আগরতলা, ১৬সেপ্টেম্বর : যুব সমাজকে নেশার ভয়াবহতা সম্পর্কে স্বচেতন করে তোলতে গণেশ ঠাকুরের জনপ্ৰিয়তাকেই বেছে নিলেন আগরতলার এক স্কুল শিক্ষক সমীর দে। তিনি নিজ হাতে সাবান ও ইনজেকশনের সিরিঞ্জ দিয়ে গণেশের মূর্তি তৈরি করেছেন, যার থিম নেশার ভয়াবহতা সম্পর্কে স্বচেতন করা।
আরব সাগরের তীরের মুম্বাই শহর এবং আশেপাশের এলাকাগুলোর অন্যতম বড় উৎসব হচ্ছে গণেশ চতুর্দশী। বলিউডের চিত্র তারকাদের বাড়ি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের বাড়ি এবং সার্বজনীন উদ্যোগে লাখো লাখো গণেশ পূজার আয়োজন করা হয়ে থাকে প্রতি বছর। গণেশ ঠাকুরের এই জনপ্রিয়তা এখন আর আরব সাগরের তীরেই সীমাবদ্ধ নয়। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতের একেবারে প্রান্তিক রাজ্য ত্রিপুরাতেও সমান জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন গণেশ ঠাকুর। তাই এখন প্রতি বছর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে গণেশ পূজার প্যান্ডেলের সংখ্যা। আর এই গণেশ পূজার সঙ্গে সবচেয়ে বেশি জড়িত রয়েছে ত্রিপুরা রাজ্যের যুব সম্প্রদায়। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে গণেশ পূজায় শামিল হচ্ছে।
আবার এই যুব সমাজের একটা বড় অংশ দিন দিন নেশার করাল গ্রাসে তলিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে যুব সমাজকে নেশার কুফল সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে জনপ্রিয় গণেশ ঠাকুরকেই বেছে নিলেন আগরতলার হাঁপানিয়া স্কুলের ইংরেজি বিষয়ে শিক্ষক সমীর দে। তিনি বলেন, বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ড্রাগ ব্যবহার করা হচ্ছে শরীরের শিরা পথে সিরিনঞ্জের মাধ্যমে। যেহেতু সিরিজ দিয়ে সরাসরি রক্তের মধ্যে ড্রাগ পৌঁছে দেওয়া যায় তাই তুলনা মূলক কম খরচে নেশাশক্ত হওয়া যাচ্ছে। ফলে এই পন্থাকেই অবলম্বন করছে যুব সমাজ। এর ফলে নেশার পাশাপাশি এইচআইভি এইডস সহ নানা মারণবাধ্যি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে যুব সমাজের মধ্যে। যুব সমাজ যাতে নেশার করাল গ্রাস থেকে বেরিয়ে আসে তাই এবছর তিনি গায়ে মাখার সাবান এবং ইঞ্জেকশনের সিরিজ ও সুইচ দিয়ে গণেশ মূর্তি তৈরি করেছেন। পাশাপাশি মূর্তির নিচের সামাজিক বার্তা হিসেবে লিখে দিয়েছেন Say no to drugs। যাতে সকলে ড্রাগসের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন হন এবং অন্যদেরকেও সচেতন করেন এই জন্য শিক্ষক সমীর দে এভাবে শিল্পকর্মটি করেছেন বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানান। ড্রাগসের কুফল সম্পর্কে তুলে ধরার জন্য সমাজের সচেতন মহলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন ধরনের শিল্পকর্ম গড়ার সব তার। তবে তিনি কোন প্রথাগত শিক্ষা নেননি। বিভিন্ন সময় সামাজিক বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে শিল্পকর্ম নিয়মিতভাবে গড়ে থাকেন। মূলত অপ্রয়োজনীয় ফেলনা সামগ্রী দিয়ে কি করে স্বল্প মূল্যে শিল্প সামগ্রী তৈরি করা যায় এটাও তার লক্ষ্য বলে জানান।
0 মন্তব্যসমূহ