আগরতলা, ২৮এপ্রিল : সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করে সরকারি আধিকারিকদের উপর। মানুষের অধিকার সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে সরকারি আধিকারিকদের। আজ প্রজ্ঞা ভবনে সিভিল সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড ২০২৩ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডাঃ) মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের কর্মচারিগণ খুবই দায়িত্বশীল। এই দায়িত্বশীল মনোভাবের জন্যই ইতিপূর্বে সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমুখী প্রকল্পগুলি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে। সবাই সম্মিলিতভাবে এক পরিবারের মতো কাজ করা উচিত। তবেই মানুষ সরকারের প্রকল্পগুলির সঠিক সুফল পাবেন। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, কর্মচারিদের এমন কাজ করে যেতে হবে যাতে মানুষ তাকে কাজের মাধ্যমে ভবিষ্যতেও মনে রাখে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এবছর সিভিল সার্ভিস দিবসের মূল ভাবনা হচ্ছে ‘বিকশিত ভারত”। বিষয়টি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। বিশ্বের কাছে ভারতের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উদ্যোগ নিয়েছেন। সেই লক্ষ্যেই রূপায়িত হচ্ছে বিভিন্ন কর্মসূচি। এ সমস্ত কর্মসূচি সমাজের প্রান্তিক মানুষর কাছে পৌঁছে দিয়ে দেশের জনগণের ক্ষমতায়নে সফল ভূমিকা নিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনে ত্রিপুরার ভবিষ্যৎ খুবই উজ্জ্বল। এই প্রসঙ্গে তিনি প্রতি ঘরে সুশাসন অভিযানের মতো জনকল্যাণমুখী প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন। যার মাধ্যমে সমাজের অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সরকারি সুফল পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমানে রাজ্যের উৎপাদিত কাঁঠাল, তেঁতুল, লেবু, আনারস বহির্রাজ্যে তথা বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। রাজ্যে বাঁশকে ভিত্তি করে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা হচ্ছে। রাজ্যের উৎপাদিত রাবার বিভিন্ন শিল্প ক্ষেত্রের দিশারী। আগামীতে রাজ্যের গ্যাসকে ভিত্তি করে শিল্প গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা আজ দেশের কোনো রাজ্য থেকে কোনো অংশে পিছিয়ে নেই। সবদিক দিয়ে ত্রিপুরা আজ এগিয়ে চলছে। এই সব কিছুই সম্ভব হওয়ার পিছনে সরকারি আধিকারিক ও কর্মচারিদের মুখ্য ভূমিকা রয়েছে। এরাই সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রকৃত কারিগর। তাই সবাই মিলে দায়িত্বশীল হয়ে কাজ করতে হবে। তবেই ‘এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ার' লক্ষ্য সার্থক হবে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যসচিব জে কে সিনহা বলেন, বিকাশের ধারা নিরন্তর এবং গতিশীল। এই গতিশীলতা বজায় রাখার দায়িত্ব সবার। একসাথে সবাই সরকারের সুফলগুলি সমাজের প্রান্তিক স্থানে পৌঁছে দিতে হবে। তিনি আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মানুষের অধিকার ও আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে কাজ করে যেতে হবে। মুখ্যসচিব সিভিল সার্ভিস দিবসের মূল উদ্দেশ্যের উপর আলোকপাত করেন। অনুষ্ঠানে এবছর সরকারি দপ্তর, জেলা, ব্লক, গ্যাজেটেড অফিসার, নন গ্যাজেটেড অফিসার বিভিন্ন বিভাগে সিভিল সার্ভিস পুরস্কার প্রাপকদের পুরস্কার দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা পুরস্কার প্রাপকদের হাতে শংসাপত্র ও স্মারক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশেষ সচিব ড. সন্দিপ আর রাঠোর। উপস্থিত ছিলেন প্রধান মুখ্য বন সংরক্ষক কে এস শেট্টি, প্রধান সচিব পুনিত আগরওয়াল, সচিব বি. এস. মিশ্র। অনুষ্ঠানে সচিব অভিষেক সিং ‘আনলকিং ত্রিপুরা 2030' শীর্ষক এক ভিডিও উপস্থাপন করেন এবং এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন দপ্তরের বিশেষ সচিব এ কে ভট্টাচার্য।
0 মন্তব্যসমূহ