আগরতলা, ৩সেপ্টেম্বর : রাজ্যে বর্তমানে মোট ৫৪টি বড় চা বাগান রয়েছে, সেই সঙ্গে আরো কিছু ক্ষুদ্র চাষীও রয়েছে। এই বাগান গুলিতে উৎপাদিত কাঁচা চা পাতাগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করার জন্য মোট ২২টি প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র রয়েছে। এগুলি থেকে বছরের গড়ে ৯০লক্ষ কেজি প্রক্রিয়া জাত চা পাতা উৎপাদিত হচ্ছে।
বর্তমানে রাজ্যে উৎপাদিত চা পাতার গুণগত মান ভালো হওয়ায় এর চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্ধিত চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চা উৎপাদন বৃদ্ধি লক্ষ্যে ত্রিপুরার চা উন্নয়ন নিগম তথা টিটিডিসি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এরমধ্যে কারখানার আধুনিকীকরণ এবং নতুন একটি কারখানা আপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে টিটিডিসি'র চেয়ারম্যান সন্তোষ সাহা জানিয়েছেন। এর ফলে নিজেদের উৎপাদন আরো দ্রুত ও বৃদ্ধি করা যাবে।
রাজ্যে বর্তমানে মোট ৫৪টি বড় চা বাগান রয়েছে, সেই সঙ্গে আরো অনেক ক্ষুদ্র চাষী রয়েছে। রাজ্যের উৎপাদিত এই কাঁচা চা পাতাগুলোকে প্রক্রিয়াজাত করার জন্য মোট ২২টি প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে দুইটি প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র টিটিডিসি'র নিজস্ব এবং বাকিগুলি ব্যক্তি মালিকানাধীন এবং সমবায় পরিচালিত।
টিটিডিসি'র চা প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি রয়েছে রাজধানীর পার্শবর্তী দুর্গাবাড়ি এলাকায় এবং অপরটি রয়েছে পশ্চিম জেলার ব্রহ্মকুণ্ড এলাকায়। সন্তোষ সাহা জানান ব্রহ্মকুণ্ড এলাকার চা প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রের আধুনিকি করন করা হবে। সম্প্রতি নিগমের তরফে উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ'র কাছে আর্থিক সহায়তার আবেদন করা হয়েছিল। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে। সরকারের গ্রাম উন্নয়ন দপ্তর কারখানারটিকে আধুনিকিকরন করবে। আধুনিকীকরণের ফলে কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা খুব বেশি বৃদ্ধি পাবে না, তবে স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় উৎপাদন খরচ অনেকটাই কমে যাবে বলে জানান তিনি।
সেই সঙ্গে রাজ্যের উত্তর জেলার অন্তর্গত মাছমারা এলাকার চা বাগানে নতুন করে একটি মিনি চা প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র স্থাপন করবে টিটিডিসি। ইতিমধ্যে ত্রিপুরার শিল্প উন্নয়ন নিগমকে এই কারখানাতে স্থাপনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এই কারখানার স্থাপনের জন্য রাজ্য সরকারের জনজাতি কল্যাণ দপ্তর এক কোটি টাকা দিয়েছে। এই অর্থ ইতিমধ্যে চা উন্নয়ন নিগম শিল্প ত্রিপুরা উন্নয়ন নিগমের কাছে দিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন। মাছমারা এলাকায় নিগমের একটি বড় চা বাগান রয়েছে। পাশাপাশি এই এলাকায় বহু ক্ষুদ্র চা চাষি রয়েছেন। বর্তমানে তাদের উৎপাদিত চা পাতাগুলো ঊনকোটি জেলার কৈলাসহরের বেসরকারি মালিকানাধীন চা প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে তুলনামূলক কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। বাগানে মিনি প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রটি হয়ে গেলে বাগানসহ ক্ষুদ্র চা চাষীদের চা পাতা ওই প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে চলে যাবে এবং চাষিরা আর্থিক ভাবে লাভবান হবেন।
সেই সঙ্গে তিনি আরো জানান রাজ্যের সবকটি চা বাগান মিলিয়ে বছরের গড়ে ৯০লক্ষ কেজি চা পাতা উৎপাদিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগম পরিচালিত দুটি কারখানায় উৎপাদন হয় ৭লক্ষ কেজি। রাজ্যে উৎপাদিত এই চা পাতা গুলোকে কলকাতা এবং গৌহাটি চা নিলাম কেন্দ্রে নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়ে থাকে বলেও জানান সন্তোষ সাহা। সব মিলিয়ে বর্তমান সরকারের হাত ধরে রাজ্যের চা উন্নয়ন নিগম ব্যাপকভাবে উন্নতি লাভ করেছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
0 মন্তব্যসমূহ