Advertisement

Responsive Advertisement

বন্যপ্রাণী রক্ষার জন্য পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখার আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর

আগরতলা, ১৬ অক্টোবর: রাজ্যের বন্যপ্রাণী এবং বন রক্ষায় পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় না রাখলে কারোর বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। তাই বন্যপ্রাণী ও বন উভয়কেই রক্ষা করতে হবে আমাদের। বেঁচে থাকার জন্য আমাদের একে অপরের উপর নির্ভর করতে হয়।
সোমবার দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার বিলোনিয়া মহকুমার জয়চাদপুর স্কুল মাঠে আয়োজিত বন্যপ্রাণী সপ্তাহ উদযাপনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। 
এই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরায় ৭৩ শতাংশ বনভূমি রয়েছে। আমাদের রাজ্যের বনভূমিতে একসময় বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও পাখী দেখা যেত। সময়ের সাথে সাথে বেশকিছু প্রাণী এখন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বন ধ্বংসের ফলেই এমন হয়েছে। তাই শুধু নিজেরাই বাঁচলে হবে না, বন এবং বন্যপ্রাণীদেরও রক্ষা করতে হবে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে রাজ্য সরকার প্রতিবছর বাইসন উৎসব, হর্ণবিল উৎসব, পরিযায়ী পাখিদের জন্য উৎসবের আয়োজন করছে। এছাড়া বনসৃজনের উপর গুরুত্ব দিয়ে বৃক্ষরোপন করা হচ্ছে। বনজ সম্পদকে কাজে লাগিয়ে কর্মসংস্থানেও সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পর্যটন কেন্দ্রগুলিকে সরকার আকর্ষনীয় করে সাজিয়ে তুলছে। রাজ্যে এখন দেশ-বিদেশের পর্যটকগণ আসছেন। পর্যটন ক্ষেত্রে বিকাশের জন্য ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক গৌরভ গাঙ্গুলীকে ত্রিপুরার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করা হয়েছে। এতে রাজ্যের পর্যটন কেন্দ্রগুলির কথা দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে যাবে। এর পাশাপাশি তৃষ্ণা অভয়ারণ্য, প্রজাপতি পার্ক সহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে শিক্ষামূলক ভ্রমণের উদ্যোগ নিতে হবে। 
এদিন দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় ই - অফিসের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার স্বচ্ছ প্রশাসন পরিচালনার জন্য ই-বিধানসভা, ই ক্যাবিনেট, ই-অফিস চালু করেছে। এতে ব্যয় কমার পাশাপাশি সময়ও সাশ্রয় হবে। এছাড়া মহকুমা ও পঞ্চায়েত স্তরে ই-অফিস সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। 
এদিন পর্যটকদের জন্য একটি ই-রিক্সা চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী। সমাপ্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সমবায় মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া, বিধায়ক স্বপ্না মজুমদার, বিধায়ক মাইলাফ্রু মগ, শিল্প ও পর্যটন দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, বন দপ্তরের প্রধান সচিব কে এস শেঠি, মুখ্য বন সংরক্ষক ডা. কে শশীকুমার, দক্ষিণ জেলার জেলাশাসক সাজু ওয়াহিদ এ, দক্ষিণ জেলা পুলিশ সুপার অশোক কুমার সিনহা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি কাকলি দাস দত্ত। 
মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা এদিন তৃষ্ণা অভয়ারণ্যের প্রজাপতি পার্কে বেশ কিছু সময় কাটান। পার্কে বেশকিছু প্রজাপতি ছেড়ে দেন। এর পাশাপাশি বৃক্ষরোপন করেন। প্রজাপতির বিচরণ, খাদ্য, প্রজনন ইত্যাদি বিষয়ে খোঁজখবর নেন। বন্যপ্রাণী সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে খেলাধুলা ও ছবি আঁকা প্রতিযোগিতার আয়োজন করায় সন্তোষ ব্যক্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সম্পর্কে ধারণা তৈরী হবে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ছাত্রছাত্রীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এছাড়া বাইসনের আক্রমণে নিহত হরিপদ শীলের স্ত্রী কবিতা শীলের হাতে ৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ