Advertisement

Responsive Advertisement

সকলের জন্য উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে রাজ্য সরকার: মুখ্যমন্ত্রীর


আগরতলা, ১৪ অক্টোবর: সকলের জন্য উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা সুনিশ্চিত করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে বর্তমান রাজ্য সরকার। সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় হাসপাতালগুলিতে যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন পরিষেবা। যার সুফল পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে উন্নত পরিষেবা যুক্ত হওয়ার কারণে বহিঃরাজ্যে রেফারের সংখ্যাও অনেক হ্রাস পাচ্ছে।
শনিবার আগরতলার গোবিন্দ বল্লভ পন্থ (জিবিপি) হাসপাতালের ৬৩ তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। জিবির কেএলএস অডিটোরিয়ামে প্রতিষ্ঠা দিবসের আয়োজন করা হয়। ৬৩ তম প্রতিষ্ঠা দিবসের অংশ হিসেবে এদিন সুপার স্পেশালিটি ভবন, মহিলাদের জন্য দ্বিতীয় মেডিসিন ওয়ার্ড সহ বেশকিছু নতুন পরিষেবার সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। 
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সভ্যতার অগ্রগতির পাশাপাশি প্রয়োজনীয়তার কারণে জিবি হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জিবির প্রচুর সুখ্যাতি ও নাম রয়েছে। বিশেষ করে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের যেসকল রোগী ও আক্রান্তদের সুস্থ করে তুলতে জিবির চিকিৎসকরা অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। এখনো অনেক সিনিয়র ডাক্তার রয়েছেন যারা ওইসব রোগীদের চিকিৎসার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছিলেন। যে কারণে বাংলাদেশের মানুষ এখনো তাঁদের স্মরণ করেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও এই বিষয়টি অবগত রয়েছেন। যার দরুণ ত্রিপুরাকে আলাদা নজরে দেখা হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পেছনে ত্রিপুরার অবদান যে অনস্বীকার্য সেটা তারা স্বীকার করেন। আর জিবির তৎকালীন সময়ের ডাক্তারগণ জীবন বাঁচিয়েছেন। 
সময়ের সাথে সাথে জিবি হাসপাতাল এখন মেডিকেল কলেজ হয়েছে। এর সার্বিক পরিষেবাও অনেক উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে জিবি হাসপাতালের পরিষেবা কোন অংশে কর্পোরেট সেক্টরের চাইতে কম নয়। জিবির এক একটা বিভাগ খুব সুন্দরভাবে কাজ করছে। জিবির পরিষেবার মান আরো উন্নত করতে স্বাস্থ্য দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগে কথায় কথায় বাইরে রেফার করতে হতো। কিন্তু এখন আর সেটা হয় না। রাজ্য সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন। সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রকল্পে বছরে ৫ লক্ষ টাকা বীমা করে দেওয়া হয়। ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পে প্রায় ১২ লক্ষ মানুষের হাতে আয়ুষ্মান কার্ড তুলে দেওয়া হয়েছে। মূলত, গরীব লোকদের জন্য এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। কিন্তু এই প্রকল্পের বাইরে যারা আছেন তাদের সুবিধার জন্য মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় এবারের বাজেটে ৫৯ কোটি টাকার আর্থিক সংস্থান রাখা হয়েছে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 
মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা আরো বলেন, আইজিএম হাসপাতালে এখন ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে এসে সেই কলেজের উদ্বোধন করে গিয়েছেন। এবছর থেকে ডেন্টাল কলেজে ৫০টি আসন নিয়ে পঠনপাঠন শুরু হয়েছে। এর পাশাপাশি আইজিএম চত্বরে নার্সিং কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। এখান থেকে বিএসসি নার্সিং করার সুযোগ পাবে রাজ্যের ছেলেমেয়েরা। ত্রিপুরা মেডিকেল কলেজও খুব ভালোভাবে চলছে। 

ডাঃ সাহা বলেন, রাজ্য সরকার চায় সবাইকে একসাথে নিয়ে চলতে। সরকারের চিন্তাভাবনা সবার সঙ্গে শেয়ার করতে চায়। বিশেষ করে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে সরকার কি কি কাজ করছে সেটা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চায়। রাজ্য সরকার এবারের বাজেটে আরো প্রায় ১০০টি উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র খোলার জন্য আর্থিক বরাদ্দ রেখেছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলা হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার সেন্টার চালু করা হয়েছে। শান্তিরবাজার, উদয়পুর ও আমবাসায় ট্রমা কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। ধর্মনগরে আরো একটি ট্রমা কেয়ার সেন্টার খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমবাসায় কার্ডিয়াক কেয়ার সেন্টার চালু করা হয়েছে। আর এসমস্ত বিষয় সকলেরই জানা থাকা প্রয়োজন। এছাড়া চিকিৎসা পরিষেবা সংক্রান্ত আরো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব জে কে সিনহা, স্বাস্থ্য দপ্তরের সচিব ডাঃ রাঠোর সন্দীপ রেওয়াজী, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধিকর্তা ডাঃ সুপ্রিয় মল্লিক, মেডিকেল এডুকেশনের অধিকর্তা ডাঃ এইচ পি শর্মা, পরিবার কল্যাণ দপ্তরের অধিকর্তা ডাঃ অঞ্জন দাস, এজিএমসির প্রিন্সিপাল ডাঃ অনুপ কুমার সাহা, ভাইস প্রিন্সিপাল ডাঃ সঞ্জীব কুমার দেববর্মা, জিবিপির মেডিকেল সুপার ডাঃ শঙ্কর চক্রবর্তী সহ অন্যান্য অতিথিগণ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ