Advertisement

Responsive Advertisement

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্য জুড়ে ব্যাপক নজরদারি চালাচ্ছে কমিশন


আগরতলা, ৭ ফেব্রুয়ারী : ত্রিপুরা রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে যথাসম্ভব সংযম দেখানোর জন্য রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক কিরণ গিত্যে রাজনৈতিক দলগুলি থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসকের কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক কিরণ গিত্যে এই আহ্বান জানিয়ে বলেন, মিশন জিরো পোল ভায়োলেন্স সফল করতে নির্বাচন কমিশন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। নির্বাচনকে ঘিরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেজন্য যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কোনও ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, শক্ত হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হবে বলে জানান। আইন শৃঙ্খলা নিজের হাতে না নেওয়ার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের
যেমন নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে তেমনি প্রার্থীদের নির্বাচনী এজেন্টদের নিরাপত্তার বিষয়টির দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজ্যে যে ৩,৩৩৭টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্র রয়েছে তার সবকটিতেই কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হবে। যে সমস্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছতে ৩০ মিনিটের বেশি সময় লাগে সেখানে দ্বিগুণ বাহিনী মোতায়েন করা হবে। সীমান্তবর্তী এবং নিরাপত্তার দিক দিয়ে স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতেও দ্বিগুণ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হবে। তিনি বলেন, ভোটের কাজে নিরাপত্তার জন্য ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সোমবার থেকে রাজ্যে আরও আধা সামরিক বাহিনী আসা শুরু হয়েছে বলে উল্লেখ করে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক বলেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হবে। রাজ্যে এই মুহূর্তে ২৫০টিরও বেশি নাকা পয়েন্ট রয়েছে, যেগুলি ২৪ ঘণ্টা চালু রয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে গত বছরের আগস্ট মাস থেকেই আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, ঐ সময় থেকে এখন পর্যন্ত ১,৬১০ জনের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাসরত কাঁটাতারের ওপারে থাকা ভোটারগণ যাতে ১৬ ফেব্রুয়ারি তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন সেজন্য তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিএসএফ-এর হাতে এমন ১৩৯ জন ভোটারের তালিকা দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানান, উত্তর জেলার চুরাইবাড়ি থানার ইন্সপেক্টর ধ্রুবজ্যোতি দেববর্মার নেতৃত্বে মঙ্গলবার এক অভিযান চালিয়ে ৫১৯ কেজি শুকনো গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। এর বাজারমূল্য হবে ১০ কোটি টাকা। তিনি জানান, তল্লাসী অভিযান চালানোর সময় আরজে- ১৯ জিএফ-৭০১৯ নম্বর যুক্ত ১৪ ঢাকার একটি ট্রাককে ধরা হয়, যার থেকে এই গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।
ট্রাকটি গোমতী জেলার উদয়পুর থেকে আসামের করিমগঞ্জ যাচ্ছিল। এই ঘটনায় রঞ্জিত দেববর্মা (২০) এবং সূর্য জমাতিয়া (১৯)-কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চুরাইবাড়ি থানায় এই ঘটনায় এনডিপিএস-এর একটি সুনির্দিষ্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানান, সিএপিএফ-এর সঙ্গে যৌথ অভিযানে এই মাদক দ্রব্য ধরা পড়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত স্টেট পুলিশ নোডাল অফিসার তথা রাজ্য পুলিশের আইজি ক্রাইম জি কে রাও বলেন, গত বছরের ২২ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত রাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৪২ হাজার ৭০০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া ৬০ হাজার কেজি ফেন্সিডিল, ১ লক্ষ ২২ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট, ২ হাজার গ্রামের উপর হেরোইন উদ্ধার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ২৭ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকার উপর মাদক দ্রব্য বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ৬২টি বিভিন্ন ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে, ৫৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই সময় পর্যন্ত ৩১৪ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ