আগরতলা, ২ সেপ্টেম্বর: মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে ভারতীয় জনতা পার্টি নেতৃত্বাধীন ডাবল ইঞ্জিন সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আশীর্বাদে ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি - আইপিএফটি সরকার। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত দিশায় কাজ করেছে সরকার। দ্বিতীয় বার ২০২৩ এর ভোটেও অনেকে বলেছিল যে তারা সরকার গড়বে। কিন্তু জনগনের আশীর্বাদে পুনরায় বিজেপি - আইপিএফটি সরকার ক্ষমতায় এসেছে। এবারের উপনির্বাচনেও জয়ী হবেন বিজেপি মনোনীত প্রার্থীরা।
আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ধনপুর ও বক্সনগরে উপনির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার সোনামুড়া মহকুমার কাঁঠালিয়ায় নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। আসন্ন উপনির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির মনোনীত প্রার্থী হয়ে লড়াইয়ের ময়দানে রয়েছেন ধনপুর কেন্দ্রে বিন্দু দেবনাথ এবং বক্সনগর কেন্দ্রে তফাজ্জল হোসেন। দুই প্রার্থীর সমর্থনেই প্রথম থেকে রাজনৈতিক প্রচারে রয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। এই অবস্থায় সরব প্রচার শেষের একদিন আগে শনিবার বিন্দু দেবনাথের সমর্থনে ফের একবার নির্বাচনী সভায় জনতাকে সম্বোধন করলেন তিনি।
জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই দুই কেন্দ্রে ডোর টু ডোর প্রচারে গিয়ে মানুষ বলছে তারা অতীতে ভুল পথে পরিচালিত হয়েছে। কিন্তু এখন আর সেই ভুল হবে না। মানুষ দেখছেন ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্ব ও কার্যকর্তাগণ মানুষের পাশে থাকতে চায় এবং তাদের সমস্যা সমাধানে কাজ করতে চায়। আমাদের দল সব সময় রাজ্যের মানুষের পাশে আছে। এই সরকার সব সময় জনগণের কথা চিন্তা করে। কিন্তু বিগত সরকার শুধু সমস্যা সৃষ্টির জন্য রাজ্য শাসন করেছিল। আর মানুষের মধ্যে ভাগাভাগির রাজনীতি খেলেছে। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকার 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ' নীতিতে বিশ্বাস করে। ভারতীয় জনতা পার্টির বর্তমান সরকার কখনোই ধর্ম এবং বর্ণের ভিত্তিতে মানুষকে দেখে না।
মুখ্যমন্ত্রী ডা: সাহা বলেন, এক ত্রিপুরা শ্রেষ্ঠ ত্রিপুরা গড়ে তুলতে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এই সরকার মানুষের জন্য সামাজিক পেনশনের পরিমাণও বাড়িয়েছি। কিন্তু কিছু মানুষ ভেবেছে যে তারা শুধু মানুষকে বোকা বানিয়ে রাজনীতি করবে। তারা তাদের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ দিয়ে বিধানসভার পবিত্রতা নষ্ট করেছে এবং এখন সিপিএমের সাথে জোট করেছে। এই উপনির্বাচনে তারা গোপন বৈঠকও করেছিল। তারপরেও কংগ্রেস নেতারা বলছেন যে তারা প্রচারের জন্য কোন আমন্ত্রণ পাচ্ছেন না। তবে এটা কি ধরনের মিটিং ছিল? প্রশ্ন রাখেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, অনেক মানুষ কংগ্রেস এবং সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় এখন বিজেপির প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। আর এই সরকার জনগণের সমস্যা সমাধানের সরকার, সমস্যা সৃষ্টির জন্য নয়। মানুষ দেখেছে আগের সিপিএম সরকার কীভাবে সমস্যা তৈরি করেছে। রাজ্যের সার্বিক উন্নয়ন এবং মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে নিরন্তর কাজ করার জন্য মানুষ ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে থাকবে।
এদিন জনসভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপি প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ, জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা সহ দলের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব।
এদিকে, একইদিনে বক্সনগরে বিজেপির মনোনীত প্রার্থী তফাজ্জল হোসেনের সমর্থনে এক জনসভায় অংশ গ্রহণ করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এই সভায় প্রচুর সংখ্যায় সংখ্যালঘু অংশের নারী পুরুষ যোগদান করেন। প্রধান বক্তার বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনমুখী ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুযোগ্য নেতৃত্বে এবং এক্ট ইস্ট পলিসির কারণে বিকাশের লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি।
এদিন বক্সনগর কমিউনিটি হল মাঠে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, সাধারণ সম্পাদক পাপিয়া দত্ত, দলের প্রার্থী তফাজ্জল হোসেন ছাড়াও অন্যান্য নেতৃত্ব। পাশাপাশি জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বিভিন্ন বিরোধী দল ছেড়ে ২৯৩ জন ভোটার ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করেন।
0 মন্তব্যসমূহ