আগরতলা, ১৮ অক্টোবর: আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের সমাপ্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষে মেরি মাটি মেরা দেশ অভিযান কর্মসূচি দেশবাসীর মধ্যে দেশাত্মবোধক ভাবনা জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের সবাইকে দেশকে সবকিছুর আগে রাখতে হবে। যেকোন পরিস্থিতিতে সকল দেশবাসীকে দেশাত্মবোধের ভাবনায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা আগরতলার মহাকরণ সংলগ্ন স্ক্র্যাপ গার্ডেনে মেরি মাটি মেরা দেশ অভিযানের রাজ্যভিত্তিক অনুষ্ঠানে একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, দেশবাসীর মধ্যে দেশাত্মবোধের ভাবনা, চিন্তা ও চেতনাকে জাগিয়ে তুলতে এই অভিযানের আয়োজন করা হয়েছিল। আমরা দেশকে মাতৃভূমি বলে সম্বোধন করি। মেরি মাটি মেরা দেশ অভিযানের মাধ্যমে এই সম্বোধনের মাহাত্ম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশবাসীর মনে গেঁথে দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মেরি মাটি মেরা দেশ অভিযানের রাজাভিত্তিক অনুষ্ঠানটি এদিন রাজ্য সচিবালয়ের মুখ্য প্রবেশদ্বারের সন্মুখে স্ক্র্যাপ গার্ডেন সংলগ্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা, মন্ত্রিসভার সদস্য-সদস্যাগণ বিধায়কগণ, আগরতলা পুর নিগমের কর্পোরেটর সহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ জনগণের উপস্থিতিতে একটি রেলি সার্কিট হাউস সংলগ্ন স্থান থেকে শুরু হয়ে স্ক্র্যাপ গার্ডেনে মিলিত হয়। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী প্রথমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পরিবেশিত হয় জাতীয় সংগীত। পরে মুখ্যমন্ত্রী অন্যান্য অতিথিদের উপস্থিতিতে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত শিলাফলকমের আবরণ উন্মোচণ করেন। এছাড়াও স্ক্র্যাপ গার্ডেনে অমৃতবাটিকা তৈরির জন্য অতিথিগণ আগর ও নাগেশ্বর ফুলের ৭৫টি চারা গাছ রোপণ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী রতনলাল নাথ, অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায়, পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা, ক্রীড়া মন্ত্রী টিংকু রায়, জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, তপশিলী জাতি কল্যাণ মন্ত্রী সুধাংশু দাস, বিশিষ্ট সমাজসেবী রাজীব ভট্টাচার্য, রাজ্য পুলিশ মহানির্দেশক অমিতাভ রঞ্জন প্রমুখ। সেই সঙ্গে ছিলেন পাপিয়া দত্ত, ত্রিপুরা চা উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সমীর ঘোষ, আগরতলা পুর নিগমের ১২নং ওয়ার্ডের কর্পোরেট শান্তনা সাহা, কর্পোরেট অদিতি ভট্টাচাৰ্য প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডা. মানিক সাহা উপস্থিত সকলকে পঞ্চপ্রাণ শপথ গ্রহণ করান। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, দেশের প্রত্যেকটি গ্রাম ও শহরের মাটি দিল্লির কর্তব্য পথের অমৃত বাটিকাতে স্থাপন করার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই দেশের প্রত্যেক প্রান্তের মানুষকে একে অপরের সাথে জুড়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যেকটি ভাবনাতেই রয়েছে দেশাত্মবোধের ভাবনা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যাঁদের আত্মবলিদানে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি তাঁদেরকে সবসময় স্মরণ করা উচিৎ। হর ঘর তিরঙ্গা, আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের মতো অনুষ্ঠানগুলিতে রাজ্যের সাধারণ মানুষও যেভাবে যুক্ত হয়েছেন তা অভাবনীয়। এর ফলেই এ সমস্ত অনুষ্ঠান সর্বোচ্চ সাফল্য লাভ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন আগামীদিনে সকল রাজ্যবাসী দেশাত্মবোধক ভাবনা ও চিন্তা নিয়ে দেশ ও রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
রাজ্যের ১,১৭৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজে, ৫৮টি ব্লক, ২০টি নগর এলাকা এবং ৮টি জেলায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। রাজ্যে বীর শহিদদের প্রতি সম্মান জানাতে ১,৩১৩টি শিলাফলকম, ১,৫২৫টি অমৃত বাটিকা তৈরি করা হয়েছে। আয়োজন করা হয়েছে ২,৫১৯টি বীরো কা বন্দন অনুষ্ঠানের। তিনি আরও বলেন, ২৮ অক্টোবর থেকে ১ নভেম্বর নয়াদিল্লিতে মেরি মাটি মেরা দেশ অভিযানে জাতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। এতে রাজ্যের ৫৮টি ব্লক থেকে ১ জন করে এবং পুর ও নগর এলাকা থেকে ১ জন স্বেচ্ছাসেবী মিলে মোট ৫৯ জন আগরতলা থেকে অমৃত কলস নিয়ে দিল্লি যাবে। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের সভাপতি আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার।
0 মন্তব্যসমূহ