আগরতলা ১৪ জুন: পশ্চিমবঙ্গ উত্তর প্রদেশ রাজস্থানই শুধু নয়, এই রাজ্যেও এখন বাহারি সুস্বাদু আমের ফলন শুরু হয়েছে । রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে চাষিরা এখন বাণিজ্যিকভাবে আমের চাষ শুরু করেছেন। ইতিমধ্যেই তারা লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছেন। বুধবার নাগিছড়ায় উদ্যান ও মৃত্তিকা সংরক্ষণ দপ্তর এর উদ্যোগে আয়োজিত ম্যাংগো ডাইভারসিটি এক্সিবিশনে এ কথা জানিয়েছেন দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ । এই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী আম চাষের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, আম গাছ কল্প বৃক্ষ নামে পরিচিত। আম একটি সুস্বাদু ফল, যা এশিয়া মহাদেশের সব দেশেই পাওয়া যায়। আম ভারতের জাতীয় ফলও। মানুষের মধ্যে আমের লোকপ্রিয়তার জন্য আমকে ফলের রাজা"ও বলা হয়।ইতিমধ্যেই ত্রিপুরায় বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন প্রজাতির আমের চাষ শুরু হয়েছে। নাগিছরাতেই বিভিন্ন জাতের আমের চাষ হয়। এর মধ্যে উন্নত ভারতীয় জাত আছে ১৩ টি। যেমন- অম্বিকা, অরুণিক, আম্রপালি, হিমসাগর ইত্যাদি। এছাড়া বিদেশী জাত আছে ২২ টি। যথা- মিয়াজাকি, হাড়িভাঙ্গা (ইয়েলো বানানা, জাপানীস অল টাইম) থাই হিমসাগর ইত্যাদি।
ভারতবর্ষে বিভিন্ন জাতের আম পাওয়া যায়, যেমন- আলফানসো, রত্নগিরি মহারাষ্ট্রে পাওয়া যায়। কেসর আম গুজরাটে, দশেরি আম - লখনৌতে হিমসাগর, কিষান ভোগ - পশ্চিমবঙ্গে পাওয়া যায়। চোসা, উত্তরপ্রদেশে, বাদামি- কর্ণাটকে পাওয়া যায়। বিভিন্ন জাতের আমের স্বাদ ও গন্ধ আলাদা আলাদা। এর মধ্যে আলফানসো - রূপে, স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয়। আলফানসো কে এর জন্য আম এর রাজা ও বলা হয়ে থাকে। আমে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ এবং সি পাওয়া যায়। ২০২২-২৩ অর্থ বর্ষে দেশে আম এর উৎপাদন হয়েছে আনুমানিক ২১ মিলিয়ন মেট্রিক টন। আমাদের দেশে উত্তরপ্রদেশে সর্বাধিক আমের উৎপাদন হয়, যা মোট উৎপাদনের প্রায় ২৩%। আমাদের ত্রিপুরাতেও বিভিন্ন জাতের আমের চাষ করা হয়। যথা : আম্রপালি, হিমসাগর অম্বিকা, অরুণিক ইত্যাদি। ত্রিপুরাতে প্রায় ১০৩৫৭ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়, যার গড় উৎপাদন ৫.০৯ মেট্রিক টন/হেক্টর। এই উদেশ্যে উদ্যান ও গবেষণা কেন্দ্র, নাগিছরায় " আমের বৈচিত্র প্রদর্শনী " আয়োজন করা হয়েছে। এদিন মন্ত্রী রতন লাল নাথ আরো জানান, মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর পরিবার যোজনার আওতায় ইতিমধ্যেই ১ লক্ষ পরিবারকে ১৫ লক্ষ চারা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। (লেবু, পেঁপে, সুপারি, কলা এবং আম)। পাম অয়েল এর জন্য সরকার ২০০০ হেক্টর জমিতে চাষের টার্গেট নিয়েছে। এ বছর ১৩০০ হেক্টরে আলাদা করে আম, কাঁঠাল, কমলা, আনারস এবং কলার জন্য টার্গেট নেওয়া হয়েছে। নারকেলের জন্য জমির বৃদ্ধি ঘটানো হয়েছে ২৯৫ হেক্টর। পাশাপাশি আমাদের চিরাচরিত ফলের চাষও বৃদ্ধি করা হবে। যেমন জাম, লিচি, পেয়ারা, কুল এগুলোর চারা আমরা বিতরণ করব। আরবান হর্টিকালচার স্কিমে দপ্তরের তরফে ২ লক্ষ ৯৫ হাজার চারা বিতরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা একটা নতুন স্কিম। এর মাধ্যমে নারকেল, আম, হাইব্রিড সবজির চারা এবং ফুলের চারা বিতরণ করা হবে। এদিন নাগিছড়ায় ম্যাংগো ডাইভারসিটি এক্সিবিশনে বক্তব্য রাখেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, সাংবাদিক শেখর দত্ত, জয়ন্ত ভট্টাচার্য, সঞ্জীব দেব এবং শিল্পোদ্যোগী রতন দেবনাথ। মন্ত্রী এদিন সাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে নাগিছড়া কৃষি উদ্যান গবেষণা কেন্দ্র ঘুরে দেখেন।
0 মন্তব্যসমূহ