ফাইল ছবি
আগরতলা, ২৩ জুন: মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহার সভাপতিত্বে আজ সচিবালয়ে '৭৫ সীমান্ত গ্রাম ক্রান্তি বীরো কে নাম' শীর্ষক অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা বলেন, দেশের মানুষকে দেশাত্মবোধের ভাবনায় উজ্জীবিত করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাবনায় দেশব্যাপী ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব' পালন করা হচ্ছে। দুই বছরব্যাপী এই কর্মসূচি আগামী ১৫ আগস্ট, ২০২৩ পর্যন্ত চলবে। উল্লেখ্য, স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং দেশের অনুল্লেখিত নায়কদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে '৭৫ সীমান্ত গ্রাম ক্রান্তি বীরো কে নাম' শীর্ষক এক কর্মসূচি আগামী জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে রাজ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এই কর্মসূচিতে রাজ্যের ৮টি জেলার ১৬টি মহকুমার মোট ৭৫টি সীমান্ত গ্রামকে চিহ্নিত করা হবে। সেখানে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামের ফলক তৈরি করা হবে। এ উপলক্ষে স্বাধীনতা সংগ্রামী এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, ম্যারাথন দৌড়, ৭৫ কিলোমিটার বাইসাইকেল র্যালি, ক্রান্তি বীর মিউজিক্যাল কনসার্ট, চিহ্নিত গ্রামগুলিতে দেশাত্মবোধক নাটক, গান, অঙ্কন কর্মশালা, চিরাচরিত খাদ্য উৎসব, ক্যালেন্ডার আঁকা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে। সভায় মুখ্যমন্ত্রী অনুষ্ঠান সম্পর্কে রাজ্যের ৮টি জেলার জিলা পরিষদের সভাধিপতি ও জেলাশাসকদের সাথেও ভার্চুয়ালি মতবিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে '৭৫ সীমান্ত গ্রাম ক্রান্তি বীরো কে নাম' শীর্ষক যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে তাতে সমাজের প্রতিটি নাগরিককে যুক্ত করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন হর ঘর তিরঙ্গা যাত্রার মতোই এই কর্মসূচিতেও রাজ্যের সাধারণ মানুষের মধ্যে দেশাত্মবোধের চেতনা জাগ্রত হবে। মানুষ দেশের প্রতি নিজের কর্তব্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হবেন। তিনি বলেন, চিহ্নিত ৭৫টি সীমান্ত গ্রামে যে সকল স্বাধীনতা সংগ্রামীরা রয়েছেন তারা যেন এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনুভব করতে পারেন দেশ তাদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করছে। নবপ্রজন্মের সাথে ক্রান্তি বীরদের পরিচয় করাতে এক্ষেত্রে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। সভায় মুখ্যমন্ত্রী এই কর্মসূচিকে জেলাস্তরে প্রতিযোগিতার পর্যায়ে আয়োজন করার জন্য সামাজিক মাধ্যমে এর বিপুল প্রচার প্রসারে এবং জেলাস্তরে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানের পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য রাজ্যের জনগণের সামনে তুলে ধরার জন্য উপস্থিত আধিকারিকদের নির্দেশ দেন।
সভায় আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যসচিব জে কে সিনহা বলেন, কর্মসূচি উপলক্ষে চিহ্নিত ৭৫টি গ্রামে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের সুবিধাভোগী সংক্রান্ত সকল প্রকল্পগুলি ১০০ শতাংশ বাস্তবায়নে নজর দিতে হবে। এই সময়কালে প্রত্যেকটি গ্রামে পর্যায়ক্রমে প্রশাসনিক ও স্বাস্থ্য শিবির আয়োজন করতে হবে। চিহ্নিত গ্রামগুলির যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়াও এই কর্মসূচিগুলিতে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রী সহ সব অংশের নাগরিক, বিএসএফদের যুক্ত করতে হবে।
সভায় অনুষ্ঠান আয়োজন সম্পর্কে প্রাথমিক আলোচনা করতে গিয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী বলেন, আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের অঙ্গ হিসেবে '৭৫ সীমান্ত গ্রাম ক্রান্তি বীরো কে নাম' অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে এই কর্মসূচি সংক্রান্ত সমস্ত ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের সাংস্কৃতিক মন্ত্রক থেকে ইতিমধ্যেই ৩ কোটি ১৩ লক্ষ টাকার অনুমোদন পাওয়া গেছে। ৭৫টি সীমান্ত গ্রাম চিহ্নিতকরণ সহ সমস্ত কর্মসূচি আয়োজনের লক্ষ্যে জেলাস্তরে সভা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা, গ্রামোন্নয়ন, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তর সহ অন্যান্য দপ্তরগুলিও সহযোগিতায় থাকবে।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী, পর্যটন দপ্তরের সচিব উত্তম কুমার চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ মহানির্দেশক সৌরভ ত্রিপাঠি (আইন শৃঙ্খলা), গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব ড. সন্দীপ আর রাঠোর, পর্যটন দপ্তরের অধিকর্তা তপন কুমার দাস, যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের অধিকর্তা এস বি নাথ, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য প্রমুখ।
0 মন্তব্যসমূহ