আগরতলা, ২৬ মে ২০২৩: ত্রিপুরা রাজ্যের ক্যুইন আনারস দেশ-বিদেশে ইতিমধ্যেই সুস্বাদু ফল হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। জিআই ট্যাগ ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়ায় রাজ্যের আনারস চাষীরা লাভবান হবেন। শুক্রবার আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে ডোনার মন্ত্রকের অধীনস্থ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আঞ্চলিক কৃষি বিপনন নিগম লিমিটেড অর্থাৎ ন্যারামে আয়োজিত ক্যুইন আনারসের জিআই ট্যাগিং ব্যবহারের অনুমোদন প্রদান অনুষ্ঠানের সূচনা করে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতনলাল নাথ একথা বলেন। অনুষ্ঠানে ত্রিপুরার ৩০০ জন ক্যুইন আনারস চাষীকে ন্যারামেক প্রসেসড সার্টিফিকেশনের জিআই ট্যাগিং ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, সুস্বাদু কাইন আনারসের মত রাজ্যের গ্রামীণ এলাকায় উৎপাদিত কাজুবাদাম, সবরিকলা, বিন্নি ধান, জম্পুইহিলের কমলা, কাঠাল, সুগন্ধি লেবু প্রভৃতি পণ্যকে জিআই ট্যাগে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কৃষি বিভাগকে উদ্যোগ নিতে হবে। কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ আজ প্রজ্ঞাভবনে "জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন' শীর্ষক এক আলোচনাচক্রে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আঞ্চলিক কৃষি বিপনন কর্পোরেশন লিমিটেড তথা ন্যারামেক এবং কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর যৌথভাবে এই আলোচনাচক্রের আয়োজন করে।
আলোচনাচক্রের উদ্বোধন করে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, ক্যুইন আনারস ইতিমধ্যেই দেশ বিদেশে সুস্বাদু ফল হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ইতিমধ্যে ন্যারামেক ১৩ হাজার ৫০০ কিলোগ্রাম ক্যুইন আনারস বিভিন্ন রাজ্যে পাঠিয়েছে। উত্তরাখন্ড রাজ্যে আনারস পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, জিআই ট্যাগে বিভিন্ন পণ্য অন্তর্ভূক্ত হলে কৃষক ও ফলচাষীরা সমগ্র বিশ্বে ব্যবসা করার সুযোগ পাবেন। এতে তারা লাভবান হবেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার জন্য নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি ক্ষমতায় আসার আগে ২০১৩ সালে দেশে কৃষিক্ষেত্রে মোট বাজেট ছিল ২৩ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে এই বাজেট হয়েছে ১ লক্ষ ৩২ হাজার কোটি টাকা। কৃষকদের উৎপাদিত ফসল বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে দেশে ১,৬৪০টি কিষাণ রেল চালু করা হয়েছে। তিনি বলেন, হাইটেক পদ্ধতিতে উৎপাদন বৃদ্ধি ও উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষিক্ষেত্রে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের জন্য দেশে প্রথমবারের মতো ড্রোন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। আগে দেশে কৃষক উৎপাদক সংগঠক (এফপিও) ছিল না। প্রধানমন্ত্রী মোট ১০ হাজার এফপিও গঠনের লক্ষ্যমাত্রা নেন। এখন পর্যন্ত দেশে ৫০০০টি এফপিও গঠিত হয়েছে।
আলোচনাচক্রে বিশিষ্ট জিআই বিশেষজ্ঞ পদ্মশ্রী ড. রজনীকান্ত দ্বিবেদী জিআই ট্যাগ কেন প্রয়োজন এটা হলে কৃষকদের কী লাভ হবে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি ক্যুইন আনারসের গুণমান নিয়েও প্রশংসা করেন। আলোচনাচক্রে বক্তব্য রাখেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ন্যারামেকের এমডি রাজীব অশোক। তিনি বলেন, জিআই ট্যাগিংয়ের ফলে ত্রিপুরার ক্যুইন আনারসের অনন্য গুণমান ও খ্যাতির বিশেষ স্বীকৃতি আসবে। কিভাবে আনারস চাষীরা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে এই ট্যাগিং ব্যবহার করে উপার্জন ও জীবিকার সুযোগ বৃদ্ধি করতে পারেন তা নিয়েও আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা শরদিন্দু দাস, উদ্যান পালন ও ভূমি সংরক্ষণ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. ফনীভূষণ জমাতিয়া, নাবার্ড-এর জেনারেল ম্যানেজার লোকেশ দাস প্রমুখ।
0 মন্তব্যসমূহ