আগরতলা, ১৭ মার্চ: রাজ্যে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নারিকেল চাষের মাধ্যমে এর উৎপাদন বৃদ্ধি এবং কৃষকদের আর্থিকভাবে লাভবান করার লক্ষ্যকে সামনে রেখে শুক্রবার এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হলো আগরতলায়। প্রথমবারের মতো আয়োজিত উত্তর পূর্ব নারিকেল চাষী সম্মেলন শীর্ষক এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে। এতে উপস্থিত ছিলেন সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ, বিধায়ক মাইলাফ্রু মগ, ভারত সরকারের নারকেল উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিক ড. হনুমান্ত গাউডা, ত্রিপুরা সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, অধিকর্তা শরদিন্দু দাস, উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ বিভাগের অধিকর্তা ড. ফনি ভূষণ জমাতিয়া, আগরতলার কৃষি কলেজের অধ্যক্ষ ড. টি কে মৈত্র প্রমুখ।
এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে এক হাজারের বেশি নারকেল চাষী কর্মশালায় অংশ নিয়েছিলেন। ভারত সরকারের নারকেল উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে এবং ত্রিপুরা সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সহযোগিতায় এদিনের এই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী রতন লাল লাল বলেন, নারকেল গাছকে কল্পতরু বলা হয়ে থাকে। কারণ এই গাছের প্রতিটি অংশকে কাজে লাগিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব। তাই অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি রাজ্যের চাষীরাও যাতে নারিকেল চাষের মাধ্যমে আর্থিক ভাবে লাভবান হতে পারেন এইজন্য রাজ্য সরকার কিছু নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
পাশাপাশি তিনি আরো বলেন রাজ্যে মোট কৃষকের সংখ্যা ৪ লক্ষ ৭২ হাজার। সকল কৃষকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তাই রাজ্যে কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজ্যের নতুন নতুন কৃষি জমিকে সেচের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। রাজ্যের এক একজন কৃষকদের কৃষক সম্মান নিধি প্রকল্পে বছরের ৬হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা করা হচ্ছে। এই সহায়তার পরিমাণ আরো দুই হাজার টাকা বাড়িয়ে আট হাজার টাকা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান। নারিকেল চাষেও যাতে কৃষকরা এগিয়ে আছেন তার জন্য নতুন নতুন পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফলে আগামী দিনের রাজ্যে নারিকেলের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর ত্রিপুরা রাজ্য এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত বিশেষজ্ঞরা নারিকেল চাষের বিভিন্ন বাণিজ্যিক সুবিধা, নারকেল ও গাছ থেকে কি কি ধরনের পণ্য তৈরি করা সম্ভব। নারকেল চাষের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির বিষয়ে আলোচনা করেন। কৃষকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দেন বিশেষজ্ঞরা।
পাশাপাশি এদিন কাঁচা নারকেলের পাশাপাশি নারকেলের উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্য যেমন, তেল সাবান গুড়া দুধ, প্রসাধনী ক্রিম সংরক্ষিত ডাবের জল ইত্যাদির প্যাকেটজাত সামগ্রি। নারকেল গাছের বিভিন্ন অংশ দিয়ে গৃহস্থালী কাজের সামগ্রী ঘর সজ্জার সামগ্রীর একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
0 মন্তব্যসমূহ