Advertisement

Responsive Advertisement

বড়জলা কৃষক বন্ধু কেন্দ্রে আলু গাছের কান্ড থেকে চারা উৎপাদন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

আগরতলা, ১৯ জুলাই : রাজ্যের আলু চাষে আরো একটি নতুন প্রযুক্তি যুক্ত হতে চলছে। এই পদ্ধতিতে আলু গাছের কান্ড থেকে তৈরি হবে নতুন আলু চারা। যে চারা অত্যন্ত সস্তা হবে, ফলে চাষিরা আর্থিক ভাবে আরো লাভবান হবেন। রাজ্য সরকারের উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ বিভাগ ইতিমধ্যে এই আলু চাষকে কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয় করে তোলার লক্ষ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছে। 
রাজ্যের আলু চাষীদের আরো বেশী সুবিধার কথা কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের অন্তর্গত উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ বিভাগ এক বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে আমেরিকা মহাদেশের পেরুর ইন্টারন্যাশনাল পটাটো সেন্টারের সঙ্গে এক বিশেষ মৌ স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির ফলে পেরুর ইন্টারন্যাশনাল পটাটো সেন্টারের তরফে আলু চাষীদেরকে উন্নত জাতের আলুর চারা সরবরাহ করছে, চাষীদের আলু চাষের বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বুধবার রাজধানী আগরতলার বড়জলা এলাকার কৃষক বন্ধু কেন্দ্রে এক বিশেষ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এদিনের এই প্রশিক্ষণ শিবিরের উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল পটাটো সেন্টারের মেঘালয় শাখার প্রজেক্ট ম্যানেজার সিদ্ধা রাও জে, উদ্যান এবং মৃত্তিকা সংরক্ষণ ডিরেক্টরেটের ডেপুটি ডিরেক্টর রাজীব ঘোষ, নাগিছড়া এলাকার উদ্যান এবং ফল গবেষণা কেন্দ্রের টিস্যু কালচার ল্যাবের আধিকারিক অরিন মজুমদার, নতুননগর কৃষক বন্ধু কেন্দ্রের সেক্টর অফিসার অন্তরা চৌধুরী, বামুটিয়া ব্লকের বি টি এম ড. অনামিকা নাথ প্রমুখ। এদিনের এই কর্মশালায় স্থানীয় এলাকার প্রায় ২৫ জন আলু চাষী অংশ নিয়ে ছিলেন। এতে উপস্থিত আধিকারিকরা আলু চাষের এই বিশেষ পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনার পাশাপাশি ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করেন। সেই সঙ্গে কৃষকদের নানা প্রশ্নেরও জবাব দেন তারা।
ইন্টারন্যাশনাল পটাটো সেন্টারের মেঘালয় শাখার প্রজেক্ট ম্যানেজার সিদ্ধা রাও জে এই প্রযুক্তি সম্পর্কে উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমকে বলতে গিয়ে জানান, এই পদ্ধতিতে আলু চাষের জন্য ছোট আলু বা দানা বীজের প্রয়োজন হয় না, আলু গাছের বিশেষ অংশ কেটে কেটে তা থেকে চারা তৈরি করা হয় এবং এগুলো মাঠে চাষ করে আলু উৎপাদন করা হয়। অন্যান্য ভাবে আলু চাষের তুলনায় এই পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ এবং সস্তা, তাই চাষীরা আর্থিক ভাবে বেশী লাভবান হবেন। চার পাঁচটি রাজ্যে এই পদ্ধতিতে বাণিজ্যিক ভাবে আলু চাষ শুরু হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গাতে এই বিষয়ে চাষীদের সঙ্গে আলোচনা করে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে চাষের সুবিধা তুলে ধরা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে আলু চাষ করলে বীজের জন্য অন্যের উপর নির্ভর করতে হয় না এবং আলু অধিক ফলন হয়ে থাকে। বর্তমানে তাদেরকে এই বিষয়ে বলা হলেও নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে রাজ্যে আলু চাষের মরশুমে মাঠে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে অরিন মজুমদার বলেন, রাজ্যের আলু চাষিরা নানা সময় আলু বীজ নিয়ে সমস্যায় পড়েন। এই চুক্তি হওয়ার ফলে চাষীদের এই সমস্যা দূর হয়ে যাবে আগামী দিনে। এর ফলে একদিকে যেমন আলুর উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে নানা ধরনের রোগের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন চাষিরা। এই উদ্দেশ্যে নাগিছড়ার উদ্যান এবং ফল গবেষণা কেন্দ্রে বিশেষ আলু চারা উৎপাদন করার জন্য একটি গ্রীন হাউজ সেড তৈরি করা হচ্ছে। এখানে টিস্যু কালচার লেগে উৎপাদিত চারাগুলিকে লালন পালন করা হবে এবং পরবর্তী সময় চাষীদের দেওয়া হবে। প্রাথমিক অবস্থায় ৫০হাজার চারা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এই চারা গুলোকে কৃষকদের ৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা হবে বলেও জানান। এই প্রযুক্তি আগামী দিনের রাজ্যের আলু চাষীদের মধ্যে নতুন এক সাফল্য নিয়ে আসবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ