Advertisement

Responsive Advertisement

নেশা মুক্ত ত্রিপুরার পাশাপাশি প্লাস্টিক মুক্ত ত্রিপুরা গড়ার ডাক দেওয়া হবে, মেলাঘরের রথযাত্রার উৎসবে বললেন মুখ্যমন্ত্রী


আগরতলা, ১৯ জুন: প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মেলাঘর রথযাত্রা উৎসব-২০২৩। রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর এবং মেলাঘর পুর পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ৯দিন ব্যাপি রথযাত্রা উৎসবের সূচনা হয় সোমবার বিকেলে। মেলাঘরের জগন্নাথ বাড়ি মুক্ত মঞ্চে আয়োজিত এই উৎসবে উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মেলাঘরের ঐতিহ্যবাহী রথযাত্রার কথা শুধু আগরতলা বা রাজ্যের মানুষই জানেন এমন নয়। এই রথ দেখতে অন্যান্য রাজ্য এমনকি বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর প্রচুর সংখ্যক লোক আসেন। তিনি আরো বলেন ত্রিপুরার জাতি ও জনজাতি অংশের মানুষে, বিশেষ করে ১৯টি জনজাতি অংশের মানুষের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির যে ঐতিহ্য রয়েছে তার জন্য সকলের গর্ববোধ হওয়া প্রয়োজন। রাজ্যে এখন যে ভাবে মানুষ নিজেদের মত করে পূজাপার্বন পালন করছেন আগে তা দেখা যেতো না। ভগবান ছাড়া যে কোন কিছু সম্ভব নয় তা সবাই অনুভব করতে পারছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশ ও বিদেশে যাচ্ছেন, সেখানে রাজনৈতিক ভাষণ দেন কিন্তু সেই জায়গা গুলিতেও নিষ্ঠার সঙ্গে ভগবানের প্রার্থনা করছেন, উনার দিশাতেই রাজ্য চলছে। আগে এরাজ্যে নাস্তিকের সংস্কৃতি ছিল কিন্তু মানুষ ধীরে ধীরে আবার আস্তিকের সংস্কৃতিতে ফিরে আসছেন। সেই দিক থেকে বলতে গেলে মেলাঘরের মানুষ ঐতিহ্যবাহী পরম্পরাকে ধরে রেখেছে। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বহু মানুষ এবং দোকানিরা অংশ নিয়ে সকলে মিলে আনন্দে মেতে উঠবেন ৯ দিন ধরে। এখন সারা ভারত জুড়ে রথযাত্রা হচ্ছে। আর ইস্কনের উদ্যোগের জন্য সারা বিশ্বে রথযাত্রা হচ্ছে। এর ফলে সারা বিশ্বের মানুষ ভারতের কৃষ্টি সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারছেন। এই কৃষ্টি সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে হবে এবং আগামী প্রজন্ম যাতে এগুলো সম্পর্কে জানতে পারে সেই কাজ করার আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন সময় মানুষের মধ্যে ব্যতিক্রমী চিন্তা দ্বারা চলে আসে, কিন্তু কৃষ্টি সংস্কৃতিকে নিয়ে চর্চা করলে মানুষ স্বাভাবিক ছন্দে চলতে পারে। এতে করে সমাজ রাজ্য এবং দেশের উন্নতি হয়।
ভারতকে যখন জি -২০ এর সভাপতি করা হয় তখন বলা হয়েছিল শুধুমাত্র একটি শহরে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন দেশের বিভিন্ন শহরে আয়োজন করা হবে। এর প্রেক্ষিতে আগরতলায় সায়েন্স সামিট হয়েছিল। তখন প্রায় পঞ্চাশ কোটি টাকা খরচ করে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গার দর্শনীয় স্থানগুলোতে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়। নীরমহল প্রাসাদও এর মধ্যে ছিল, তাই এটিকেও নতুন করেও সাজিয়ে তোলা হয়। বিশিষ্ট লেখিকা এবং ইনফোসিসের স্বত্বাধিকারীদের একজন সুধা মূর্তি কিছু দিন আগে রাজ্যে এসে ছিলেন। তিনি রাজ্যের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলির পাশাপাশি নীরমহল প্রাসাদও ঘুরে দেখেন। প্রাসাদের সৌন্দর্য দেখে তিনি মুগ্ধ হলেও রুদ্রসাগর লেকের মধ্যে প্লাস্টিক দেখে তিনি অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। একে প্লাস্টিক মুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। রাজ্য সরকার নেশা মুক্ত ত্রিপুরার পাশাপাশি প্লাস্টিক মুক্ত ত্রিপুরা গড়ার কাজ শুরু করবে। তাই রুদ্র সাগরকে দূষণমুক্ত রাখার জন্য সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান রাখেন। সেই সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে রথযাত্রা উৎসব সম্পন্ন করার জন্য আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন। 
মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি এদিন অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিপাহিজলা জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুপ্রিয়া দাস দত্ত, নলছড় বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক কিশোর বর্মণ, সিপাহিজলা জেলার জেলাশাসক ডা. বিশাল কুমার, বিশিষ্ট সমাজসেবী দেবব্রত ভট্টাচাৰ্য্য, এম ডি সি পদ্মলোচন ত্রিপুরা, মেলাঘরজগন্নাথ মন্দির সেবা কেন্দ্র'র সচিব জয়ন্ত সাহা, মেলাঘর পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন অনামিকা ঘোষ পাল রায়, সিপাহিজলা জেলার পুলিশ সুপার বি. জগদীশ্বর রেড্ডি প্রমুখ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ