আগরতলা, ২৯ মে: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দূরদর্শী নেতৃত্বে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার দুর্নীতির কলঙ্কমুক্ত শাসনের এক অসাধারণ যুগের সূচনা করেছে। যে কেলেঙ্কারি এবং দুর্নীতির দিনগুলি যা পূর্ববর্তী সরকারকে জর্জরিত করেছিল সেটা এখন অতীত হয়ে পড়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রী মোদির সরকার স্বচ্ছতার একটা প্রকৃষ্ট উদাহরণ। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে সোমবার আগরতলায় একটি বেসরকারি হোটেলে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৯ বছর সময়কাল সেবা, সুশাসন, গরীব কল্যাণে অতিবাহিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সবসময় নিজেকে একজন সেবক মনে করেন এবং এর জন্য তিনি সর্বদা গরীব মানুষ এবং সরকারের জন্য কাজ করে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। টাকাও ব্যয় হয় গরীব মানুষের কল্যাণের জন্য। প্রধানমন্ত্রী মোদি দুর্নীতিমুক্ত সরকার গড়ে তুলতে কাজ করছেন। পূর্বতন সরকার মানেই দুর্নীতি আর কেলেঙ্কারি। স্বচ্ছ সরকারের আরেক নাম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার। প্রধানমন্ত্রীর কারণে দেশের মানুষ টিকা দেওয়ার সময় ডবল ভ্যাকসিন পেয়েছেন এবং তাঁর কারণেই আমরা বেঁচে আছি। জনতা কারফিউ থেকে শুরু করে, প্রধানমন্ত্রী মোদি কোভিড থেকে মানুষকে বাঁচাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।
সাধারণ মানুষকে পাকা বাড়ি দেওয়া প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে গরীবদের আবাসন নির্মাণে এমন বিপ্লব আগে কখনও দেখা যায়নি। সারা দেশে ৩ কোটিরও বেশি বাড়ি দেওয়া হয়েছে এবং ত্রিপুরায় ২ লাখেরও বেশি বাড়ি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকার ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য আরও ১ লক্ষ পাকা বাড়ি মঞ্জুর করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মাটির চুলোয় রান্না করা মা বোনেদের কথা চিন্তা করে প্রধানমন্ত্রী মোদি ২ লক্ষ ৮৩ হাজার পরিবারকে গ্যাস সংযোগের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
কোভিড মহামারির সময় ৭ লাখেরও বেশি সাধারণ মানুষ বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী পেয়েছেন। কৃষকদের কল্যাণে এবং কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করতে কেন্দ্রীয় সরকার কৃষিজাত দ্রব্যের দাম বাড়ায়নি। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সাহায্য করার জন্য তাদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা ও সহায়তা প্রদান করার বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে ভারত ক্রমশ উন্নয়নের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরো জানান, তাঁর দিল্লি সফরের সময় কেন্দ্রীয় বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া তাঁকে জানিয়েছেন আগামী জুলাইয়ের মধ্যে আগরতলা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা শুরু করা হবে।
কোভিডের সময়ও অর্থনীতির বৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার জন্য কাজ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যে জাতীয় মহাসড়কের সংখ্যাও বেড়েছে। যেখানে রাজ্যে শুধু একটি লাইফলাইন ছিল। প্রধানমন্ত্রী মোদি ছাড়া এই উন্নয়ন কোনভাবেই সম্ভব নয় এবং কেউ তা ভাবতেও পারে না। কারণ তিনি সবসময় জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। আগে রাজ্যে কেউ জলপথের কথা ভাবতে পারে নি। বর্তমানে জলপথে যোগাযোগের কথাও ভাবা হচ্ছে। জলপথ তৈরি হচ্ছে বর্তমানে। ২০১৪ সালের আগে দেশে বিশ্ব মানের কোন ট্রেন ছিল না। কিন্তু শেষ ৯ বছরে দেশে বিশ্ব মানের ট্রেন চালু হয়েছে ৯ টি। ত্রিপুরা রাজ্যেও বর্তমানে বিভিন্ন রুটে ১২ থেকে ১৩টি এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, ২০১৪ সালে দেশে মেডিকেল কলেজ ছিল ৬৪১টি। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নরেন্দ্র মোদির ৯ বছরে ৭০০টি নতুন মেডিকেল কলেজ হয়েছে। ত্রিপুরা রাজ্যে এইমস-এর অনুকরণে মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের প্রয়াস চলছে। ডেন্টাল কলেজ স্থাপন হয়ে গেছে। গত ৯ বছরে দেশে ৩৯০ টি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর এক্ট ইস্ট নীতির কারণে ত্রিপুরা সহ সমস্ত উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলি উপকৃত হয়েছে। আমাদের রাজ্যও হীরা মডেল উপহার পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সবসময় বলেছেন যে উত্তর-পূর্বের উন্নয়ন ছাড়া ভারতের উন্নয়ন সম্ভব নয়। এর পাশাপাশি আরো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে মত প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মত বিনিময়ের সময়ে উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার।
0 মন্তব্যসমূহ