আগরতলা, ২৭ মে : রাষ্ট্রায়ত্ত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধানকারী সংস্থা ওএনজিসি এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন অফ ত্রিপুরা-এর “প্রথম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন-২০২৩” উপলক্ষে শনিবার স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানী আগরতলার বাধারঘাটের ওএনজিসি'র ত্রিপুরা এসেট কমপ্লেক্সের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এই শিবিরে উপস্থিত ছিলেন সরকারের পরিবহন,পর্যটন, খাদ্য জনসংভরন ও ক্রেতা স্বার্থ বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, বিশিষ্ট সমাজসেবী রাজীব ভট্টাচার্যী, বাধারঘাট বিধানসভার বিধায়িকা মীণা রানী সরকার, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, ওএনজিসি-র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এসেট ম্যানাজার তরুণ মালিক, ওএনজিসি’র জিজিএম/এসেট ম্যানাজার কৃষ্ণা কুমার, ওএনজিসি এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন অফ ত্রিপুরা’র সভাপতি নিতাই দেবনাথ, সাধারণ সম্পাদক বীরচন্দ্র দেববর্মা প্রমুখ।
শিবিরের উদ্বোধনের পর বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, সকলেই জানি, রক্তদান জীবন বাঁচায়। মানুষের জীবন বাঁচানো মনুষ্যত্বের একটি বড় দিক। তাই যাদের রক্তের প্রয়োজন তারা যাতে সময়মত রক্ত পেতে পারেন তা সুনিশ্চিত করতে রক্তদানে মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। কোনো মানুষের বিপদে তার পাশে দাঁড়ানো ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মধ্য দিয়ে একজন আদর্শ মানুষের পরিচয় পাওয়া যায়৷ একবিন্দু রক্তের জন্য জীবনযুদ্ধে পরাজিত হচ্ছে কত মানুষ, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়৷ ব্লাড ব্যাঙ্ক গুলিতে রক্তের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো, আমাদের সকলের দায়িত্ব এবং নৈতিক কর্তব্য। মানবিক কার্যকলাপে অনুপ্রেরণা, উৎসাহ এবং উদ্যোগী হওয়া আমাদের মূল লক্ষ্য হতে হবে। এর মাধ্যমে আগামী দিনে মানুষের দূর্ভোগ অনেক কম করা যাবে। স্বেচ্ছায় রক্তদান করার মধ্য দিয়ে অনেক মুমূর্ষু মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারা যায়৷ আরও বলেন, আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে অনেক অসাধ্যসাধন ঘটলেও কৃত্রিম উপায়ে রক্ত আবিষ্কার এখনও সম্ভব হয়নি৷ ফলে যে সমস্ত রোগীর কোনো কারণে অতিরিক্ত রক্তের প্রয়োজন হয়, তখন সুস্থ মানুষের শরীর থেকেই সংগ্রহ করে দিতে হয়৷ তাই রক্তদান একটি মহৎ দান বলে বিবেচ্য হয় ৷ সভ্যতার পারস্পরিক নির্ভরশীলতার কর্তব্যমূলক কর্মসূচিগুলির মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে মহৎ এবং পবিত্র কাজ হলো মানুষের জীবন বাঁচানো৷ কিন্তু প্রত্যক্ষ ভাবে আমাদের পক্ষে কোন মুমূর্ষু মানুষের জীবন রক্ষা করা সবসময় সম্ভব হয়ে ওঠে না৷ তাই এক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজটি হতে পারে রক্তদান৷ মন্ত্রী তার বক্তব্যে সকল ছাত্র-যুবা, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, সরকারি কর্মচারী, বেসরকারী সংগঠনসহ সাধারণ মানুষের কাছে রক্তদানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এই রক্তদান শিবিরে যারা রক্তদান করেছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সকলের সুস্বাস্থ্য ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা করেন।
সেই সঙ্গে এদিন ওএনজিসি এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন অফ ত্রিপুরা এর “প্রথম দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন-২০২৩” এর সার্বিক সাফল্য কামনা করে বলেন, সংগঠনের সকল সদস্য-সদস্যাদের সাংগঠনিক জীবনে এই সম্মেলন শুধুই মিলন মেলাই নয়, আড়ম্বরপূর্ণ উদযাপনও নয়, সম্মেলনের এই মহতী মঞ্চ আপনাদের সংগঠনের সাথে যুক্ত সকল সদস্য-সদস্যাদের কাজের সর্বোচ্চ মঞ্চ। বর্তমান পরিস্থিতির পর্যালোচনার মাধ্যমে, নৈতিক অবস্থান স্থির রেখে সংগঠনের স্বার্থে পরিশ্রমের মাধ্যমে লক্ষ্যে পৌঁছানোর অনুশীলনের, প্রস্তুতির মঞ্চ। নিজেদের আত্মসমালোচনার মধ্যে দিয়ে এখানে তারা যেমন নানা ধরণের সঙ্কীর্ণতার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার সুযোগ পাবেন, তেমনি তাদের সংগঠনের ত্রুটি, বিচ্যুতি যদি কিছু থাকে তা পরিহার করার বিষয়েও আন্তরিকতার সাথে সচেষ্ট হতে পারবেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
0 মন্তব্যসমূহ