Advertisement

Responsive Advertisement

কবি প্রণাম অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর গলায় কবিগুরুর ইংরেজি কবিতা, মুগ্ধ হলেন দর্শক শ্রোতারা

আগরতলা, ৯ মে: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে রবীন্দ্র কাননে প্রভাতী কবি প্রণাম অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে মনে পড়ে যাচ্ছে ৭০ দশকের কথা। এরকমই একদিনে রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের আম্রকুঞ্জে পাঠ করেছিলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ইংরেজি কবিতা । আজ আবারো পাঠ করতে ইচ্ছে করছে। সোমবার আগরতলার রবীন্দ্র কাননে তথ্য ও সাংস্কৃতি দপ্তর আয়োজিত প্রভাতী কবি প্রণাম অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। তিনি এদিন পাঠ করেন "চিত্ত যেথা ভয় শূণ্য" এর ইংরেজি অনুবাদ। মুহূর্তেই করতালিতে মুখরিত হয় চারদিক।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য, দর্শন, চিন্তাভাবনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে। যখনই কোন সংকট দেখা দেয় তখন তাঁর চিন্তা চেতনার ভাবধারা আমাদের সেই সংকট থেকে উত্তরণের পথ দেখিয়েছে। তাঁর সৃষ্ট ছোট গল্প, নাটক, কবিতা, সঙ্গীত, প্রবন্ধ সবক্ষেত্রেই আমাদের চলার পথে মার্গদর্শন দেখিয়েছে। রাজন্য আমল থেকে ত্রিপুরার সাথে গভীর সম্পর্ক ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। মহারাজা বীরচন্দ্র মানিক্য থেকে শুরু করে মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য পর্যন্ত চারজন মহারাজার সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল তাঁর। তিনি বলেন মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর মানিক্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে 'ভারত ভাস্কর' উপাধিতে ভূষিত করেছেন। 
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরার রাজন্য স্মৃতি বিজড়িত অন্যতম পর্যটন ক্ষেত্র উদয়পুরের ভুবনেশ্বরী মন্দির রবি ঠাকুরের সাহিত্যে স্থান করে নিয়েছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। কবিগুরুর সৃষ্ট রাজর্ষি, বিসর্জন, মুকুট থেকে ত্রিপুরার রাজাদের সম্পর্কে এবং ত্রিপুরা সম্পর্কে অবগত হতে পারছেন সকলে । 
 মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের সংস্কৃতির অন্যতম প্রাণপুরুষ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। চিন্তা-চেতনা, সংস্কৃতি সহ সবকিছুতেই জড়িয়ে আছেন তিনি। গীতাঞ্জলি কাব্যের ইংরেজি অনুবাদের জন্য প্রথম ভারতীয় হিসেবে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। একটা জীবনে এত সৃষ্টি তিনি করেছেন যা ভাবা যায় না। প্রকৃত অর্থে তিনি একজন লিজেন্ড (কিংবদন্তী)। যথার্থ অর্থে ভারতবর্ষের কৃষ্টি সংস্কৃতির ধারক বাহক তিনি। রবীন্দ্রনাথ ছাড়া যেন কোন কিছু সম্ভব নয়।        
 মুখ্যমন্ত্রী ডা: সাহা বলেন, রাজনীতিগত দিক থেকেই হোক কিংবা কোন অনুষ্ঠান - সবেতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান, সুর, কবিতা, প্রবন্ধ স্বমহিমায় বিরাজমান। দেশ প্রেমের জন্যও তাঁর অবদান চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে জেনারেল ডায়ারের ভূমিকায় ধিক্কার জানিয়ে ব্রিটিশদের দেওয়া নাইট উপাধি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর রচিত দুটি গান ভারত বাংলাদেশ দুই রাষ্ট্রে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে শ্রদ্ধার সঙ্গে গাওয়া হয়, যা ইতিহাসে বিরল বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। 
অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সাংস্কৃতি দপ্তরের সচিব পি কে চক্রবর্তী। বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা। এদিনের অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংস্থার ছোট ছোট শিল্পীরা আবৃত্তি, গান এবং নৃত্য পরিবেশন করে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ