Advertisement

Responsive Advertisement

এবিভিপি'র অনুষ্ঠানে, নেশার বিরুদ্ধে যুব সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর

আগরতলা, ২৭ জুলাই: কমিউনিস্ট শাসনের সময়ে নেশার জন্য কয়েক প্রজন্ম ধ্বংস হয়েছে। বর্তমানে নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার সর্বতোভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কঠোরভাবেই নেশার বিরুদ্ধে মোকাবিলা করা হবে। নেশার বিরুদ্ধে লাগাতর অভিযান চালানো হচ্ছে। এজন্য এসআইটি (স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম) গঠন করা হয়েছে। তবে শুধু সরকারের একার পক্ষে এই কাজ সম্ভব নয়। এজন্য বিশেষভাবে এগিয়ে আসতে হবে যুব সমাজকে। 
বৃহস্পতিবার আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এভিবিপি) ৭৫ তম অমৃত মহোৎসবের সূচনা করে এই আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। তিনি বলেন, যুব সমাজই দেশ ও রাজ্য গড়ার লক্ষ্যে অন্যতম বড় সম্পদ। যেটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবসময় বলে থাকেন। 
এই কর্মসূচির অন্যতম প্রধান বক্তা হিসেবে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় সম্পদ যুব সমাজ। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬৫ শতাংশই যুব শক্তি। এজন্য গর্ববোধ হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও সব জায়গায় যুব সমাজকে দেশের অন্যতম বড় সম্পদ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন। কিন্তু ৭০ এর দশকে স্কুল কলেজ কি অবস্থায় ছিল সেটা প্রত্যক্ষ হয়েছে। দেখা গেছে, সেসময় স্কুল কলেজে ছাত্রছাত্রীদের উপর কমিউনিস্টদের ভাবনা চিন্তা, মার্কসবাদ, লেনিনবাদ, চিনের চিন্তাভাবনা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। রীতিমতো ছাত্রছাত্রীদের রেড বুক পড়ানো হতো এবং তাদের ব্রেন ওয়াশ করা হতো। দেশ কবেই স্বাধীন হয়েছে। দেশের জন্য আত্মবলিদান দেওয়া ব্যক্তিত্বদের উপেক্ষা করে তারা যেন নতুনভাবে দেশ স্বাধীন করার ভাবনা চিন্তায় মগ্ন হয়ে থাকতো। 
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে স্কুল কলেজগুলিতে এভিবিপির সংগঠন অনেক মজবুত হয়েছে। তারা দেশের সেবা এবং দেশকে আরো শক্তিশালী করার চিন্তাভাবনা করছে। এভিবিপির প্রেরণায় কমিউনিস্টদের ধ্বংসাত্মক মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে এই প্রজন্ম। যুবরাই দেশ ও রাজ্য গড়ার অন্যতম বড় সম্পদ। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, আমরা বর্তমান, অতীত সম্পর্কে জানি। কিন্তু ভবিষ্যত কি হবে সেটা জানি না। তাই এমন কাজ করতে হবে যাতে মানুষ ভবিষ্যতেও আমাদের মনে রাখে। আর এই কাজ করতে পারে যুবরাই। অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের কার্যকর্তাদের সৎ ও নিষ্ঠাবান হতে হবে। সমাজ থেকে শুরু করে পাড়ার অলিগলি বা যেকোন জায়গায় মানুষ দেখলে চিনতে পারে বা জানতে পারে যে তারা বিদ্যার্থী পরিষদের কার্যকর্তা। আত্মনির্ভর ভারত, আত্মনির্ভর ত্রিপুরা গড়তে দায়িত্ব নিতে হবে তাদের। এজন্য স্বামী বিবেকানন্দের ভাবধারা ও আদর্শকে পাথেয় করে এগিয়ে যেতে হবে। স্বামীজী সম্পর্কে জানতে বুঝতে তাঁর সম্পর্কে আরো জানতে হবে, পড়তে হবে। 
এর পাশাপাশি নেশামুক্ত ত্রিপুরা গড়ে তোলার লক্ষ্যে যুব সমাজকে আরো এগিয়ে আসার আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যে কঠোরভাবে নেশার বিরুদ্ধে মোকাবিলা করার হুশিয়ারিও দেন তিনি। এই প্রসঙ্গে কমিউনিস্ট জমানায় নেশার দরুণ কয়েক প্রজন্ম ধ্বংস হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যকে আরো উন্নত করা এবং শক্তিশালী রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার প্রসার ঘটানোর লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে ত্রিপুরা। বর্তমানে রাজ্যে মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। বেসরকারিভাবেও রাজ্যে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীতে ত্রিপুরা এডুকেশন হাব হয়ে উঠবে। রাজ্যের স্কুলগুলিতে স্মার্ট ক্লাশ, বিদ্যাজোতি প্রকল্পে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, জাতীয় শিক্ষা নীতি চালু করা ইত্যাদি বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। 
সেই সঙ্গে যুব সমাজকে দেশাত্মবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও রাজ্যকে আরো শক্তিশালী করার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এই প্রসঙ্গে আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের সময়ে হার ঘর তিরঙ্গা, মেরি মাটি মেরি দেশ সহ বিভিন্ন দেশাত্মবোধক কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন তিনি। 
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের কার্যকর্তা কমল কুন্ডু, বিশ্বনাথ রায় সহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্ব। এছাড়া অনুষ্ঠানে অংশ নেয় বিভিন্ন স্কুল কলেজ থেকে সংগঠনের সদস্য সদস্যাগণ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ