আগরতলা, ২৮মার্চ ২০২৩: রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার নেশার বিরুদ্ধে অভিযানে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। রাজ্যের জনমানসে বিশেষত ছাত্র ও যুব সমাজে নেশার ক্ষতিকর প্রভাব লক্ষ্য করে রাজ্য সরকার নেশা বিরোধী অভিযান অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে শুরু করেছে এবং নেশার কু প্রভাব থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আজ রাজ্য বিধানসভায় বিধায়ক বৃষকেতু দেববর্মার জনস্বার্থে আনা একটি দৃষ্টি আকর্ষনী নোটিশের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি জানান, নরসিংগড়ের আধুনিক সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালে ১০ শয্যাবিশিষ্ট ড্রাগ ডিএডিকশান সেন্টার চালু করা হয়েছে। ঐ হাসপাতালে এডিকশান ক্লিনিক ওপিডি চালু করা হয়েছে এবং সেখান থেকে বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ করা হচ্ছে। এই ধরণের সুবিধা যাতে অন্যান্য জেলাগুলিতেও দ্রুত চালু করা যায় সরকার তা খতিয়ে দেখছে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের স্কুল-কলেজগুলিতে নেশার ক্ষতিকর প্রভাব সম্বন্ধে প্রতিনিয়ত সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠান করা হচ্ছে। চিকিৎসক, নার্স, কমিউনিটি হেলথ অর্গানাইজার এবং অন্যান্য প্যারামেডিক্যাল স্টাফদেরও নেশার কুপ্রভাব সম্বন্ধে নিয়মিত ট্রেনিং প্রোগ্রাম ও ওয়ার্কশপের আয়োজন করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ার প্রচারের পাশাপাশি নিয়মিত ভাবে নেশার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়ে থাকে এবং সেইসঙ্গে অভিযুক্তদেরও গ্রেপ্তার করা হয়ে থাকে। আগরতলায় নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) এর একটি শাখা স্থাপনের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, গাঁজা গাছ ধ্বংসের জন্য নিয়মিত অভিযান চালানো হয়ে থাকে। বিগত তিন বছরে মোট ৩,৬৫,০০,৩৮ ১টি গাজার চারা ধ্বংস করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটি ফুল বডি স্কেনার ক্রয় করার প্রস্তাব বিবেচনাধীন আছে যাতে নেশাসামগ্রী বহনকারী গাড়ির স্ক্যান করে নেশাদ্রব্য সনাক্ত করা যায়।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এনডিপিএস কেইস এর তদন্ত কাজে দক্ষতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে বিগত দুই বছরে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ সোসাল ডিফেন্স (এনআইএসডি) এবং নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো (এনসিবি) এর যৌথ সহযোগিতায় পুলিশ ট্রেইনিং অ্যাকাডেমি (পিটিএ) তে ৭টি ট্রেনিং কোর্স করানো হয়েছে। নিয়মিত প্রয়াস কর্মসূচির মাধ্যমে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের এবং জেলা পুলিশের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মধ্যে নেশাবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা জারি রয়েছে। তিনি বলেন, জেলা পুলিশ রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকায় ফুটবল, ক্রিকেট ইত্যাদি খেলার কর্মসূচির মাধ্যমে নেশাদ্রব্য ব্যবহারের ক্ষতিকারক দিকগুলি সম্বন্ধে যুবক-যুবতীদের সচেতন করে থাকে। নেশাসক্ত যুবকদের অভিভাবকরা যাতে তাদের ছেলেমেয়েদের নেশামুক্ত কেন্দ্রে পাঠান তার জন্য উৎসাহিত করা হয়ে থাকে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, বাজেয়াপ্ত নেশাদ্রব্যগুলি নিয়মিতভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে। বর্তমানে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ৬টি স্নাইপার কুকুর নেশা বিরোধী অভিযানে ব্যবহার করা হচ্ছে এবং আরও কিছু স্নাইপার কুকুর কেনার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে। এই সব ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে নেশামুক্ত সুস্থ ত্রিপুরা গঠন করা যাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন।
0 মন্তব্যসমূহ