আগরতলা, ২০এপ্রিল: খুব দ্রুত রাজ্যের প্রথম হর্টিকালচারাল ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এর জন্য সহসাই ডিপিআর তৈরী করা হবে। রাজ্য সরকারের কৃষি ও কৃষক কল্যান দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ বৃহস্পতিবার একথা জানিয়েছে।
রাজধানী আগরতলার নাগিছড়া এলাকায় রয়েছে কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অন্তর্গত উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ ডিরেক্টরেটের উদ্যান ও বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্র। রতন লাল নাথ কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো এই গবেষণা কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। প্রথমে তিনি এই গবেষণা কেন্দ্রের পাম তেল বাগানটি পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি নারকেল বাগান পরিদর্শন করে ও বাগানের মধ্যে উন্নত জাতের একটি নারিকেলের চারা রোপন করেন। এরপর তিনি একে একে গবেষণা কেন্দ্রের সবজি চাষের প্লট গুলি পরিদর্শন করেন। গ্রীন হাউজের মধ্যে যে সকল সবজি চাষ হচ্ছে এগুলো ঘুরে দেখেন। এই প্লটগুলোতে নানা জাতের সবজি চাষ হচ্ছে, বিশেষ করে সফল ভাবে পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে দেখে তিনি ব্যাপক প্রশংসা করেন।
এরপর মুসাম্বি লেবুর প্লট, পেয়ারা, আম, ড্রাগন ফল চাষের প্লট ঘুরে দেখেন। এই প্লটগুলোতে ১৫জাতের আম চাষ হচ্ছে। সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে দেখে খুশি ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি তিনি গবেষণা কেন্দ্রের বিভিন্ন ধরনের ফলের চারা উৎপাদনের জায়গাটিও ঘুরে দেখেন।এরপর তিনি টিস্যু কালচার ল্যাব, মাশরুম ল্যাব এগুলো ঘুরে দেখেন। এখানে কর্মরত আধিকারিকরা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এগুলো দেখান।
পরিদর্শন কালে মন্ত্রী বিভিন্ন প্লটে কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করেন তাদের কোন ধরনের সমস্যা রয়েছেন কিনা। দপ্তরের কাছে তাদের কোন বিশেষ চাহিদা রয়েছে কিনা।
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে এদিনের এই পরিদর্শনের কথা বলতে গিয়ে জানান, ১৯৮৩সালে এই গবেষণা কেন্দ্রে প্রথম পাম তেলের গাছ লাগানো হয়েছিল। কিন্তু তখন রাজ্যে কোন পাম তেল প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়নি। যার ফলে এই গাছগুলোতে ফল উৎপাদন হলেও তেল প্রক্রিয়াকরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই পুরাতন এই বাগানটিকে হর্টিকালচারাল ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা হবে। বিদেশ এবং দেশের অন্যান্য জায়গাতে এখন এ ধরনের বহু পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এগুলিকে ঘিরে মানুষেরও আগ্রহ রয়েছে। এর ফলে এই জায়গাটি একদিকে যেমন কাজে লাগানো সম্ভব হবে তেমনি বহু লোকের কর্মসংস্থান হবে। শহরের খুব কাছে হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষ খুব সহজেই ঘুরতে যেতে পারবেন।
পাশাপাশি তিনি আরো বলেন রাজ্যের বর্তমান সরকার কৃষিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এই রাজ্যে চাষের জমি অত্যন্ত কম হওয়ার পরও ফসল উৎপাদনশীলতার দিক থেকে দেশের অন্যান্য অনেক বড় রাজ্যকে পিছনে ফেলে ত্রিপুরা এগিয়ে রয়েছে। আরো নতুন নতুন জাতের ফসল সবজি সহ অন্যান্য কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন কি করে বৃদ্ধি করা যায় এদিকে কাজ করছে বর্তমান সরকার।
এদিন মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, অধিকর্তা শরদিন্দু দাস, উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ ডিরেক্টরেটের অধিকর্তা ড. ফনি ভূষণ জমাতিয়া, উদ্যান ও বাগিচা ফসল গবেষণা কেন্দ্র'র প্রধান ডেপুটি ডিরেক্টর ড. রাজীব ঘোষ, কৃষি কলেজের প্রিন্সিপাল ড. টি কে মৈত্র, আই সি এ আর-র ত্রিপুরা সেন্টারের সহঅধিকর্তা ড. অনুপ দাসসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
পাশাপাশি এদিন এই কেন্দ্রে মন্ত্রী গোলমরিচ চাষের উপর একদিনের এক প্রশিক্ষণের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এতে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আগ্রহী চাষী এবং কৃষি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ ডিরেক্টরেট, ভারত সরকারের মসলা বোর্ড'র রাজ্য অফিস এবং ভারত সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
0 মন্তব্যসমূহ