আগরতলা, ১৮ অক্টোবর: স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে রাজ্যের বর্তমান সরকার। চিকিৎসার জন্য যাতে কারোর বাইরে যেতে না হয় সেই দিশায় কাজ করছে সরকার। নতুন করে আরো ১০০টি উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য এবারের বাজেটে আর্থিক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলা হাসপাতালগুলির পরিকাঠামোর উন্নয়নেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নেশামুক্ত ত্রিপুরা গঠনের লক্ষ্যে রাজ্যের ৮টি জেলায় নেশামুক্তি কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
বুধবার আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে সাফাই ও সুলভ কর্মীদের মধ্যে শারদীয়ার বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। বড়দোয়ালি কেন্দ্রের বিধায়ক তথা মুখ্যমন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে এদিন এই সামাজিক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
শারদীয়া দুর্গোৎসব সামনে রেখে সমাজের আর্থিকভাবে দূর্বল অংশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে গত কয়েক দিন ধরে নিজ বিধানসভা কেন্দ্র এলাকার সমাজের আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের মধ্যে শারদীয়ার নতুন বস্ত্র তুলে দিচ্ছেন তিনি। ইতিমধ্যে বড়দোয়ালি কেন্দ্রের ৭টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন বুথের মা বোনদের হাতে পুজোর বস্ত্র তুলে দেন তিনি। সেই সঙ্গে তাদের সঙ্গে জনসংযোগও সেরে নিচ্ছেন এলাকার বিধায়ক।
এরমধ্যে পুজোকে সামনে রেখে বুধবার সাফাই ও সুলভ কর্মীদের মধ্যে বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শহরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখতে সাফাই কর্মীদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পরিশ্রম করে যেতে হয় তাদের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটা কথা বলেন কাউকে অবহেলা করতে নেই। সবাই এই দেশের নাগরিক। সকলের অধিকার রয়েছে। সবাইকে একসূত্রে গেঁথে রাখার প্রচেষ্টা নিয়ে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই দিশায় রাজ্য সরকারও কাজ করছে। আমাদের চিন্তা চেতনা ভাবনার উন্নয়ন হচ্ছে। দুর্গাপুজো উপলক্ষে এই বস্ত্র দান, দানের মতো নয়। এটা একটা উপহারের মতো। এটা দিয়ে আপনাদের যে চাহিদা সেটা পূরণ করার মতো নয়। কিন্তু মানবিক স্পর্শ নিয়ে আপনাদের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়াটাই আসল।
মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, দুর্গাপুজোকে ঘিরে যে শুধু একটা শ্রেণী আনন্দ উল্লাস করবে সেটা নয়। পুজো উপলক্ষে যাতে সকলে আনন্দে কাটাতে পারে সেজন্য এই সামান্য ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়েছে। আমরা প্রত্যেকে সমাজেরই একটা অংশ। সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় উন্নত রাজ্য, দেশ গড়ে তোলা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রচেষ্টায় ঘরে ঘরে শৌচালয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ত্রিপুরাতে গ্রামীণ ও শহর এলাকায় প্রচুর মানুষের থাকার জন্য ছাদের ব্যবস্থা হয়েছে। নল সে জলের মাধ্যমে পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করেছেন। জলজীবন মিশনের মাধ্যমে প্রায় ৭৫ শতাংশ পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিনামূল্যে রান্নার গ্যাসের সংযোগ সহ বিভিন্ন সুবিধা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। স্বচ্ছ ভারত অভিযানের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নিজেও এই কার্যক্রমে অংশ নেন। মুখ্যমন্ত্রী আরো বলেন, শুধু নিজেদের ঘর পরিষ্কার রাখলে হবে না। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে সবকিছুই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা পুর নিগমের মেয়র দীপক মজুমদার, পুর কর্পোরেটের রত্না দত্ত, টিআইডিসির চেয়ারম্যান নবাদল বণিক, সোসাইটি ফর ম্যানেজমেন্ট অফ কালচারাল কমপ্লেক্সের চেয়ারম্যান নবেন্দু ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য অতিথিগণ।
0 মন্তব্যসমূহ