আগরতলা, ১৯ অক্টোবর : পঞ্চমীর দিন দক্ষিণ জেলার কৃষকদেরকে বিশ্বমানের উপহার তুলে দিলেন রাজ্যের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ। এদিন প্রায় চার কোটি টাকা খরচ করে ইজরায়েলের সর্বাধুনীক কৃষি প্রযুক্তিতে নির্মিত সবজি উৎকর্ষ কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন মন্ত্রী।
বর্তমান রাজ্য সরকারের মূল মন্ত্র সবকা সাথ সবকা বিকাশ, তা বার বার প্রমান করে আসছে। সেই সঙ্গে এই সরকার ভগবানে বিশ্বাসী তা স্পষ্টই বলে থাকেন দলের নেতৃত্বরা। সকলের বিশ্বাস রয়েছে দেবী দুর্গা কৈলাস থেকে কল্যাণ নিয়ে আসেন সকলের জন্য। এবছর অন্তত কৃষির সঙ্গে যুক্তরা একথা গর্বের সঙ্গেই বলতে পারবেন। কারণ, বুধবার রাজ্য সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তর এক সঙ্গে ৪০৬ জনকে সরকারি চাকরির অফার দেয়। তার ২৪ ঘন্টা যেতে না যেতেই দক্ষিণ জেলায় কৃষি উৎকর্ষতা কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতন লাল নাথ। সারা দেশের মধ্যে এমন ৬০টি উৎকর্ষতা কেন্দ্র রয়েছে। তার মধ্যে রাজ্যে রয়েছে দুটি। তবে এদিন যে উৎকর্ষ কেন্দ্রটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হল তাতে পৃথিবীর সর্বাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি রয়েছে।
ফলক উন্মোচন এবং ফিতা কেটে দক্ষিণ জেলার বীরচন্দ্র মনুর মনপাথর বাজারের পাশে অবস্থিত এই সবজি উৎকর্ষতা কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মন্ত্রী রতন লাল নাথ। এই সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন বিধায়ক এবং সমাজসেবী শংকর রায়, স্বশাসিত জেলা পরিষদের এমডিসি সঞ্জিত রিয়াং, দক্ষিণ জেলার জেলা শাসক সাজু ওয়াজেদ, রাজ্য সরকারের কৃষি এবং কৃষক কল্যাণ দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, অধিকর্তা ড. শরদিন্দু দাস প্রমূখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মন্ত্রী রতন লাল নাথ বলেন, ইজরায়েলের সর্বাধুনিক কৃষি প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই কেন্দ্রটি তৈরি করা হয়েছে। গুণগত এবং মানসম্মত সবজি চারা তৈরি করার জন্য এটি স্থাপন করা হয়েছে। গোটা দক্ষিণ জেলার মানুষ এর ফলে উপকৃত হবেন। রাজ্যে মাত্র ২৪ শতাংশ কৃষি জমি রয়েছে,এই পরিস্থিতিতে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষিতে আধুনিক পদ্ধতিকে কাজে লাগাতে হবে। তাই সরকার রাজ্যের কৃষিতে নতুন নতুন প্রযুক্তি সংযুক্ত করছে। এই কেন্দ্রে অত্যাধুনিক হাইটেক গ্রীন হাউজ, কীটপতঙ্গ মুক্ত নেট হাউসের মত অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। সেই সঙ্গে রয়েছে অতিথিশালা, কৃষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। মোট ৬ হেক্টর জায়গা জুড়ে এই কেন্দ্রটি গড়ে উঠেছে। অত্যাধুনিক উৎপাদন হাউজ গুলির ভিতর বছরের যে কোন সময় যেকোন ধরনের সবজি চারা উৎপাদন করা সম্ভব। যেমন তীব্র গরমেও শীতকালীন সবজির চারা উৎপাদন করা সম্ভব হবে, একই ভাবে ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন ভিন্ন সময়ের চারা উৎপাদন সম্ভব। এখানে উৎপাদিত চারা খুব কম খরচে কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। রাজ্যকে আত্মনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে সরকার আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করছে। অত্যাধুনিক এই কেন্দ্রটি গড়ে তুলতে প্রায় চার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এখানে বছরে ১৫ লাখ সবজি ছাড়া উৎপাদন করা সম্ভব হবে। বীজ থেকে প্রায় একশ শতাংশ ই চারা উৎপাদিত হবে এবং এগুলো হবে সম্পূর্ণভাবে রোগমুক্ত। একই ভাবে রাজ্যে ফুল লেবু সহ অন্যান্য সবজির জন্য আলাদা আলাদা উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী। উপস্থিত কৃষকদের মন্ত্রী বলেন তারা যেন আগ্রহের সঙ্গে কাজ করে। সরকার তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
0 মন্তব্যসমূহ