আগরতলা, ২৮ ফেব্রুয়ারি: ভারত সরকারের ইলেকট্রনিক কার মিশন নিয়েছে, এর অধীনে ২০২৭সালের মধ্যে দেশে ৩০শতাংশ গাড়ি হবে ইলেকট্রনিক্স। এই মিশনের অধীনে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানকারী সংস্থা ওএনজিসি তাদের পরিবহনে ব্যাটারি চালিত গাড়িতে যুক্ত করছে। দেশ এবং বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় তাদের অনুসন্ধান কাজের যেসব সাইড রয়েছে এগুলোতে এই গাড়িগুলোকে যুক্ত করা হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে ওএনজিসি'র ত্রিপুরা অ্যাসেটও তাদের পরিষেবায় ইলেকট্রনিক্স কারকে যুক্ত করল। পাশাপাশি এদিন ভারি বাহন চেরি পিকারকেও তাদের কাজে যুক্ত করা হয়।
মঙ্গলবার রাজধানী আগরতলার হাঁপানিয়া এলাকার ওএনজিসি'র ত্রিপুরা অ্যাসেট অফিসে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গাড়ি গুলিকে তাদের পরিষেবায় সংযুক্ত করা হয়। সংস্থার ত্রিপুরা অ্যাসেট ম্যানেজার তরুণ মালিক সবুজ পতাকা নেড়ে এগুলির আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। এই সময় তার সঙ্গে ছিলেন সংস্থার অন্যান্য কর্মকর্তারা।
আনুষ্ঠানিক সূচনা করার পর অ্যাসেট ম্যানেজার তরুণ মালিক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, চেরি পিকার হচ্ছে বিশাল আকারের এবং প্রচন্ড শক্তিশালী একটি গাড়ি, তেল এবং গ্যাস অনুসন্ধানের কাজে সহায়তা করবে। সারা ভারতবর্ষ এবং দেশের বাইরে যে সকল জায়গায় ওএনজিসি তাদের অনুসন্ধান কাজ চালাচ্ছে এই সকল জায়গায় কোথাও এই বাহনটি ব্যবহার করা হয়নি। প্রথমবারের মতো ওএনজিসি ত্রিপুরা রাজ্যে তাদের কাজের জায়গায় সহায়তা করার জন্য এমন দুটি গাড়িকে নিয়ে এসেছে।
এই গাড়িটি মূলত কর্মীদেরকে সর্বোচ্চ ২৪ মিটার উচ্চতায় ড্রিলিং রিগের উপর খুব সহজে নিয়ে যাবে। যা কাজের ক্ষেত্রেখুব সহায়তা করবে। এই গাড়ির সঙ্গে যুক্ত থাকা ক্রেন একসঙ্গে ২৫০ কেজি ওজন উপরে তুলতে সক্ষম।
পাশাপাশি তিনি বলেন যাত্রীবাহী ছোট ইলেকট্রনিক্স গাড়ি গুলি কর্মকর্তাদের পরিবহনের কাজে ব্যবহার করা হবে। প্রাথমিক ভাবে মোট চারটি গাড়িকে যুক্ত করা হয়েছে। এই গাড়িগুলির কাজ করার ক্ষমতা দেখে পরবর্তী সময়ে আরো গাড়ি নেওয়ার বিষয়ে পরিকল্পনা নেওয়া হবে। মূলত পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশে কার্বন নিঃসরণ কমাতে, জ্বালানি তেলের উপর আমদানী নির্ভরশীলতা কমাতে তাদের এই উদ্যোগ। এই গাড়িগুলো একবার চার্জ করলে এক সঙ্গে সর্বোচ্চ ২৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলাফেরা করতে পারে।
সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে প্রথমবার ওএনজিসি তাদের পরিষেবায় এই গাড়ি যুক্ত করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বর্তমান সময়ে ওএনজির কাজের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, রাজ্যের নতুন করে তিনটি ড্রিলিংরিগ আনা হয়েছে। যেগুলি অত্যাধুনিক মানের, ফলে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের কাজে আরো বেশী সহায়তা করবে।
ত্রিপুরার উত্তর জেলার জলেবাসার পাশে খুব্বল এলাকায় নতুন একটি গ্যাস উত্তোলন প্রকল্প চালু করা হবে খুব দ্রুত। এইজন্য ইতিমধ্যে কাজ শুরু করা হয়েছে। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি এই প্রকল্প থেকে গ্যাস উত্তোলন করার লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে কাজ চলছে। বিক্রি করার জন্য গেইল এবং আসাম গ্যাস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, এই দুটি সংস্থাকে দৈনিক ৫০হাজার কিউবিক মিটার প্রতিদিন করে মোট ১লক্ষ কিউবিক মিটার প্রতিদিন ব্যবহার করা হয়। এর জন্য এই দুটি সংস্থার সঙ্গে ওএনজির ইতিমধ্যে চুক্তি হয়ে গিয়েছে বলে জানান তিনি।
বিদ্যুতের গ্রীডর মত নর্থ-ইস্ট গ্যাস গ্রীড তথা এনইজিজি তৈরি করা হয়েছে, যা ন্যাশনাল গ্যাস গ্রীড'র সঙ্গে যুক্ত হবে। মূলত এই অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় উৎপাদিত প্রাকৃতিক গ্যাসকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সহজে পাঠানো এবং সুষ্ঠুভাবে বণ্টনের লক্ষ্যে এই গ্রীড চালু করা হয়েছে। খুব্বল গ্যাস উত্তোলন কেন্দ্রকেও এনইজিজি এর সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর ফলে রাজ্যের উৎপাদিত গ্যাস দেশের অন্যান্য প্রান্তে দ্রুত পাঠিয়ে দেওয়া যাবে, আবার যদি কোন কারণে স্থানীয় এলাকায় গ্যাসের উৎপাদনের সমস্যা হয় তাহলে অন্যান্য রাজ্য থেকে প্রয়োজনীয় গ্যাস আমদানি করা সম্ভব হবে। খুব্বলের পাশাপাশি বগফা, রাজনগরে আরো চারটি ব্লকে গ্যাস উত্তোলনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ