আগরতলা, ১মার্চ : রাত পোহালেই ভোট গণনা, তার হাতেগোনা কয়েক ঘন্টা আগে আত্মবিশ্বাসী শাসক বিরোধী উভয় শিবির। শেষ লগ্নে উভয় শিবিরের দাবি চল্লিশটির বেশি আসন নিয়ে সরকার গড়ছেন তারা। এই দাবিতে শেষ লগ্নেও দ্বন্দ্বে সাধারন মানুষ।
রাজধানী আগরতলার জগন্নাথবাড়ি রোড এলাকার বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয়ে বসে দলের প্রদেশ কমিটির মুখ্য মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ত্রিপুরা রাজ্যের ক্ষমতায় আসছে বিজেপি। ক্ষমতায় আসার পর তোর তার আবারো মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য প্রথম দিন থেকে কাজ করবে। গত পাঁচ বছর ধরে বিরোধীরা রাজ্যের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে বারবার প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। ভোটের দিন ভোটারদেরকে বুথে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়ার অভিযোগ চলেছে। এমনকি ভোট গ্রহণ এবং গণনার অন্তর্বর্তী সময়ে নির্বাচন উত্তর সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে, এ বিষয়ে সুব্রত চক্রবর্তীর অভিমত, নির্বাচনে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে তারা রাজ্যজুড়ে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। রাজ্যে অশান্তির বাতাবরণ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছেন। বিজেপি এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায়, আগামী দিনে যাতে রাজ্যে এ ধরনের ঘটনা না ঘটাতে পারে তার জন্য প্রশাসনকে দলের তরফে আহবান জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
এবারের ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে শাসক দল বিজেপির হার নিশ্চিত, রাজ্যের জনগন তাদের উচিৎ শিক্ষা দিয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের গননার আগের দিন সংবাদ মাধ্যমের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে এই কথা বলেন বিধায়ক ও এবারের নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী সুদীপ রায় বর্মন। রাজধানীর কুঞ্জবন এলাকার ১ নং এম এল এ হোস্টেলে বসে সংবাদ মাধ্যমকে একথা বলেন।
নির্বাচনের এই ফল শুধুমাত্র ত্রিপুরা রাজ্য নয় সমগ্র দেশের সামনে নতুন এক রাজনৈতিক বার্তা দেবে। বিজেপি'র ডানা ছাটাই শুরু হবে বলেও দাবী করেন তিনি। দেশের ৬৯শতাংশ মানুষ বিজেপিকে পছন্দ করেন না। এর পরও কিছু ভোট কাটার দল রয়েছে তাদের কল্যানে বিজেপি ক্ষমতায় টিকে আছে। কিন্তু এবার বিজেপি ত্রিপুরা রাজ্যে দুই অংকের আসনে জয়ী হতে পারবে না। সর্বোচ্ছ ৯আসনেই থেমে যাবে। অপরদিকে বাম কংগ্রেস জোট এবার নির্বাচনে ৪০টির বেশি আসন পাবে বলে দাবি করেন সুদীপ রায় বর্মন।
সিপিআইএম দলের ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদক মন্ডলের সদস্য পবিত্র কর গননার আগে দাবী করেন বামফ্রন্ট প্রার্থীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হবেন। বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস প্রার্থী মিলে তিন ভাগে দুই ভাগ আসনে জয়ী হবেন। তিনি আরো বলেন এবার ব্যাপক সংখ্যক মানুষ মতাধিকার প্রয়োগ করেছেন। গত পাঁচ বছরে বিজেপি রাজ্যে ব্যাপক সন্ত্রাস চালিয়েছে। তারপরে মানুষ প্রচন্ডভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন সশস্ত্র বিজেপি কাজে। নির্বাচনের দিন সকাল থেকে লাইন ধরে ভোট দিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা ভোট দিতে আসার সময় অনেক বাধা সম্মুখীন হয়েছেন, অনেকের রক্তাক্ত হয়েছেন এরপরও মানুষ ভোট দিয়েছেন। এতসব প্রতিরোধ উপেক্ষা করে মানুষ ভোট দিয়েছেন কারণ তারা রাজ্যে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চান। মানুষের ভোট বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস দলের পক্ষে গিয়েছে। বিজেপি এখনো চেষ্টা চালাচ্ছে ভোটকে প্রভাবিত করার, তারা গণনা কেন্দ্রে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাবেন গণনাকে প্রভাবিত করার। কিন্তু বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ গণনা এজেন্টদেরকে কঠিনভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন যাতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন।
0 মন্তব্যসমূহ