Advertisement

Responsive Advertisement

প্রধানমন্ত্রীর বিকাশ মুখী কর্মধারা সম্পর্কে জনসমক্ষে তুলে ধরতে সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ৮ জুন: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ৯ বছরের শাসনে কোথায় কোথায় বিকাশ হয়েছে সেটা জনসমক্ষে তুলে ধরার জন্য দীর্ঘ ১ মাস ব্যাপী বিকাশ তীর্থ কর্মসূচির আয়োজন করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার আগরতলার অদূরে লেম্বুছড়ায় জাতীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্যই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ৯ বছরের সময়ে জনকল্যাণমূলক কাজগুলিকে মানুষের সামনে উপস্থাপন করা। 
৩০ মে থেকে ৩০ জুন। টানা এক মাস সময় ধরে ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের বিকাশ মুখী কর্মধারা সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা হবে। দীর্ঘ এক মাস ব্যাপী এই গোটা কর্মসূচিকে 'বিকাশ তীর্থ' নাম দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। উল্লেখ্য, গত ৩০ মে দায়িত্ব গ্রহনের ৯ বছর পূর্ণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। মাঝখানে আর এক বছর। তারপরই ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হবে দেশের লোকসভা নির্বাচন। সেই হিসেবে প্রধানমন্ত্রী মোদির ৯ বছর পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে বিকাশ তীর্থ কর্মসূচির বাস্তবায়ন করছে প্রদেশ বিজেপিও। আর একে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার লেম্বুছড়াস্থিত ন্যাশনাল সংস্কৃত ইউনিভার্সিটিতে (জাতীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়) প্রথম বারের মতো পা রাখেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিকাঠামো প্রত্যক্ষ করে রীতিমতো আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। 
পরবর্তী সময়ে বাইরে অপেক্ষমাণ সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ সাহা জানান, প্রধানমন্ত্রীর ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি রাখা হয়েছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর জনকল্যাণমূলক কাজগুলিকে জনসমক্ষে তুলে ধরার জন্য প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে রাজ্য মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরা সহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্ব বিভিন্ন জায়গায় বিকাশ তীর্থ কর্মসূচিতে সামিল হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ন্যাশনাল সংস্কৃত ইউনিভার্সিটিতে এসে খুবই অভিভূত। এর যাবতীয় পরিকাঠামো খুবই সুন্দরভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। ফ্যাকাল্টিদের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পারেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণীর পাশাপাশি বি এ, এম এ এবং পিএইচডিও করানো হয়। আর এই প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে জনজাতি অংশের প্রচুর ছাত্রছাত্রী পড়াশুনা করছে। এই প্রতিষ্ঠান সংস্কৃতির একটা অন্যতম পীঠস্থান। বৈদিক সংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে এই প্রতিষ্ঠান। বিভিন্ন বিষয়ে এখানে পাঠদান করা হয়। ক্লাশ রুমগুলিও খুবই উন্নত মানের। যা কোন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম নয়। 
এদিন এই কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগদান করেন প্রাক্তন বিধায়ক কৃষ্ণধন দাস, বিজেপির প্রদেশ সম্পাদক রতন ঘোষ, মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য সহ দলের অন্যান্য নেতৃত্ব। বিকাশ তীর্থ কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর অংশ গ্রহনের মাধ্যমে এদিন এলাকায় বেশ সাড়া পড়েছে। একইদিনে এই কর্মসূচিতে ধলাই জেলায় অংশ গ্রহন করেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্যও। 
*** এক নজরে কেন্দ্রীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় 
এটি সম্পূর্ণরূপে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়। সারা দেশে এর মোট ১৩টি ক্যাম্পাস রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্প্রতি NAAC কর্তৃক A++ গ্রেডে স্বীকৃতি লাভ করেছে। কেন্দ্রীয় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়, একলব্য ক্যাম্পাস, আগরতলা, ২০১৩ সালে পথচলা শুরু করেছে। 
বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে প্রাকশাস্ত্রী (XI & XII), শাস্ত্রী (B.A.), শাস্ত্রীপ্রতিষ্ঠা (B.A.) অনার্স, শিক্ষাশাস্ত্রী (B.Ed), আচার্য (M.A.) এবং বিদ্যাভর্ধি (Ph.D) বিষয়ে পাঠদান করা হয়। 
এছাড়া আরো ৭টি প্রোগ্রাম চালু রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে ডিপার্টমেন্ট অফ ব্যকরণ, সাহিত্য, জ্যোতিষ, ধর্মশাস্ত্র, অদ্বৈত বেদান্ত, বৌদ্ধদর্শন এবং শিক্ষাশাস্ত্র বিভাগ।
এর পাশাপাশি প্রাকশাস্ত্রী ও শাস্ত্রী শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক বিষয় ও ভাষা পাঠদানের অংশ হিসেবে ইংরেজি (ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য), ভারতীয় ভাষা (হিন্দি ও বাংলা), সামাজিক বিজ্ঞান (রাষ্ট্র বিজ্ঞান), সমসাময়িক বিজ্ঞান বিভাগ এবং প্রাকৃতিক ভাষা প্রক্রিয়াকরণ (পরিবেশ বিজ্ঞান এবং কম্পিউটার শিক্ষা) ব্যবস্থাপনা রয়েছে। সাম্প্রতিক একাডেমিক সেশনে (২০২২-২৩) যোগিক বিজ্ঞান এবং আধ্যাত্মিকতা বিভাগও চালু করা হয়েছে। যা শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে সহায়ক। 
বলা চলে ত্রিপুরার এই ক্যাম্পাসটি এখন উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের কাছে সংস্কৃত অধ্যয়নের প্রবেশদ্বার হয়ে উঠেছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ