Advertisement

Responsive Advertisement

ছাত্রছাত্রীদের মানসিক চাপ কমাতে প্রাইভেট টিউশনি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে সরকার: মুখ্যমন্ত্রী


আগরতলা, ২৩ জুন: ছেলেমেয়েদের উপর জোর করে প্রাইভেট টিউশন চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তাদের টিউশন পড়তে হচ্ছে। এতে ছেলেমেয়েদের উপর মানসিকভাবে চাপ বাড়ছে। আর এটা কোনভাবে হতে দেওয়া যায় না। এনিয়ে অভিভাবকদেরও চিন্তা ভাবনা করতে হবে। সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনি বন্ধ করতে প্রয়োজনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুক্রবার রাজধানীর মহারাণী তুলসিবতী বালিকা বিদ্যালয়ে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রাইভেট টিউশনি নিয়ে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।
এদিন তুলসীবতি স্কুলে নার্সারি ক্লাস, অটল টিঙ্কারিং ল্যাবরেটরি রুম, এবং আয়রন মুক্ত বিশুদ্ধ পানীয় জলের প্ল্যান্টের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি পর্ষদের পরীক্ষায় স্কুলের কৃতি শিক্ষার্থীদের সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। 
বর্তমান রাজ্য সরকার শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়নে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছে। এক্ষেত্রে শুধু শহর এলাকার স্কুলই নয়, জেলা, মহকুমা এবং দুর্গম এলাকার স্কুলগুলিতেও পরিকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে। এই অবস্থায় শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে পরিকাঠামোগত বিভিন্ন নয়া ব্যবস্থা যুক্ত হলো রাজধানীর মহারাণী তুলসীবতি গার্লস স্কুলে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে প্রাইভেট টিউশন নিয়ে নিজের কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। 
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রাকপ্রাথমিক স্তর থেকেই শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে পরিকাঠামো উন্নয়নে লাগাতর প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে বর্তমান রাজ্য সরকার। তিনি বলেন ছাত্রছাত্রীদের গুনগত শিক্ষা প্রদান করা রাজ্য সরকারের অন্যতম একটি লক্ষ্য। কিন্তু এখনো বিভিন্ন জায়গায় সরকারি স্কুলের একাংশ শিক্ষক প্রাইভেট টিউশনি চালিয়ে যাচ্ছেন। যা কোনভাবেই কাম্য নয়। অথচ সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশনি বন্ধ করার জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশিকা জারি হয়েছে। তবে এরপরেও প্রাইভেট টিউশনি চলছে। দেখা যাচ্ছে শিক্ষকরা বিভিন্ন জায়গায় বাড়ির মধ্যে সম্পূর্ন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ছেলেমেয়েদের টিউশনি পড়াচ্ছেন। আর অভিভাবকরা বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। এসকল অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রাইভেট টিউশন নেওয়ার ফলে ছেলেমেয়েদের উপর নানাভাবে চাপ বাড়ছে। মানসিকভাবে প্রভাব পড়ছে তাদের উপর। তাই ছেলেমেয়েদের উপরে বাড়তি চাপ কমাতে প্রাইভেট টিউশনি বন্ধে সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এটা চলতে দেওয়া যায় না। এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অভিভাবকদেরও চিন্তা ভাবনা করার আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। 
পাশাপাশি নয়া শিক্ষা নীতি নিয়েও আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। তিনি বলেন, বাস্তবের সঙ্গে মিলিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভেবে এই শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। আগামী দিনে ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থানের সুযোগ যাতে হয় সেই দিশা নিয়ে জাতীয় শিক্ষা নীতি রূপায়িত করা হয়েছে।  
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী নেশাদ্রব্য ব্যবহার নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিভিন্ন বয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যেও নেশার প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই সবাইকে আরো সতর্ক ও সচেতন হতে হবে। রাজ্য সরকার নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। এদিন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের কর্পোরেটর রত্না দত্ত, শিক্ষা দপ্তরের সচিব শরদিন্দু চৌধুরী, অধিকর্তা শুভাশিস বন্দোপাধ্যায়, প্রধান শিক্ষক সহ বিশিষ্ট জনেরা।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ