Advertisement

Responsive Advertisement

সর্বশ্রেষ্ঠ প্রমাণ করতে গিয়ে ক্রমশ হাসির খোরাকে পরিণত হচ্ছেন ৬ আগরতলার কংগ্রেস নেতা: মুখ্যমন্ত্রী


আগরতলা, ১৪ জুলাই: নিজেকে সর্বশ্রেষ্ঠ প্রমাণ করতে গিয়ে একের পর এক দলবদল করে শোলে সিনেমার আশ্রানীর মত হাসির পাত্রে পরিণত করছেন ৬ আগরতলার কংগ্রেস নেতা। বর্তমানে তার অবস্থা বর্ণনা করতে গিয়ে শুক্রবার দক্ষিণ জেলা সফরকালে এভাবেই ব্যাখ্যা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা। তার আচরণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী তাকে সবজান্তা নেতা নামেও ভূষিত করেন। 
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাম নেতা জিতেন চৌধুরী বিজেপিকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য কাউন্ট ডাউন করছিল, ফলাফল ঘোষণার পর দেখা গেল কাউন্ট ডাউন আসলে তাদের হয়েছে। একই ভাবে ৬ আগরতলায় বসে বামদের বন্ধু নেতা বিজেপি সম্পর্কে নিজের অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছিলেন মাইক্রোস্কোপ দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা তাকে অনেক দিন খুঁজেই পাননি নির্বাচক মন্ডলী। মুখ্যমন্ত্রী এইসব নেতাদের মুখোশ আবার খুলে দিলেন।
 সেই সঙ্গে তিনি এদিন বিধানসভা নির্বাচনে দক্ষিণ জেলার ফলাফল নিয়ে সন্তোষ ব্যক্ত করেন। তবে সরকার এত কাজ করার পরও দক্ষিণ জেলার দুটি জয়ী আসন কেন হাতছাড়া হলো এই বিষয়টি পর্যালোচনা করার জন্য স্থানীয় নেতৃত্বদের প্রতি আহ্বান রাখেন।
লাল হাত ও সাদা হাত মিলে এখন একাকার। যারা বিজেপিতে ছিল তারা আবার কংগ্রেসে ফিরে গিয়ে বলার চেষ্টা করছে মানুষের জন্য কোন কাজ করতে পারেনি বিজেপিতে থেকে তাই তারা কংগ্রেসে ফিরে গেছে। কিন্তু তাদের রাজনৈতিক জীবনচক্র আরশোলার জীবন চক্রের মত, কংগ্রেস থেকে তৃণমূল তারপর বিজেপিতে, এবার আবার ঘুরে ফিরে কংগ্রেসে ফিরে গেল। আসলে তারা নিজেদের সুবিধার জন্য দল পাল্টায়, তাই এসব সুবিধাবাদীদের কাছ থেকে নিজেদের সতর্ক রাখার পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা। তবে এই দল বদলু নেতা ধীরে ধীরে নিজের দলেই ক্রমশ কোনঠাসা হয়ে পড়ছেন। তার প্রমাণ পাওয়া গেল এবারের বিধানসভা অধিবেশনে। বাজেট অধিবেশনের শুরুতেই সভাকে বানচাল করার চেষ্টা করেছিলেন তখন বিধানসভার রুল অনুসারে যখন অধ্যক্ষ সভা থেকে বহিষ্কার করেন তখন তিনি ভেবেছিলেন যে তার সঙ্গে অন্যান্যরাও বয়কট করবেন কিন্তু নিজের ফলের সদস্যরাই সঙ্গ দিলেন না। তার এই অঙ্গ ভঙ্গের বিষয়টাকে বুঝানোর জন্য এদিন মুখ্যমন্ত্রী শোলে সিনেমার বিখ্যাত সেই কমেডি সিনের সঙ্গে তুলনা করলেন, যেখানে দেখা যায় জেলার আস্রানি তার সঙ্গে থাকা পুলিশদের নির্দেশ দিয়ে বলেছিলেন অর্ধেক ডানদিকে এবং অর্ধেক বামদিকে চলে যাওয়ার জন্য। বাকিদের তার পিছনে আসার কথা বলেছিলেন কিন্তু পরবর্তী সময় দেখা গেল তার পেছনে কেউ নেই তিনি একা। আগামী দিনে যে এই দলবদলু নেতার অবস্থা এমন হতে যাচ্ছে তা বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী এদিন।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তাদের কিছু পকেট রয়েছে, এর থেকে বাদ নেই দক্ষিণ জেলা। তাই দক্ষিণ জেলার যারা তাদের সঙ্গে রয়েছে তাদেরকে সতর্ক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারা হচ্ছে ইউজ এন্ড থ্রো, প্রয়োজনের সময় মানুষদেরকে তারা ব্যবহার করে এবং প্রয়োজন শেষ হয়ে গেলে ছুঁড়ে ফেলে দেয় এটাই তাদের বৈশিষ্ট্য। তাই যারা এখনো তাদের সাথে রয়েছে তাদেরকে সঙ্গ ত্যাগ করে আসার আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।
জনজাতি কল্যাণ দপ্তরে চার গুণ বেশি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে এবারের বাজেটে। মূলত জনজাতি অংশের মানুষের উন্নয়নের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইভাবে সমাজের সকল অংশের মানুষের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে বাজেটের সব ক্ষেত্রেই বাড়তি অর্থের সংস্থান করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গোটা দেশ এবং রাজ্যের ব্যাপক উন্নতি হচ্ছে, তাই আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির জয় নিশ্চিত। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের দুটি লোকসভা আসন জয়ী করে প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেওয়ার আহবান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।
সেদিন দক্ষিণ জেলা সফরের একাধিক জায়গায় বক্তব্য রাখার সময় এই বিষয়গুলি উঠে আসে মুখ্যমন্ত্রীর কথা। এভাবে শালীনতা বজায় রেখে বিরোধীদের ইটের জবাব পাথরে দেওয়ায় সভাস্থলগুলোতে উপস্থিত সকলে হাততালিতে ভরিয়ে দেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ