আগরতলা, ১০ফেব্রুয়ারী: ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে কোন দল জয়ী হবে এটা বড় বিষয় নয়। এই রাজ্যে বর্তমানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিষয় শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমের কাছে এই দাবি করেন সিপিআইএম দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের পরিবেশ বর্ণনা করতে গিয়ে এই অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি আরো বলেন নির্বাচক মন্ডলী নিজেদের মনস্থির করে নিয়েছেন সরকার পরিবর্তনের জন্য।
আগরতলার মেলার মাঠ এলাকার দশরথ দেব স্মৃতিভবনের সিপিআইএম দলের ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয় এতে উপস্থিত ছিলেন সীতারাম ইয়েচুরি এবং জিতেন্দ্র চৌধুরী।
এখানে সীতারাম বলেন, ত্রিপুরা রাজ্যে এখন গণতন্ত্র নেই, বিজেপি রাজ্যের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে । তবে রাজ্যের মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য মনস্থির করে নিয়েছেন। তাই নির্বাচনের সরকারের পতন নিশ্চিত।
সেই সঙ্গে তিনি আরো বলেন ত্রিপুরায় এখন কে জয়ী হবে এবং কে হারবে এটা বড় বিষয় নয়, ত্রিপুরাবাসীর এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় আকাঙ্ক্ষা হল গণতন্ত্রকে পুনঃ প্রতিষ্ঠিত করা। এই লক্ষ্যে বামফ্রন্ট এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলি কাজ করছে।
কিন্তু শাসক দল তাদের টাকা এবং পেশি শক্তি ব্যবহার করে আবার ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্য জোড় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাই বিরোধীদের উপর প্রতিনিয়ত নির্যাতন চালাচ্ছে। বিশেষ সূত্রের মাধ্যমে তাদের কাছে খবর এসেছে রাজ্য বিজেপি এবং কেন্দ্র সরকার কেন্দ্রীয় এজেন্সিদের কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ণ অনৈতিক ভাবে টাকা বন্টন করছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তাদের এসব আচরণের ফলে নির্বাচনের প্রাক মূহুর্তে রাজ্যে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা বলেও জানান। এইসব কাজ করার জন্য প্রশাসনের তরফে অন্যায় ভাবে সুযোগ করে দিচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনকে এইসব বন্ধে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে বলে দাবি করেন।
নির্বাচন কমিশনকে এইসবের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। ত্রিপুরা রাজ্যের এই পরিস্থিতি সম্পর্কে দিল্লিতে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করবেন বামফ্রন্টের একটি প্রতিনিধি দল। কমিশন যাতে এই সকল বিষয়ে কার্যক্রম পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই দাবি জানানো হবে বলে জানান তিনি। নির্বাচন কমিশনকে রাজ্যে ভয় মুক্ত পরিবেশে স্বচ্ছ নির্বাচন সম্পন্ন করার নিশ্চয়তা দিতে হবে। ত্রিপুরা রাজ্যে দেশের মধ্যে অনেক বেশি পরিমাণ ভোট প্রদান হয়ে থাকে। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনকে উদ্যোগে নিতে হবে। তার জন্য রাজ্য পর্যাপ্ত পরিমাণ কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগ করতে হবে। তবে এই সকল কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি থেকে আনা চলবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেন।
অপরদিকে জিতেন্দ্র চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন গত ২৫ বছরের বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যের উন্নয়নের জন্য যা যা কাজ করেছে তা গত পাঁচ বছরের ধ্বংস করে দিয়েছি বিজেপি সরকার। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার আগে বিজেপি সাধারণ মানুষদেরকে ২৯৯ টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু তারা একটি প্রতিশ্রুতিও পালন করেনি। ২০২৩ নির্বাচনকে সামনে রেখে যে প্রতিশ্রুতি পত্র তারা তৈরি করেছে তাতে আগের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের বিষয়ে একটি কথা উল্লেখ নেই।
এদিনও এই দুই নেতৃত্ব জানান বিজেপিকে ক্ষমতারচ্যুত করার জন্য সকল বিরোধী দলকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। কংগ্রেসের সাথে বামেদের আসন ভাগাভাগি হয়েছে এই জায়গায় তিপ্রামথা দল কি তাদের সঙ্গে জোটে যাওয়ার কোন ইঙ্গিত দিয়েছে? এর উত্তরে সীতারাম এবং জিতেন্দ্র চৌধুরী জানান তারা সমর্থন দেওয়ার দেওয়ার বিষয়ে তেমন কিছু নতুন করে বলেনি।
তখন সাংবাদিকদের তরফে জিজ্ঞাসা করা হয় যদি ত্রিশঙ্ক পরিস্থিতি হয় তাহলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে? এর উত্তরে সীতারাম বলেন মানুষ যদি সরকার পরিবর্তন করার মন অস্থির করে নেন তবে ত্রিপুরা রাজ্যে ত্রিশঙ্কু পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে না।
এই প্রসঙ্গে সিপিআইএম দলের ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী আরো কিছু যুক্ত করে বলেন ত্রিপুরা রাজ্যের মানুষ পরিবর্তনের জন্য মনস্থির করে নিয়েছেন।
0 মন্তব্যসমূহ