Advertisement

Responsive Advertisement

২৫ বছর ধরে বামেরা নির্যাতন চালিয়ে এখন নির্বাচন উত্তর সন্ত্রাসের কথা বলছে : রাজীব ভট্টাচার্য

আগরতলা, ২১এপ্রিল : ১৯৮৮সাল থেকে ১৯৯৩সাল পর্যন্ত রাজ্যে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট সরকার ক্ষমতায় ছিল, এই সময় রাজ্যের যে সকল ঘটনা বলি সংঘটিত হয় এগুলির কথা ব্যাপক ভাবে প্রচার করে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসে এবং ২৫ বছর ধরে রাজ্য পরিচালনা করে। কিন্তু বর্তমানে বামেদের এমন বেহাল অবস্থা হয়েছে যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে বিজেপিকে ক্ষমতারচ্যুত করার স্বপ্ন দেখে ছিল। সিমনা থেকে শুরু করে বীরচন্দ্র মনু সব জায়গাতেই হত্যার ঘটনা ঘটেছিল। বামফ্রন্ট এগুলো ভুলে গেলেও সাধারণ মানুষের মনে রয়েছে এই ঘটনাগুলি। সেই সময়ের ঘটনাগুলিকে ভুলে বামফ্রন্ট কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেছে। একই ভাবে ১৯৯৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রাজ্যে কত অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছে আর এখন বামেরা নির্বাচন তো সন্ত্রাসের অভিযোগ করছে। এরমধ্যে কয়েকটি ঘটনা হলো ১৯৯৪সালে মোহনপুরের সুজিত গোস্বামী খুনের ঘটনা, মনু বাজারের কংগ্রেস নেতা দীপক ঘোষের খুনের ঘটনা, অনিল দলপতি, হারাধন দেবনাথ, মলিন দেববর্মা, বামফ্রন্টের সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিমল সিনহা, বিধায়ক মধুসূদন সাহা, মহকুমা শাসক শুকরাম দেববর্মা, খগেন্দ্র দেবনাথ, দীপঙ্কর নাথ শর্মা, রাজ্যে বিজেপির প্রথম শহীদ শ্যামহরি শর্মা, যুব কংগ্রেসের দেবল দত্ত, নীলিমা দেববর্মা এদের সকলের হত্যার ঘটনা ঘটেছে বামফ্রন্টের আমলে। এতসব ঘটনার পর বামফ্রন্টের নেতারা বর্তমান সময়ের নির্বাচন উত্তর সন্ত্রাসের কথা বলছেন। কিন্তু তাদের লজ্জা থাকা দরকার, এই বিষয়গুলো নিয়ে তাদের কথা বলার অধিকার নেই। ২০১৮ সালের আগে রাজ্যে এগারো জন বিজেপি কার্যকর্তাদেরকে খুন করা হয়েছে। শুধু খুনের ঘটনাই ঘটেনি তৈদু থেকে শুরু করে জারুল বাচাইসহ রাজ্যের একাধিক জায়গায় গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাগুলির জবাব জানতে চায় রাজ্যের মানুষ। তবে এসব ঘটনার জবাব বামেরা দিতে পারবেন না বলেও জানান রাজীব ভট্টাচার্য। বামেদের আমার নির্বাচন উত্তর সন্ত্রাসের জবাব দিতে গিয়ে তিনি বাম আমলে রাজ্যে সংঘটিত হওয়া বিভিন্ন ধরনের অপরাধের তথ্য তিনি বিস্তারিত তুলে ধরেন উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে। প্রদেশ সভাপতি তার দাবির সমর্থনে এই ঘটনাগুলির প্রকাশির সংবাদ পত্রের কাটিং উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমের সামনে তুলে ধরেন। পাশাপাশি তিনি আরো বলেন নির্বাচনের বুধ গ্রহনের পর থেকে ফল প্রকাশের আগে পর্যন্ত খোয়াই বিশালগড় নানা জায়গায় সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছিল বামেরা। একদিকে যেমন বিভিন্ন জায়গায় দলের কার্যকর তাদের উপর আক্রমণের ঘটনার ঘটিয়েছে সেই সঙ্গে তাদের বাড়িঘর রাবার বাগানে অগ্নিসংযোগ হামলার ঘটনা চালিয়ে গিয়েছে। তারা ক্ষমতায় আসছে এই বলে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হামলা হুজ্জতির ঘটনা করেছে। এমনকি বড়জলা এলাকার এক বিজেপি কার্যকর্তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ছিল। পরবর্তী সময়ে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। প্রদেশ সভাপতি হিসেবে তিনি এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাক্তার মানিক সাহা পৃথকভাবে রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে আবেদন জানিয়েছেন যাতে একটিও নির্বাচন উত্তর সন্ত্রাসের ঘটনা না ঘটে। যার ফলশ্রুতিতে রাজ্যে এবারের বিধানসভার নির্বাচনের পর কোন ধরনের আক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। বিজেপি কার্যকর তারা অনেক সংযতছিলেন। অথচ বাম আশ্রিত একাংশ সমাজদ্রোহী রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বিজেপি কর্মীদের এবং তাদের পরিবার পরিজনের ভয়-ভীতি দেখিয়েছে। বিজেপি কর্মী সমর্থকরা এই ধরনের সন্ত্রাসের ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে এমন কোন প্রমান থাকে তবে তৎক্ষনাথ দলের তরফে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
 তিনি আরো বলেন বামেরা জনজাতি দরদের কথা বলে অথচ তারা জনজাতিদের কল্যাণে কোন কাজ করেনি। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর মহারাজা বীর বিক্রম এর নামে আগরতলা বিমান বন্দরের নামকরণ করেছে। মহারাজা বীর বিক্রমের জন্মদিনকে সরকারি ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে ও ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। একইভাবে গত কিছুদিন আগে আগরতলার জিরো পয়েন্টের নামকরণ মহারাজার নামে করা হয়েছে। স্ব-শাসিত জেলা পরিষদের আসন সংখ্যা ২৮ টি এখানে যাতে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা যায় তার জন্য বিজেপি সরকার বিধানসভায় বিষয়টি পাস করে পার্লামেন্টে পাঠিয়েছে আসন বৃদ্ধির জন্য। জনজাতি ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে ১৮টি একলব্য বিদ্যালয় স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এরমধ্যে ১০ টি বিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বাকিগুলির নির্মাণ কাজ চলছে। লেম্বুছড়া এলাকায় জনজাতি বিষয়ে গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে। জনজাতি অংশের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা সুবিধার জন্য ১ লক্ষ টাকার বেশি বৃত্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জনজাতি সমাজপতিদের প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রাজ্যে বাম সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় তাদের বন্ধু সরকার কেন্দ্রে ছিল তারপরও একজনও জনজাতীয় অংশের মানুষদেরকে পদ্ম সম্মানে ভূষিত করা হয়নি। অথচ বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইতিমধ্যে পাঁচজন জনজাতি গুণীজনকে পদ্মশ্রী সম্মান দেওয়া হয়েছে। বিজেপি সরকার সমাজের সকল অংশের মানুষকে পাশে নিয়ে শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গঠন করতে চায় বলেও জানান তিনি। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে সভাপতির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কমিটির মুখ্য মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তী এবং নেত্রী অস্মিতা বণিক। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ