Advertisement

Responsive Advertisement

মহিলাদের ভোটেই মোদি-মানিক সাহার বাজিমাত


আগরতলা, ১৪ মার্চ২০২৩ : ২০২৩ এর বিধানসভা নির্বাচন চলাকালীন সময়ে শাসকদল বিজেপিকে নিয়ে বিরোধীদের নানারকম মন্তব্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, "বড়জোর পাঁচ ছয়", "এবার আমরাই আসবো", এই সমস্ত উক্তিকে দূরে ঠেলে দিয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহার নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের মতো ত্রিপুরায় ক্ষমতায় ফিরে আসে বিজেপি আইপিএফটি জোট। একদিকে বাম কংগ্রেস জোট, অপরদিকে জনজাতি ভিত্তিক রাজনৈতিক দল তিপ্রামথার উত্থান, এই দুই প্রধান প্রতিপক্ষকে পেছনে ঠেলে দিয়ে কোন যাদুকাঠী বলে দ্বিতীয় বার ত্রিপুরার জনগণ আস্থা রাখলেন বিজেপির উপর, এই নিয়েই রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর চর্চা।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য অনুযায়ী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহার নেতৃত্বে দ্বিতীয় বিজেপি আইপিএফটি জোট সরকার ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এই রাজ্যের মহিলা ভোটাররা। নির্বাচন পূর্ববর্তী সময় অথবা নির্বাচনে প্রচার অভিযান চলাকালীন সময়ে মুখ্যমন্ত্রী যেখানেই প্রচার কর্মসূচিতে গেছেন, সেখানেই পুরুষদের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে মহিলাদের মধ্যে এবং উপস্থিতির হারও পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বেশি লক্ষ্য করা যায় । তখনই মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা মন্তব্য করেছিলেন এবারের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন মহিলারা । ফলাফলের দিকে তাকালে লক্ষ্য করা যায় তাঁর ভবিষ্যৎবাণী শতভাগ মিলে গেছে।

এবারের বিধানসভা নির্বাচনে প্রায় ৯০ শতাংশ ভোট কাস্টিং হয়েছে । এর মধ্যে নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য অনুযায়ী পুরুষদের তুলনায় বিপুল সংখ্যায় ভোট দিয়েছেন মহিলারা । অর্থাৎ মহিলা ভোটদাতার সংখ্যা অধিক । তখনই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চর্চা শুরু হয়ে যায়, এবারের নির্বাচনের ফলাফলে নির্ণায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছেন মহিলারা। নিঃসন্দেহে বলা যায় মহিলাদের ভোট এবার বিজেপি আইপি একটি জোটের পক্ষেই পড়েছে।
বিগত সরকারের তুলনায় ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন সরকারের সময়ে ত্রিপুরায় মহিলাদের নিরাপত্তা বৃদ্ধি পেয়েছে । সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে মহিলা স্বসহায়ক দলের সংখ্যা। আশা এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি, সরকারি চাকরি ক্ষেত্রে তেত্রিশ শতাংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ, সরকারি ব্যবসায়িক স্টলে ৫০ শতাংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ, স্নাতক স্তর পর্যন্ত মহিলাদের সরকারি খরচে পড়াশোনার ব্যবস্থা। মহিলাদের নিরাপত্তার দিকে লক্ষ্য রেখে মহিলা থানার সংখ্যা বৃদ্ধি করা। এইসবের পাশাপাশি ২০২২-২৩ অর্থবছরে মহিলাদের সার্বিক বিকাশের লক্ষ্যে 'মহিলা স্বশক্তিকরন প্রকল্প' মহিলাদের বিজেপির প্রতি আকৃষ্ট করেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনুমান।

বিগত বিজেপি আইপিএফটি জোট সরকারের সময়ে মহিলাদের মধ্যে সরকারি ন্যায্য মূল্যের দোকানের ডিলারশিপ তুলে দেওয়া, সামাজিক ভাতা ২০০০ টাকা করা, রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তগুলোতে সবচাইতে বেশি মহিলারাই উপকৃত হয়েছেন বলে সরকারি তথ্যেই প্রমাণ পাওয়া যায়। ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে যে "সংকল্প পত্র" প্রকাশ করা হয়েছে তাতেও মহিলাদের সার্বিক বিকাশের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে সবচাইতে বেশি মহিলাদের আকৃষ্ট করেছে কন্যা সন্তানের জন্মের পরেই ৫০,০০০ টাকার শংসাপত্র তুলে দেয়ার ঘোষণা। এইসব বিষয়গুলো মহিলাদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে বলেই তাঁদের ভোট ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষে গেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনুমান । আর মহিলাদের সমর্থনকে ভর করে এবারের নির্বাচনে মোদী-মানিক সাহার নেতৃত্বাধীন বিজেপি আইপি একটি জোট বাজিমাত করলো বলে বিশেষজ্ঞরা এখন বলতে শুরু করেছেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ