Advertisement

Responsive Advertisement

কুমারঘাটের ঘটনায় আহত নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করবে রাজ্য ও কেন্দ্র: মুখ্যমন্ত্রী


আগরতলা, ২৮ জুন : উল্টো রথকে কেন্দ্র করে বুধবার কুমারঘাটের যে মর্মান্তিক হৃদয়-বিদারক ঘটনায় আহত ও নিহতদের পাশে রয়েছে রাজ্য সরকার, প্রধানমন্ত্রী নিজেও এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছেন। রাজ্য সরকারের তরফে আর্থিক সহায়তার ঘোষণা করা হয়েছে, সেই সঙ্গে ঘটনার তদন্ত ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে করানোরনির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কুমারঘাটে রাতেই এক সাংবাদিক সম্মেলন করে একথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা মানিক সাহা।
এদিন সন্ধ্যায় মহাকরণে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে থাকাকালীন সময়ে কুমারঘাটের ঘটনার খবর পান রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা। সঙ্গে সঙ্গে বৈঠক ছেড়ে কুমারঘাট ছুটে যান। পরিস্থির গুরুত্ব বিবেচনা করে তিনি সব কাজ ফেলে রেখেই সাধারণ যাত্রীবাহী ট্রেনে করে কুমারঘাট পৌঁছান এবং প্রথমে তিনি সুজা চলে যান দুর্ঘটনাস্থল ব্লক চৌমুনী এলাকায় যান। ঘটনাস্থল ও দুর্ঘটনার শিকার রথটি দেখেন। স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানার চেষ্টা করেন।
এরপর তিনি এক এক করে কুমারঘাট ও ফটিকরায় হাসপাতালে ছুটে যান এই ঘটনায় আহতদের দেখতে। হাসপাতালে গিয়ে আহতদের এবং তাদের পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলে শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। সেই সঙ্গে কর্তব্যরত চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশ দেন তাদের গুরুত্বসহকারী চিকিৎসা করার জন্য। 
পরিবর্তি সময় কুমারঘাট ডাকবাংলায় এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা মানিক সাহা বলেন, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়, ত্রিপুরা রাজ্যের ইতিহাসে এমন মর্মান্তিক ঘটনা প্রথম। রথ চলাকালীন সময় হঠাৎ করে উপরের বিদ্যুৎ পরিবাহী লাইনের সংস্পর্শে চলে আসে রথটি এবং এই সময় রথের সিঁড়িতে যারা ছিলেন তাদের অনেকের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে। তবে রথের ভিতরে যারা ছিলেন তাদের অনেকের কোন ক্ষতি হয়নি। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে এবং এই ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৬জন। আহতদের চিকিৎসা কুমারঘাট ফটিকরায় ও কৈলাসহরের ঊনকোটি জেলা হাসপাতালে হচ্ছে। এদের মধ্যে যাদের জখম বেশি হয়েছে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে আগরতলার জিবি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আহতদের চিকিৎসার কোন যাতে ত্রুটি না হয় তার জন্য রাজ্যের মুখ্য সচিব এবং স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিবকে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান। আহতদের যাবতীয় খরচ বহন করবে রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে মৃত এবং আহত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করা হবে ত্রিপুরা সরকারের তরফে। ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ঊনকোটি জেলার জেলাশাসককে বলা হয়েছে বলেও এদিন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিহতদের পরিবার পিছু চার লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেব রাজ্য সরকার। আহতদের মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি যাদের শরীর পুড়ে গিয়েছে তাদেরকে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা করে এবং যাদের শরীর ৪০থেকে ৬০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে তাদেরকে ৭৪হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
এই ঘটনার পরেই মুখ্যমন্ত্রী এক টুইট বার্তায় ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। এই টুইট বার্তা প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির গোচরে এসেছে, তিনি নিজেও এই ঘটনার জন্য টুইট বার্তা দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন, নিহতের পরিবারকে গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে আহতদেরকে পঞ্চাশ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
 মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী টিঙ্কু রায়, প্রাক্তন মন্ত্রী এবং বিধায়ক ভগবান দাস, রাজ্য শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান নবাদল বনিকসহ অন্যান্যরা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ