Advertisement

Responsive Advertisement

বিট দ্য হিট


(ডা.কনক চৌধুরী, রাজ্যের বিশিষ্ট চিকিৎসা)

আজ সারাদিনে প্রচুর ঘামলাম। এই তীব্র ভ্যাপসা গরমে কাজের সাথে সাথে শরীরটাকে সুস্থ রাখতেই হবে বন্ধু। তাই এই সংক্ষিপ্ত আলোচনা। 
আশাকরি উপকার পাবেন :
১) এই মৌসুমে জাম খেয়েছেন? জামে আছে অ্যালজিনিক এসিড বা অ্যালজিট্রিন,অ্যান্থোসিয়ানিন এবং অ্যান্থোসায়ানাডিনস এর মতো পুষ্টিসমূহ যা রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং এই যৌগগুলো শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস। যা অক্সিডেশন প্রতিরোধ করে হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ভালো রাখতে অসামান্য অবদান রাখে।এছাড়াও এটি পটাসিয়াম-এর একটি সমৃদ্ধ ভাণ্ডার, যা উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে সাহায্য করে,হার্ট অ্যাটাক-এর ঝুঁকি,স্ট্রোক কমায়।জাম খেলে রক্তে শর্করা বা চিনি কমে। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য জাম অনন্য একটি ফল।জলের পরিমাণও দারুণ। 

২) গরমের দিনে বারেবারে শরবত পান করা জরুরি। এছাড়াও গরমে বেলপানা বা ছাতুর শরবত খুবই উপকারী ও সহজেই পাওয়া যায়।ডাবের জল প্রাকৃতিক ভাবেই স্যালাইন ওয়াটারের কাজ করে। ক্লান্তি কমাতে, শরীরকে ঠান্ডা রাখতে খুব উপকারী এই জল। 

৩) গরমকালে দইয়ের বিকল্প হয় না। জলখাবারে দই-চিঁড়ে,কলা বা আম দিয়ে ইয়োগার্ট বা দই চমৎকার সকালের ফলাহার।দুপুরে খাওয়ার পরে শেষ পাতে বাড়িতে পাতা টক দই খান। আবার দই ভাতও চলতে পারে। শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে দই।প্রোটিনও পাবেন অন্য পুষ্টির সঙ্গে।

৪) মরিচ শুধু রান্নার স্বাদ বাড়ায় তা নয়, এটি শরীরকেও ঠান্ডা রাখতে পারে।মরিচে থাকে ক্যাপসাইসিন। এটি শরীরকে শীতল রাখতে বেশ উপকারী। তাই এই গরমে প্রায়শই খেতে পারেন কাচা লংকা।এতে উপকার পাবেন। 

৫)শরীর ঠান্ডা করতে গোলমরিচও বেশ উপকারী। পেপারমিন্টে উচ্চ মেন্থল সামগ্রী থাকে। যা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। গোলমরিচ দিয়ে চা বানিয়ে পান করুন। এতে মুহূর্তে উপকার পাবেন। 

৬)তীব্র গরমে কাউকে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখলে কী করা উচিত ? 
• ঐ ব্যক্তিকে যত দ্রুত সম্ভব ঠাণ্ডা জায়গায় নিয়ে যেতে হবে।
• শুইয়ে দিতে হবে, এবং তার পা কিছুটা ওপরে তুলে দিতে হবে।
• প্রচুর জল বা পানীয় খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে,জলশূন্যতা দূর করার পানীয় দেয়া যেতে পারে।
• আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বক ঠান্ডা করার ব্যবস্থা করতে হবে, ভেজা কাপড় বা স্পঞ্জ দিয়ে মুছে দেয়া যেতে পারে শরীর। বগলের নিচে এবং ঘাড়ে গলায় ঠাণ্ডা পানি দেবার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
কিন্তু ৩০ মিনিটের মধ্যে যদি সুস্থ না হয়, তাহলে ঐ ব্যক্তির হিট স্ট্রোক হবার আশংকা রয়েছে।দেরি না করে তক্ষুনি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে। হিটস্ট্রোক হলে মানুষের ঘেমে যাওয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে।সেক্ষেত্রে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন ঐ ব্যক্তি।
তাই এই গরমে ঠাণ্ডা থাকুন আর শরীরকে পানিশূন্য হতে দেবেন না।ঘরে দিনের বেলাতে পর্দা টেনে দিন। প্রচুর জল(৩-৪ লিটার) এবং দুধ পান করুন।সাধারণত দিনের বেলাতেই গরমের প্রভাব বেশি হয়। কিন্তু রাতের অতি গরমও শরীরের জন্য ক্ষতিকর।তাই সামলে থাকুন আপনারা।
বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়া অব্দি
সবাইকে সচেতন রাখুন, নিজেও সাবধান থাকুন। 
০৭/০৬/২০২৩,
ডা.কনক চৌধুরী, 
ত্রিপুরা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ