Advertisement

Responsive Advertisement

রাজ্যের কেশব দাসের বোনমেরো ট্রান্সপ্ল্যান্টের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ

আগরতলা, ২০ জুলাই: 'মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু' কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করে মুখে হাসি ফুটলো জিরানিয়ার বাসিন্দা ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত কেশব দাসের পরিবারের। কলকাতার একটি বেসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসারত কেশব দাসের ব্যয়বহুল বোনমেরো ট্রান্সপ্ল্যান্টের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে স্বাস্থ্য দপ্তরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। 
সময়ের সাথে সাথে 'মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু' কর্মসূচি এখন রাজ্যের প্রত্যাশী মানুষের আস্থার স্থল হয়ে উঠেছে। ক্রমশ বাড়ছে মানুষের ভীড়। বৃহস্পতিবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মানুষ একরাশ প্রত্যাশা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারী বাসভবনে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহার সাথে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকারের সময় জনসাধারণ তাদের অভাব অভিযোগ ও সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেকের সমস্যার কথা শুনে তাদের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সচিব ও আধিকারিকদের নির্দেশ দেন। এদিন আগরতলার লঙ্কামুড়ার বাসিন্দা সজল ঘোষ ও তার স্ত্রী চিকিৎসায় সাহায্যের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। সজল বাবু লিভার ও কিডনিজনিত গুরুতর অসুখে ভুগছেন। সজল ঘোষ মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, তার দু'বার হার্নিয়ার অপারেশনও হয়েছে। অসুস্থতার কারণে তিনি এখন কর্মহীন। সজল ঘোষের সমস্যার কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী সাথে সাথে জিবিপি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারকে সজল ঘোষের উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেন।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে খোয়াইয়ের বাসিন্দা গীতা ঘোষ ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত তার স্বামীর চিকিৎসায় সাহায্যের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করতে এসেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী গীতা দেবীর স্বামীর চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখে ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারকে গীতা দেবীর স্বামীর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলেন। জিরানিয়ার বাসিন্দা অসীম দাস এসেছিলেন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত তার বাবা কেশব দাসের চিকিৎসার সাহায্যের আবেদন নিয়ে। বর্তমানে কলকাতার একটি বেসরকারী হাসপাতালে অসীমের বাবার চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা অসীমের বাবার বোনমেরো ট্রান্সপ্ল্যান্টের পরামর্শ দিয়েছেন, যা অনেকটাই ব্যয়বহুল। অসীম তার সমস্যার কথা তুলে ধরলে মুখ্যমন্ত্রী সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দেন। তেমনি বড়জলার বাসিন্দা অমৃতলাল চৌধুরী ও তার স্ত্রী চিকিৎসার সাহায্যের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। অমৃতলাল চৌধুরী প্যানক্রিয়াস জনিত রোগে ভুগছেন এবং বহির্রাজ্যে গিয়ে অপারেশনও করিয়েছেন। চিকিৎসকরা পুনরায় তাকে অপারেশন করার পরামর্শ দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী অমৃতলাল চৌধুরীর সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দেন।
রামনগরের বাসিন্দা ভাস্কর কান্তি কর ক্যান্সারে আক্রান্ত তার মায়ের চিকিৎসার সাহায্যের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তখন মুখ্যমন্ত্রী ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারকে ভাস্কর বাবুর মায়ের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে বড়দোয়ালির বাসিন্দা দীপ্তনু দে কর্মসংস্থানের আর্জি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হন। এক্ষেত্রেও মুখ্যমন্ত্রী সহায়তার আশ্বাস দেন। 
মুখ্যমন্ত্রীর সাথে জনগণের সাক্ষাতের সাপ্তাহিক কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর সচিব ড. প্রদীপ কুমার চক্রবর্তী, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব ড. দেবাশিষ বসু, সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের সচিব তাপস রায়, জিবিপি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেন্ডেন্ট ডা. শঙ্কর চক্রবর্তী, আগরতলার অটল বিহারী বাজপেয়ী রিজিওন্যাল ক্যান্সার হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেন্ডেন্ট ডা. শিরমনি দেববর্মা সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য আধিকারিকগণ। এদিন মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু কর্মসূচিতে ২১ জন প্রত্যাশী মুখ্যমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করেন।
পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণে এবং বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে আমাদের সরকারের প্রয়াস জারি রয়েছে। এর সুফলও পাচ্ছেন সাধারণ জনগণ।
আজ "মুখ্যমন্ত্রী সমীপেষু" কার্য্যক্রমে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত জনসাধারণের সমস্যার কথা শুনি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দিই।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ