আগরতলা, ৪ফেব্রুয়ারী: স্বাধীনতার একশ বছর পর ভারতের চেহারা কি হবে তার প্রতিচ্ছবি রয়েছে এ বছরের এই বাজেটে। পাশাপাশি এ বছরের কেন্দ্রীয় বাজেটে ত্রিপুরা সহ সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়নের বিষয় উল্লেখ রয়েছে। এই অভিমত ত্রিপুরা প্রদেশ বিজেপির মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্যর। কেন্দ্রীয় বাজেট সম্পর্কে দলের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে তিনি এই কথাগুলো বলেন। শনিবার আগরতলার বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয়ের সাংবাদিক সম্মেলনে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন তিনি।
সেই সঙ্গে নরেন্দ্র ভট্টাচার্য আরো বলেন, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবছর যে বাজেট পেশ করেছেন তা হচ্ছে অমৃত কালের বাজেট। আগামী ২৫ বছর দেশ কোন দিকে যাবে এবং স্বাধীনতার একশ বছরের দেশের অর্থনৈতিক কোন দিকে যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে দেশের অবস্থান কি হবে এই বিষয়গুলো দিশা রয়েছে এবছরের বাজেটে। এমন সব বিষয়ে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যেগুলো আগামী দিনে ভারতের অর্থনীতিকে চরম শিখরে নিয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যে বর্তমান সরকার যে পদক্ষেপগুলি নিয়েছে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির পঞ্চম স্থানে এসে পৌঁছেছে। মাত্র কয়েক বছরের এ ধরনের পরিবর্তন এসেছে। বৈশ্যিক যে অবস্থা চলছে এবং করোনা মহামারীর পর যে অবস্থা তৈরি হয়েছে এখানে দাঁড়িয়ে ভারত বিশ্বকে পথ দেখাচ্ছে। এদেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানে পরিবর্তন এসেছে অর্থনৈতিক সংস্কার হচ্ছে। আগামী দিনে এই সংস্কার আরও তরান্বিত হবে। মধ্যবিত্ত এবং গরিবদের জন্য যে বাজে তৈরি করা হয়েছে তা সকলকে স্পর্শ করেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রির দাম কমছে, করোনা কাল থেকে এই দেশে নানা পরিবর্তন এসেছে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েও চাল রপ্তানিতে দেশ প্রথম স্থান দখল করেছে। দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে, শিল্পের বিকাশ হচ্ছে। আরো শিল্পের বিকাশের জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এই বাজেটে ২০৪৭ সালের উন্নত ভারতের প্রতিচ্ছবি দেখানো হয়েছে। পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৩৩ শতাংশ বরাদ্দ করা হয়েছে, এটি একটি বিশাল পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে দেশের স্থায়ী সম্পদ তৈরি হবে ও উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। রপ্তানি বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই সঙ্গে উৎপাদন বাড়িয়ে এইসব পণ্যগুলিকে বিদেশে রপ্তানির জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ হয়েছে, বাজেটে আরো সুযোগের কথা বলা হয়েছে। শুধু সরকারি চাকরিই নয়, আত্মনির্ভর হওয়ার কথা মোদী সরকারের তরফে প্রথম থেকেই বলা হচ্ছে এগুলোকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নানা পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। প্রযুক্তির উন্নয়ন এবং প্রযুক্তিকে বিক্রি করে অর্থনীতির বিকাশের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। যুব প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণ, তারা কোন পথে যাবেন এবং তাদের কর্মসংস্থানের বিষয়গুলো উল্লেখিত রয়েছে। এই রাজ্যের মানুষও যাতে আরো অনেক ভাবে সুবিধা পায় তার উল্লেখ রয়েছে বাজেটে।
'প্রধানমন্ত্রী বিকাশ' নামের নতুন একটি প্রকল্পের উল্লেখ রয়েছে এবছরের বাজেটে। ক্ষুদ্র হস্ত ও কারু শিল্প গুলোকে এই প্রকল্পে যুক্ত করা হয়েছে। এই প্রকল্প যাতে উৎসাহিত হন তার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে সেই সঙ্গে প্রকল্পের জন্যও বিনিয়োগ করা হয়েছে। এবং উৎপাদিত সামগ্রী সরকারি ভাবে বিপণনের জন্য ব্যবস্থা করা হবে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের মানুষ বিপণনের একটি সমস্যায় ভুগছিলেন এখন সরকারি উদ্যোগ বিপণ করা হবে। এর ফলে আমাদের মতো রাজ্য সরাসরি উপকৃত হবে। কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, কম্পিউটার প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হচ্ছে, অত্যাধুনিক ডাটাবেস তৈরি করা হচ্ছে। এই প্রযুক্তি গুলোকে এ রাজ্যেও কাজে লাগানো হচ্ছে। পশু পালন মৎস্য চাষ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই বিষয়গুলো আমাদের রাজ্যের জন্য যথেষ্ট উপযোগী, তাই রাজ্যের উপকারে আসবে এই বিষয়গুলো। আক্ষরিকতা এই বাজেট হচ্ছে গরিব এবং মধ্যবিত্তের। আয় করে ছাড় দেওয়া হয়েছে, ৫ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭ লক্ষ টাকা করা হয়েছে।
পাশাপাশি নির্বাচন উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে যে সকল স্টার ক্যাম্পেইনার আসছেন তাদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানান, আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে আসবেন। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজনাথ সিং, অভিনেত্রী হেমা মালিনী, নীতিন গড়করি, যোগী আদিত্যনাথ, সর্বানন্দ সোনোয়ালসহ আরো বেশ কিছু নেতৃবৃন্দ আসবেন। মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং, অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমা খান্ডু প্রমুখ আসছেন। সেই সঙ্গে সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা আবারো রাজ্যে আসবেন বলে জানান।
0 মন্তব্যসমূহ