আগরতলা, ১১এপ্রিল: ভারত সরকার দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সাথে প্রতিবেশি দেশগুলির অর্থনৈতিক করিডর গড়ে তুলতে চায়। আজ সন্ধ্যায় হোটেল পলো টাওয়ারে আয়োজিত তৃতীয় ইন্ডিয়া জাপান ইন্টেলেকচুয়াল কনক্লেভের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন (ডোনার) মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি। এই কনক্লেভে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রক, শিক্ষা দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী ড. রাজকুমার রঞ্জন সিং, রাজ্যের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা, বাংলাদেশ বিদেশ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং ভারতে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোসি সুজুকি প্রমুখ।
রাজ্য সরকারের সহায়তায় এবং ভারতের বিদেশ মন্ত্রক ও উত্তর পূর্বাঞ্চল পর্ষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই কনক্লেভের বিষয় হলো 'নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া, বাংলাদেশ এন্ড দি বে অব বেঙ্গল ইন দি ইন্দো পেসিফিক বিল্ডিং অন পার্টনারশিপ : দি ওয়ে ফরোয়ার্ড। জাপান, বাংলাদেশ এবং ভারতের অতিথিগণ সম্মিলিতভাবে প্রদীপ জ্বালিয়ে কনক্লেভের উদ্বোধন করেন। কনক্লেভে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী শ্রী রেড্ডি বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। এই অঞ্চলের উন্নয়নে খুব কাছের প্রতিবেশি দেশগুলির সহযোগিতা ভারত ও বাংলাদেশ দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির যোগাযোগ ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। সড়ক, রেল, বিমান পরিষেবা, অভ্যন্তরীণ জলপথ যোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রভূত উন্নতি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে প্রায় ৫ লক্ষ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। যেমন ২০১৪ সালে এই অঞ্চলে বিমানবন্দর ছিল ৯টি। বর্তমানে এই অঞ্চলের রাজাগুলিতে ১৭টি বিমানবন্দর রয়েছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি রূপায়ণের কাজ করছে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, আজ তিনি আগরতলা আখাউড়া রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম এবং মংলা সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের ফলে এই অঞ্চলের সাথে প্রতিবেশি দেশগুলির যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সম্প্রসারিত হবে। শ্রী রেড্ডি এই কনক্লেভের সাফল্য কামনা করেন।
আলোচনায় কেন্দ্রীয় পরারাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ড. রাজকুমার রঞ্জন সিং বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের সম্ভাবনায় এবং উন্নতিতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে। এই অঞ্চলের দেশগুলির সঙ্গে আর্থিক, সাংস্কৃতিক এবং কৌশলগত সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি রূপায়ণ করা হচ্ছে। তিনি এই কনক্লেভের সাফল্য কামনা করেন। আলোচনা করতে গিয়ে শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখন দুই দেশের সম্পর্কের স্বর্ণযুগ চলছে। তিনি রাজ্যে পর্যটন, ব্যবসা বাণিজ্যের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন অদূর ভবিষ্যতে ত্রিপুরা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার হয়ে উঠবে। আলোচনায় অংশ নেন ভারতে জাপানের রাষ্ট্রদূত হিরোসি সুজুকি, বাংলাদেশ বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। অতিথিগণ এসেসিং কানেক্টিভিটি বিটুইন নর্থ ইস্ট ইন্ডিয়া অ্যান্ড বাংলাদেশ টুয়ার্ডস এ প্রসপারাস বে অব বেঙ্গল রিজিয়ন' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন এশিয়ান কনফ্লুয়েন্সের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সব্যসাচী দত্ত।
0 মন্তব্যসমূহ