আগরতলা, ২৬ জুলাই: সাম্প্রতিক সময়ে সিপিআই(এম) বিধায়ক জিতেন্দ্র চৌধুরী গরু এবং সনাতন মানুষের ধর্মীয় ভাবাবেগকে জড়িয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন, যার জেরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজ্য জুড়ে ব্যাপক নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
সিপিআই(এম) এর একটি দলীয় কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জিতেন্দ্র চৌধুরী বলেন, প্রাচীনকালে ব্রাহ্মণরা যখন কারও বাড়িতে যেতেন, তারা গরুর মাংস না পেলে অখুশি হতেন। যাঁরা বেদ, উপনিষদ সম্পর্কে অবগত আছেন, তাঁদের জিজ্ঞাসা করুন বা কোনও পুরানো ব্রাহ্মণকে জিজ্ঞেস করুন, তারাও এক বিষয়টি স্বীকার করবেন। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বদলে যায়। যেখানে সনাতনঅংশের মানুষ গরুকে দেবতা হিসেবে পূজা করে এবং গরুর মাংস শব্দটি মুখে উচ্চারণ করাকে পাপ হিসেবে মনে করে, এই অবস্থায় জিতেন চৌধুরীর এমন মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠেছে।
জিতেন চৌধুরীর মন্তব্যের জবাবে আগরতলার শ্রী শ্রী জগন্নাথ মন্দিরের পুরোহিত পণ্ডিত মলয় চক্রবর্তী বলেন, "আমাদের দেশে, এক সময় ছিল যখন মানুষের সম্পদ তাদের মালিকানাধীন গরুর সংখ্যা দ্বারা নির্ধারিত হত। গরুকে বিষ্ণু রূপ মনে করা হয় এবং অনেক হিন্দু ধর্মীয় রীতি তাদের জড়িয়ে রয়েছে, বিয়ে উপনয় শ্রাদ্ধ ইত্যাদি দশকর্মে গোবর ও গোমূত্র ব্যবহার করা হয়। প্রাচীনকাল থেকে গরুকে দেবতার রূপে পূজা করার রীতিনীতি রয়েছে, যা বর্তমান সময়েও চলমান। জ্ঞানে বা অজ্ঞানে যদি কেউ গরু মেরে ফেলেন তাহলে প্রায়শ্চিত্ত করা হয়।
এমনকি একটি গরু মারা গেলেও আমরা তাদের শেষকৃত্য করি। প্রাক্তন সাংসদ ও বিধায়ক জিতেন্দ্র চৌধুরীর জঘন্য বক্তব্য আমরা মেনে নিতে পারি না এবং আমি জনগণকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।"
বিতর্কিত মন্তব্যটিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের সকলেই জিতেন চৌধুরীর মন্তব্যের নিন্দা করেছে।
এদিকে, সূত্র জানিয়েছে যে রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন মন্দিরের পুরোহিতরা এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করবেন।
0 মন্তব্যসমূহ