Advertisement

Responsive Advertisement

দেশ বিভাজনের ফল ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভোগ করবে, বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবসে বললেন মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ১৪আগস্ট: দেশ বিভাজনের ফলে আমাদের সংস্কৃতি পরম্পরা চিন্তা-ভাবনার বিভাজন হয়েছে। তাই আর কোন বিভাজন নয়। এই অভিমত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহার। আগরতলায় বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এই কথাগুলো বলেন। 
সারা দেশের সঙ্গে রাজ্য জুড়ে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হয় বিভাজন বিভীষিকা স্মৃতি দিবস ২০২৩। ইতিহাসের এই ভয়ানক স্মৃতি দিবস উপলক্ষে সোমবার বিকেলে আগরতলায় এক আলোচনাসভা ও বিভাজনের সময়কালের বিভিন্ন ছবি নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। ত্রিপুরা সরকারের তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত এই আলোচনাসভায় বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা। সেই সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মন, রাজ্য সরকারের সমাজ কল্যাণ এবং সমাজ শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায়, রাজ্যের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জগদীশ গনচৌধুরী, এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সত্যদেব পোদ্দার, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব প্রদীপ চক্রবর্তী।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন এই দিনটি উদযাপন করা হচ্ছে, বিশেষ এই দিনের তাৎপর্য কি তা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিস্তারিত ভাবে উল্লেখ করেছেন। দেশ বিভাজনের ফলে পাঞ্জাব এবং বাংলার মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। পাঞ্জাব এবং বাংলাকে ভেঙ্গে আলাদা করে দেওয়া হল। হিন্দুদের পাশাপাশি বহু মুসলিম নেতারাও এই বিভাজন চাননি। দেশ বিভাজনের জন্য অনেকেই না জেনে মহাত্মা গান্ধীকে দোষারোপ করেন। কিন্তু তিনি এই বিভাজন রুখে দেওয়ার জন্য বলে ছিলেন, যদি দেশকে ভাগ করতে হয় তাহলে তার মৃতদেহের উপর দিয়ে যেতে হবে। 
দেশ বিভাজন শুধুমাত্র একটি দেশকে বিভাজিত করেনি। এই বিভাজন হয়েছে যেভাবে একটি শরীরকে কেটে আলাদা করা হয় ঠিক সেই ভাবে। এর ফলে আমাদের সংস্কৃতি পরম্পরা চিন্তা-ভাবনার বিভাজন হয়েছে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী আহ্বান রাখেন আর বিভাজন যেন না হয়। ১৯৪৭ সালে একবার দেশ বিভাজিত হয়, তার মাত্র কয়েক বছর পর ১৯৭১ সালে আবারো পাকিস্তান বিভাজিত হয়। বিভাজনের এই বিষয়গুলো স্মরণ করার জন্যই এই দিবস পালন করা হয় বলেও জানান। মঙ্গলবার দেশের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস পালন করা হবে। কিন্তু আমাদের ইতিহাস ভুললে চলবে না। মাঝে মাঝে আমরা ইতিহাস ভুলে যাই, তাই প্রধানমন্ত্রী এই দিবস উদযাপনের কথা বলছেন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই বিভাজনের ফল আগেও মানুষ ভোগ করেছেন, বর্তমান সময়ের মানুষও এই বিভাজনের ফল ভোগছেন। এর রেশ আগামী প্রজন্ম ভোগ করবে। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই পরিস্থিতি থেকেও দেশকে উন্নতি শিখরে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করছেন। এই স্মরণের মাধ্যমে যারা দেশকে স্বাধীন করেছে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আলোচনা সভার পাশাপাশি এদিন রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের বাইরে ইতিহাসের সেই বিভীষিকাময় সময়ের আলোকচিত্রের এক প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। আলোচনা সবার শেষে মুখ্যমন্ত্রী এই প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং প্রদর্শনী ঘুরে দেখে ছবিগুলো প্রত্যক্ষ করেন।
সবশেষে র‍্যালি আয়োজন করা হয়, এতে অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী। এই র‍্যালিটি রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে উজ্জয়ন্ত প্রাসাদ পোস্ট অফিস চৌমুহনী হয়ে সিটি সেন্টারের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এতে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ হাতে জাতীয় পতাকা স্বাধীনতা সংগ্রামের ছবি এবং মোমবাতি নিয়ে অংশগ্রহণ করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ