেও বাস্তবে তারা তেমন কিছু করছেন না, এই অঞ্চলের সঙ্গে বিমাতৃ সুলভ আচরণ করছে। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ৮০ হাজার কোটি টাকা এই অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করলেও, এখন পর্যন্ত এই টাকা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি। বাজেটে ঘোষণা করলেও যদি এই অর্থ বাস্তবে দেওয়া না হয় তাহলে ঘোষণার কোন মূল্য থাকে না। এরপরেও তারা আশা করেন মানুষ তাদের ভোট দেবেন। ২০২২-২৩অর্থ বছরের বাজেটে উত্তর পূর্বের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ১হাজার ৪শ ১৯কোটি আর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই টাকার পরিমাণ সামান্য বৃদ্ধি করেছে ২হাজার ৪শ ১৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এই টাকা ৮রাজ্যের মধ্যে ভাগ করলে ৩০২ কোটি টাকা করে এক একটি রাজ্য পাবে। এই টাকা দিয়ে একটি রাজ্যের উন্নয়ন কি করে সম্ভব হবে একটি ফ্লাইওভার তৈরি করতে গেলেই এর চেয়ে বেশি টাকা খরচ হয়ে যায়। এটাই তাদের উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের নমুনা।
পাশাপাশি তিনি আরো বলেন ত্রিপুরার নির্বাচনী প্রচারে এসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বিজেপি সভাপতি সহ অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলছেন অর্থনৈতিক দিক থেকে ভারত বিশ্বের পঞ্চম স্থানে চলে এসেছে। ইংল্যান্ডকে ও পিছনে ফেলে দিয়েছে। ক্ষুধার্ত পৃথিবীর তালিকায় ভারতের স্থান ১০৫এ নেমেছে। যা নেপাল এবং বাংলাদেশের মতো ছোট দেশের পেছনে।
একদিকে সরকার বলছে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে অথচ সরকার দেশের ৮০ কোটি মানুষকে ২০২৪সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত বিনামূল্যে চাল দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, এখানে প্রশ্ন হচ্ছে যদি বিশ্বের পঞ্চান ইকোনমিক দেশ হিসেবে ভারত উঠে আসে তাহলে দেশের বড় অংশের মানুষদেরকে কেন বিনামূল্যে খাওয়াতে হবে। এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে তারা দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে এবং তাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে হচ্ছে সরকারকে। তাদের রোজগার করার মত অবস্থান নেই এটা প্রমাণিত হচ্ছে।
মানুষ বিজেপির এই সকল চালাকি ধরে ফেলেছে, তাই এবারের নির্বাচনে ত্রিপুরা নাগাল্যান্ড এবং মেঘালয়ের মানুষ প্রত্যাখ্যান করবে বলেও দাবি করেন তিনি। সেই সঙ্গে তার প্রশ্ন বিজেপি সরকার মুখে মুখে ডাবল ইঞ্জিনের কথা বলে, তবে এটাই কি তাদের ডাবল ইঞ্জিনের নমুনা? সেই সঙ্গে তিনি আরো অভিযোগ করেন এবারের বাজেটের কোন কিছু নেই ঋণ নেওয়া এবং তা পরিশোধ করা ছাড়া।
এদিনের এই সাংবাদিক সম্মেলনে রিপন বরার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পীযূষ বিশ্বাস এবং নেতা দেবু ঘোষ।
0 মন্তব্যসমূহ