Advertisement

Responsive Advertisement

স্বাস্থ্য পরিষেবাকে সুনিশ্চিত করতে মুখ্যমন্ত্রী আরোগ্য যোজনায় ৫৯কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে: মুখ্যমন্ত্রী

আগরতলা, ১৩ আগস্ট: রাজ্যের যে সকল মানুষ প্রধানমন্ত্রী আরোগ্য যোজনার অধীনে আসেনি তাদেরকেও সংযুক্ত করার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী আরোগ্য যোজনা চালু করা হয়েছে। এর জন্য রাজ্য সরকারের তরফে এবছরের বাজেটে প্রায় ৫৯কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। রবিবার রক্তদান শিবিরে উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী একথা জানান। পাশাপাশি তিনি আরো বলেন সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে রাজ্য সরকার তাই এইসব পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। 
রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে তিনটি রক্তদান শিবিরে অংশ নিয়ে রক্তদাতাদের উৎসাহিত করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা। এদিন প্রথম তিনি যান রাজধানীর ভট্টপুকুর এলাকার নিবেদিতা সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত রক্তদান শিবিরে। তারপর তিনি যান উত্তর বড়দোয়ালী রিক্রিয়েশন সেন্টারের নবনির্মিত পাকা ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন এবং রক্তদান শিবিরে। এরপর মুখ্যমন্ত্রী যান রাজধানীর শিবনগর এলাকার দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত রক্তদান শিবিরে।
নিবেদিতা সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত রক্তদান শিবিরের মুখ্যমন্ত্রী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, মানুষের জীবনে রক্ত অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শরীরে অক্সিজেনের যোগান দেওয়া থেকে শুরু করে দূষিত কার্বন-ডাই-অক্সাইড বের করে নিয়ে আসার কাজ সহ প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের পরিচালন হয়ে থাকে রক্তের মাধ্যমে, তা আমাদের সকলেরই জানা। তাই শরীরে রক্তের স্বল্পতা দেখা দিলে সমস্যা সৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতিতে মুমূর্ষু রোগীর জন্য রক্ত সবসময় মজুদ রাখতে হয়। রাজ্যে বর্তমানে মোট ১৪ টি ব্লাড ব্যাংক রয়েছে, এর মধ্যে বারোটি সরকারি এবং দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। রক্তে মূলত চারটি উপাদান রয়েছে তাই একজন রক্ত দিলে চারজন মুমূর্ষ রোগীকে বাঁচানো সম্ভব। রাজ্যে বর্তমানে রক্ত থেকে এই আলাদা আলাদা উপাদান গুলোকে পৃথক করার ব্যবস্থা রয়েছে। রাজ্যে এমন কেন্দ্র সাতটি রয়েছে।
সেই সঙ্গে তিনি আরো বলেন বিধানসভা নির্বাচনে সময় রাজ্যে কিছুটা রক্তের অভাব দেখা যায়, তবে নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর তিনি রাজ্যবাসীর কাছে আহ্বান রেখেছিলেন স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করার জন্য। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন ক্লাব সামাজিক সংস্থার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্কুল কলেজ ব্যবসায়ী সকলে এগিয়ে আসে এবং প্রয়োজনীয় রক্তের ব্যবস্থা করা হয়। জনসংখ্যার ন্যূনতম এক শতাংশ হারে রক্ত ব্লাড ব্যাংকগুলিতে মজুদ থাকতে হয়। সেই হিসাবে যদি ধরে নেওয়া যায় বর্তমানে রাজ্যের জনসংখ্যা ৪০ লক্ষ সেখানে ৪০ হাজার ইউনিট রক্ত মজুদ থাকতে হবে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের রাজ্যে প্রায় ৪২ হাজার ইউনিট রক্ত সংগৃহীত হয়েছে। সকলে যেভাবে রক্তদানে এগিয়ে আসছেন তার ফলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রক্ত সংগ্রহের পরিমাণ আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
সেই সঙ্গে তিনি আরো জানান এই এলাকায় রাস্তাঘাটের প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরাই এদিন তাকে জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবসময় উন্নয়নের কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আদর্শকে অনুপ্রেরণা হিসেবে গ্রহণ করে বর্তমান সরকার মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। রক্তের যেমন কোন ধর্ম হয় না তেমনি বর্তমান সরকার সমাজের সকল অংশের মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে পানীয় জল রাস্তাঘাট বিদ্যুৎ পরিষেবা সবকিছুর উন্নয়ন করে যাচ্ছে। রাজ্যে যেখানে পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা ৩ শতাংশ ছিল বর্তমান সরকার আন্তরিক ভাবে কাজ করে তা প্রায় ৬৬শতাংশে পৌঁছে দিয়েছে। সারা রাজ্যের সব জায়গার উন্নতি করাই সরকারের লক্ষ্য। বিশেষ করে স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির জন্য কাজ করছে সরকার। বর্তমানে সারা রাজ্যে সাতটি সুপার স্পেশালিটি সুবিধা সম্পন্ন হাসপাতাল চালু করা হয়েছে। আগে যেখানে মানুষ সামান্য কারণে বহি: রাজ্যে চলে যেতেন চিকিৎসার জন্য, কিন্তু এখন উন্নত চিকিৎসা সেবা রাজ্যেই পাচ্ছেন।
 সেইসঙ্গে রাজ্যে চিকিৎসকদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেডিকেল কলেজগুলোতেও পোস্ট গ্রাজুয়েশন পড়ার জন্য আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এবছর থেকে ডেন্টাল কলেজের পড়াশুনা চালু হয়ে যাবে। কিছুদিন আগে নার্সিং কলেজের উদ্বোধন করা হয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্যের পরিকাটামো যাতে ভালো হয় এর জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করা হয়েছে। এবছর রাজ্য বাজেটেও স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বৃদ্ধি করা হয়েছে। নতুন করে ১৩ লক্ষ আয়ুষ্মান কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরোগ্য যোজনার অধীনে যারা ছিল না তাদেরকেও সংযুক্ত করার লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী আরোগ্য যোজনা চালু করা হয়েছে। এর জন্য বাজেটে প্রায় ৫৯কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজ্যে আরো ১০০টি নতুন সাব সেন্টার স্থাপনের জন্য বাজেটে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে সব মিলিয়ে রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে বলে জানান তিনি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ