আগরতলা, ৪ মে ২০২৩: মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত চিকিৎসক ও চিকিৎসা পরিষেবার কাজে যুক্ত কর্মীদের একটা ভূমিকা থাকে। তাই সমাজের প্রত্যেকটি মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আজ আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে মা ও শিশুর হোমিওপ্যাথিক স্বাস্থা পরিষেবা নিয়ে রাজ্যভিত্তিক ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচির উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা মানিক সাহা একথা বলেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। রাজ্যের জনগণ এখন হাসপাতালগুলিতে একই ছাদের তলায় হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদিক, অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা পরিষেবা নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তিনি বলেন, চিকিৎসক বা চিকিৎসা পরিষেবার কাজে যুক্ত কর্মীদের মুখ্য উদ্দেশ্য থাকা দরকার মানুষকে সঠিক চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া। চিকিৎসকদের উচিৎ যে যেখানেই থাকুন তার দায়িত্ব সততার সঙ্গে পালন করা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, চিকিৎসকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও তাদের জীবনশৈলীতে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় রোগব্যাধিও কম আসে। উল্লেখ্য, এই ওরিয়েন্টেশন কর্মসূচিতে আয়ুষ কমিউনিটি হেলথ অফিসারগণ অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রে সরকার গঠন হওয়ার পর আয়ুষের প্রচার প্রসারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের বর্তমান সরকারও আয়ুষের প্রসারে খুবই আন্তরিক। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়গুলি একসময় ভারতে ছিল। ভারতের চিকিৎসা সারা বিশ্বে সমাদৃত ছিল। পৃথিবীর নানা প্রান্তের ছাত্রছাত্রীরা ভারতীয় চিকিৎসা শাস্ত্রের জ্ঞান আহরণের জন্য আমাদের দেশে আসত। মাঝখানে এই গর্বিত অধ্যায়ে ভাটার টান পড়ে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রে নতুন সরকার গঠন হওয়ার পর সেই গর্বিত অধ্যায় পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যেও প্রতিটি ক্ষেত্রে একটা সময় অস্থিরতার পরিবেশ কায়েম ছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার সেই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের চেষ্টা চালাচ্ছে। রাজ্যে এখন প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বচ্ছ পরিবেশ বজায় রয়েছে। রাজ্য সরকার স্বাস্থ্যের প্রতিটি বিভাগের পাশাপাশি হোমিওপ্যাথিকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করে চলছে। তিনি বলেন, আগামী দিনে রাজ্যে একটি হোমিওপ্যাথিক কলেজ গড়ারও পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
অনুষ্ঠানে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী ও আশাকর্মীদের সংবর্ধনা জানানো হয়। তাছাড়াও অনুষ্ঠানে রাজ্যে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পরিষেবায় কৃতিত্বের জন্য ৫ জন অবসরপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসককে সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা মানিক সাহা অনুষ্ঠানে তাদের সম্মানিত করেন। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী থ্যালাসেমিয়া রোগের সচেতনতামূলক একটি পুস্তিকার আবরণ উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সচিব ডা. দেবাশিস বসু ও স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. শুভাশিস দেববর্মা। উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা প্রফেসর ডা এইচ পি শর্মা। স্বাগত বক্তবা রাখেন জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের মিশন অধিকর্তা শুভাশিস দাস। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধ দপ্তরের অধিকর্তা ডা. সুপ্রিয় মল্লিক।
0 মন্তব্যসমূহ