আগরতলা, ১৫ অক্টোবর : ত্রিপুরা রাজ্যের শিক্ষক, কর্মচারী ও পেনশনার্সদের মহার্ঘ ভাতা, মহার্ঘ রিলিফ বঞ্চনা এবং রাজ্যের প্রায় চল্লিশ হাজার অনিয়মিত কর্মচারীদের অসহনীয় আর্থিক দুর্দশার ছবি সরকারের গোচরে নেওয়া জন্য কর্মচারী ফেডারেশনের পক্ষ থেকে অবিলম্বে বকেয়া ২২শতাংশ মহার্ঘ ভাতা, মহার্ঘ রিলিফ মঞ্জুর করার, রাজ্যের প্রায় চল্লিশ হাজার অনিয়মিত কর্মচারীর যোগ্যতা অনুসারে নিয়মিত বেতন ক্রম প্রদান। ১০,৩২৩ জন ছাটাই শিক্ষক শিক্ষিকার বিকল্প কর্ম সংস্থান। কেন্দ্রীয় সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ মোতাবেক বেতন কাঠামোর পরিবর্তে শিক্ষক কর্মচারীদের শুধুমাত্র ফিট ম্যান্ট ফ্যাক্টর ২.২৫ এর পরিবর্তে ২.৫৭ করা হয়েছে, তাতে ও আবার করা হয়েছে বৈষম্য। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় বেতনক্রমের তুলনায় রাজ্যের শিক্ষকদের বেতন ক্রম অন্ততঃ তিনধাপ নিচে রযেছে, কেন্দ্রে একজন প্রাথমিক শিক্ষকের প্রারম্ভিক মূল বেতন ৩৫,৪০০ টাকা, রাজ্যের শিক্ষকের প্রারম্ভিক মূলবেতন ২০,৭০০ টাকা।। একজন স্নাতক স্তরে কেন্দ্রীয় শিক্ষকের প্রারম্ভিক মূলবেতন ৪৪,৯০০ টাকা, আর রাজ্যের ক্ষেত্রে ২৭, ৩০০ টাকা। কেন্দ্রে স্নাতকোত্তর শিক্ষকের প্রারম্ভিক মূলবেতন ৪৭,৬০০ টাকা আর রাজ্যের শিক্ষকের প্রারম্ভিক মূলবেতন ৩৭,৪০০ টাকা । ২২শতাংশ মহার্ঘ ভাতা কম পাওয়ার ফলে রাজ্যের শিক্ষক কর্মচারীরা প্রতিমাসে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সর্বনিম্ন ৩৫২০.০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ৪৭, ২৭৮.০০ টাকা। একই ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অবসর প্রাপ্ত কর্মচারীরা।
এখানে উল্লেখ্য যে, পঞ্চদশ অর্থকমিশনের সময় সীমা শেষ হয়ে যাওয়ার পথে, যদি অতিসত্ত্বর কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা প্রদান না হয় তবে অর্থকমিশন রাজ্য সরকারকে বকেয়া মহার্ঘভাতা প্রদানে অর্থ মঞ্জুরে বাধ্য থাকবে না। অর্থ কমিশন শুধুমাত্র রাজ্য সরকারের কমিটেড এক্সপেনডিচার বাবদ অর্থ মঞ্জুর করে থাকে। পূর্বে অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকুরী কাল ১০ বছর হলে তাকে যোগ্যতা অনুসারে বেতনক্রম প্রদান করা হত। এই নিয়ম ছিল বহু সংগ্রামের ফসল। কিন্তু বিজেপি ২০১৮তে ক্ষমতায় এসে অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করনের বদলে No. F. 10 (2) - FIN / 2008, Dated 31-07-2018 নির্দেশনামায় অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণই বন্ধ করে দেয়। যা অমানবিক সিদ্ধান্ত। ইতিমধ্যে বহু অনিয়মিত কর্মচারী অনিয়মিত কর্মচারী হিসাবেই শূন্য হাতে অবসরে গেছেন। ২০১৪ সালে সর্বশেষ শিল্প দপ্তরের ২৭ জন অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করা হয়েছিল।
তাই কর্মচারী ফেডারেশন পোষ্ট অফিস চৌমুহনীর তরফে রাজ্য সরকারকে জানাতে চায় অনতিবিলম্বে শিক্ষক কর্মচারীর ন্যায্য দাবী গুলি মেনে নেওয়া হোক, অতিরিক্ত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির নিরীখে বকেয়া ২২শতাংশ মহার্ঘ ভাতা প্রদানে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সর্ব স্তরের অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করার উদ্যোগ নেওয়া হোক। ছাটাই ১০,৩২৩ জন শিক্ষকের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করুক সরকার, অন্যথায় দাবী আদায়ে গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বৃহত্বর আন্দোলনের পথে পা বাড়াবে ত্রিপুরা সরকারী কর্মচারী ফেডারেশন। রবিবার আগরতলার পোষ্ট অফিস চৌমুহনীর সংগঠন অফিসে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই বিষয়ে দাবি জানানো হয়।
এদিনের এই সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরা সরকারী কর্মচারী ফেডারেশন সভাপতি শান্তি রঞ্জন দেবনাথ, মহাসচিব প্রদীপ ভৌমিক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
0 মন্তব্যসমূহ