আগরতলা, ২৯সেপ্টেম্বর : ত্রিপুরায় এখন শান্তির পরিবেশ বিরাজ করছে। শান্তি হলো শিল্প স্থাপনের মূল বিষয়। শান্তি আছে বলেই ত্রিপুরাতে নতুন নতুন শিল্প গড়ে উঠছে। আজ বোধজংনগর শিল্পনগরীতে ১০০ জন যুবক যুবতীদের শিল্প স্থাপনের অভিজ্ঞতা সঞ্চয়মূলক ভ্রমণ ও উৎসাহবর্ধক কর্মশালার উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা। তিনি বলেন, রাজ্যের অর্থনীতির বিকাশে শিল্প স্থাপনে উদ্যোগীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। শিল্প স্থাপনের প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন। রাজ্যে এখন সড়ক, রেল, বিমান ইত্যাদি যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব উন্নত। তাই রাজ্যের শিল্পোদ্যোগী থেকে শুরু করে বহিরাজ্যের শিল্পোদ্যোগীরাও ত্রিপুরায় শিল্প গড়তে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হীরা মডেল ত্রিপুরায় ফলপ্রসূ হয়েছে। খুব শীঘ্রই আগরতলা-আখাউড়া রেল সংযোগ চালু হবে। এতে বাংলাদেশের সাথে রেলপথে যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এই যোগাযোগ ব্যবস্থা উভয় দেশের মধ্যে শিল্প ও বাণিজ্যের প্রসারে সহায়ক ভূমিকা নেবে।
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা বলেন, সরকার রাজ্যের সার্বিক বিকাশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সুদক্ষ নেতৃত্বে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি এখন দ্রুতগতিতে উন্নতির পথে এগিয়ে চলেছে। আমাদের রাজ্যে এখন শিল্প স্থাপনের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের যুব ত্রিপুরা, নতুন ত্রিপুরা ও আত্মনির্ভর ত্রিপুরা কর্মসূচিতে প্রতিটি জেলা থেকে ১০০ জন করে যুবক যুবতীকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের জন্য রাজ্যের শিল্পনগরীগুলিতে ভ্রমণ ও উৎসাহবর্ধক কর্মসূচির প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এই ধরনের কর্মসূচিতে বেকার যুবক যুবতীরা শিল্প স্থাপনের অনুপ্রেরণা পাবে। তিনি বলেন, ছোট ছোট শিল্প স্থাপন করেই ভবিষ্যতে বড় শিল্পপতি হওয়া যায়। বোধজংনগরের বাঁশের তৈরি টাইলস দিল্লিতে নতুন সংসদ ভবনে লাগানো হয়েছে। তা ভাবলে গর্ববোধ হয়। রাজ্যের যুবক যুবতীদের যদি সঠিক দিশা দেখানো যায় তাহলে ত্রিপুরার চেহারা পাল্টে যাবে। সবার চেষ্টায় ত্রিপুরা মডেল রাজ্য হিসেবে গড়ে উঠবে। তিনি ইউনিটি মলের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, রাজ্যে সহসাই একটি ইউনিটি মল গড়ে উঠবে। যেখানে প্রতি জেলার পণ্য বিক্রয় ও প্রদর্শিত হবে।
অনুষ্ঠানে শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে যুবক যুবতীদের অনুপ্রেরণা দিচ্ছে। যাতে করে তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। শিল্প স্থাপনে রাজ্যের মহিলাদেরও উৎসাহিত করা হচ্ছে। যাতে করে তারা আত্মনির্ভর হয়ে রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।
অনুষ্ঠানে ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান নবাদল বণিক বলেন, যুবক যুবতীরা যাতে আত্মনির্ভর হয়ে উঠতে পারে সেজন্যই এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিটি জেলা থেকে ১০০ জন করে যুবক যুবতী নিয়ে স্বউদ্যোগে শিল্প স্থাপনের জন্য শিবির করা হবে। এই কর্মসূচিতে আজ গোমতী জেলার যুবক যুবতীরা অংশগ্রহণ করেছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের প্রধান সচিব কে এস শেঠি। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের অধিকর্তা বিশ্বশ্রী বি। উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান সত্যেন্দ্র সিং। অনুষ্ঠানে ‘স্বনির্ভরতা ও স্ব-সমৃদ্ধি' নামক একটি পুস্তিকার আবরণ উন্মোচন করেন অতিথিগণ। এই পুস্তিকার মাধ্যমে বেকার যুবক যুবতীরা কিভাবে সরকারি প্রকল্পগুলি থেকে সাহায্য নিয়ে শিল্প স্থাপন করতে পারে তার উল্লেখ রয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ