Advertisement

Responsive Advertisement

রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে : মুখ্যমন্ত্রী

 আগরতলা, ৫ মে ২০২৩: আগরতলা সরকারি কেডিক্যাল কলেজটি দেশের যে কোনো মেডিক্যাল কলেজের তুলনায় কোনও অংশে কম নয়। এই কলেজের সুনাম আরও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে প্রফেসর, চিকিৎসক সহ সকলস্তরের কর্মীদের আন্তরিকভাবে কর্তব্য পালন করতে হবে। আজ আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজের সভাকক্ষে আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও জিবিপি হাসপাতালের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে আয়োজিত পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা মানিক সাহা একথা বলেন। সভায় আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও জিবিপি হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের অগ্রগতি ও সাফল্য পর্যালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও জিবিপি হাসপাতাল হচ্ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রের প্রধান মুখ। জিবিপি হাসপাতালসহ রাজ্যের বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। জিবিপি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো ধরণের সমস্যা দেখা দিলে তা দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।
পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতি হওয়ায় রেফারেল রোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। যা রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে একটা ভালো দিক। চিকিৎসক সহ সকলস্তরের স্বাস্থ্যকর্মীদের আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী সভায় উল্লেখ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎকদের সব সময় সেবার মনোভাব নিয়ে রোগীদের স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান করা উচিত। হাসপাতালে এসে কোনো রোগীকে যাতে হয়রানির শিকার না হতে হয় সে বিষয়টিও চিকিৎসকদের গুরুত্ব সহ দেখতে হবে। কারণ মানুষ চিকিৎসকদের একটা বিশেষ সম্মানের চোখে দেখে। চিকিৎসকরা এমন এক পেশার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন যারা মানুষের জন্ম ও মৃত্যুর সার্টিফিকেট দিয়ে থাকেন।
পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো ধরণের গাফিলতি সরকার বরদাস্ত করবেনা। এক্সরে, সিটিস্ক্যান সহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট যাতে রোগীরা দ্রুত পেতে পারে সে বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসা পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই জিবিপি হাসপাতালের প্রতিটি ওয়ার্ডকে নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ধরণের অবহেলা করা কাম্য নয়। পাশাপাশি জিবিপি হাসপাতাল চত্বরে প্রয়োজনীয় সুরক্ষার বিষয়টিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে গুরুত্ব সহ দেখতে হবে। সভায় মুখ্যমন্ত্রী জিবিপি হাসপাতালের মেডিসিনের বিভিন্ন বিভাগকে একই ছাদের নীচে নিয়ে আসার পরিকল্পনা গ্রহণ করার জন্যও স্বাস্থ্য সচিবকে নির্দেশ দেন।
পর্যালোচনা সভায় আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা সুব্রত বৈদ্য জানান, স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে রাজ্যবাসীর প্রত্যাশা পূরণে ২০০৫ সালে আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপন করা হয়। বর্তমানে এই মেডিক্যাল কলেজে বিভিন্ন বিভাগে পিজি আসন রয়েছে ৭৯টি। এছাড়া এমবিবিএস আসন রয়েছে ১২৫টি। এরমধ্যে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীদের জন্য জন্য আসন রয়েছে ৯৬টি, কেন্দ্রীয়স্তরের ছাত্রছাত্রীদের জন্য আসন রয়েছে ১৯টি এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে ১০টি আসন। তিনি জানান, আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে এখন পর্যন্ত ১৩৫৩ জন ছাত্রছাত্রী পাশ করেছেন। এরমধ্যে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা হচ্ছে ১১৫৫ জন। পিজি কোর্সে এখন পর্যন্ত ২৪৩ জন এই মেডিক্যাল কলেজ থেকে পাশ করেছেন। এর মধ্যে রাজ্যের ছাত্রছাত্রী রয়েছেন ১৬৮ জন। সভায় অধ্যক্ষ জানান, জিবিপি হাসপাতালে বিভিন্ন বিভাগে বর্তমানে মোট ৭৩৩ টি শয্যা রয়েছে। এছাড়া আইসিইউ শয্যা রয়েছে ১৫১টি। হাসপাতালে আসা রোগীদের এক্স-রে, সিটিস্ক্যান, এম আর আই সহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষার পরিষেবাও গুরুত্ব সহ করা হয়ে থাকে। পর্যালোচনা সভায় স্বাস্থ্য সচিব ডা: দেবাশিষ বসু, ত্রিপুরা হেলথ সার্ভিসের অধিকর্তা ডা: শুভাশিস দেববর্মা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা প্রফেসর ডা এইচ পি শর্মা, মুখ্যমন্ত্রীর ওএসডি পরমানন্দ সরকার ব্যানার্জী সহ আগরতলা সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অনান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ